কোথা থেকে শুরু করবো তা বুঝতে পারছিনা।কর্মবীর সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসাবে যোগদান করেছিলেন ২০১৯ সালের ০৬ ই জুন।সেখান থেকে চলতি মাস অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি ২০২১ খ্রিষ্ট্রাব্দ প্রায় দুই বৎসরের কাছাকাছি সময়ে কর্মবীর কোনো দিন তাঁর নিজের সেল ফোনটি বন্ধ করে ঘুমাতে পারেন নি।কারন,সাতক্ষীরা সদর থানা ও কলারোয়া থানা এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ থানার দায়িত্ব ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাহ্উদ্দিনের উপরে।তিনি প্রায় দুই বৎসরের কাছাকাছি সময় সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসাবে সাতক্ষীরা ও কলারোয়া থানা এলাকার আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নিরালস ভাবে কাজ করেছেন।
সাইবার অপরাধ দমনে সদর সার্কেল:
তথ্যপ্রযুক্তি তে তিনি এতোটাই স্পার্ট ছিলেন যে যোগদানের পর থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে হারিয়ে যাওয়া প্রায় ৭০০-৮০০ টি হারানো মোবাইল উদ্ধার করে তিনি মোবাইলের প্রকৃত মালিকদের কাছে ফিরৎ দিয়েছেন। যেটা সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের ইতিহাসে এটি নজীর বিহিন দৃষ্টান্ত হিসাবে স্মরণীয় থাকবে।এছাড়া সাইবার ক্রাইম,ফেইজবুকে প্রতারনা ও বান্ধবীদের ভিডিও ধারন করে ব্লাকমেইল করেছে এমন শতাধিক অভিযোগ কঠোর ভাবে নিষ্পত্তি করেছেন সদর সার্কেল মির্জা সালাহ্উদ্দিন।
মাদক নির্মূলে সদর সার্কেল:
মাদক নির্মূল্যে সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাহ্উদ্দিন হাতে নিয়েছিলেন এক বিশেষ উদ্যোগ। তিনি আকর্ষ্মিক ভাবে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভোমরা এলাকা ও কলারোয়া এলাকার মাদক স্পর্টে অভিযান পরিচালনা করে সন্দেহ ভাজন মাদক সেবীদের আটক করে তাদের কে হসপিটালে এনে ডোপটেস্ট করে যারা ডোপটেস্টে পজিটিভ তাদের কে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করেছেন আর ডোপটেস্টে যাদের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে তাদের কে স্ব-সন্মানে মুক্তি দিয়েছেন এই সুপ্ত প্রতিভা সম্পন্ন এডিশনাল এসপি মির্জা সালাহ্উদ্দিন। ডোপটেস্টের ঘটনাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন সাতক্ষীরা জেলার সর্বস্থরের মানুষ। সদর সার্কেলের ডোপটেস্ট অভিযানের ফলে এখন মাদক স্পর্ট গুলোতে আগের মত ভিড় লেগে থাকেনা।মাদক দ্রব্য এখন আগের মত হাতের নাগালে নেই।মাদক কিনতে গেলে মাদকসেবীদের বর্তমানে খুব হিমশিম খেতে হচ্ছে।ডোপটেস্টে পজিটিপ রিপোট আসা মাদক সেবীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সদর সার্কেল মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করে জেল হাজতে পাঠাতেন।
ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনে সদর সার্কেল:
সম্প্রতি সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ও কলারোয়া উপজেলায় চাঞ্চল্যকর কিছু ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন করে আবারো আলোচনায় এসেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাহ্উদ্দিন।সম্প্রতি বাঁশদহের শিশু হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছেন সদর সার্কেল।শহরের বাঁকালের ইটভাটা থেকে ইজিবাইক চালকের লাশ উদ্ধার পুর্বক আসামীদের আটক করে তিনি সকল মহলে প্রশংসিত হয়েছেন।এছাড়া সম্প্রতি কলারোয়ায় ফোর মার্ডার ও প্রেমীক-প্রেমীকার আত্মহত্যার নাটক সাজানোর প্রকৃত ঘটনা উন্মোচন করে তিনি কলারোয়ার সকল মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন।
অপরাধ দমনে সদর সার্কেল: অপরাধ দমনে সব সময় বিশেষ অবদান রেখে চলেছেন সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাহ্উদ্দিন। সম্প্রতি শহরের আটপুকুর এলাকার একটি ব্যাটারীর দোকান থেকে বহু টাকার ব্যাটারী চুরি হয়ে যায়। বিষয়টি আমলে নিয়ে ছায়া তদন্তে নামে সদর সার্কেল। পরে প্রযুক্তিগত বুদ্ধিমর্তাকে কাজে লাগিয়ে জেলার বাহিরের জেলা থেকে চোর সহ ব্যাটারী উদ্ধার করতে সক্ষম হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বাধীন টিম। এছাড়া শহরের প্রত্যেকটি মহিলা কলেজ, গার্লস স্কুলের সামনে ছাত্রীদের ইভটিজিং এর হাত থেকে মুক্তি পেতে সদর সার্কেল স্কুলের মোড়ে মোড়ে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করেছিলেন।
খুলনা রেজ্ঞের শ্রেষ্ঠ সার্কেল হিসাবে রেজ্ঞ ডিআইজির পুরুস্কার গ্রহন: অপরাধ দমনে বিশেষ অবদান রাখায় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে খুলনা রেজ্ঞের শ্রেষ্ঠ সার্কেল হিসাবে খুলনা রেজ্ঞ পুলিশের ক্রাইম কনফারেন্স থেকে রেজ্ঞ ডিআইজি ড.খন্দকার মহিদ উদ্দিন বিপিএম-বার এঁর নিকট থেকে তিনি সন্মাননা ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট গ্রহন করেন।
জেলার শ্রেষ্ঠ সার্কেল হিসাবে পুলিশ সুপারের নিকট থেকে সন্মাননা ক্রেস্ট অর্জন : সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের ক্রাইম কনফারেন্সে অপরাধ দমনে বিশেষ অবদান রাখায় কয়েক বার তিনি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম-বার এঁর নিকট থেকে জেলার শ্রেষ্ঠ সার্কেল হিসাবে পুরুস্কার গ্রহন করেছেন।
মানবিক পুলিশ হিসাবে সদর সার্কেল মির্জা সালাহ্উদ্দিন : সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাহ্উদ্দিন ছিলেন এক জন মানবিক পুলিশ অফিসার।প্রতি বৎসর রোযার ঈদে ও কোরবানীর ঈদে তিনি ব্যকবতিগত উদ্যোগে সদর উপজেলার দুস্থ্য ও অসহায় দের নতুন পোশাক কিনে দিতেন এবং ঈদ সামগ্রী হিসাবে সেমাই-লাচ্ছি-গুড় দুধ ও চিনি কিনে দিতেন।
সম্প্রতি সাতক্ষীরা সদর হসপিটালে ভর্ত্তি দুই জমজ শিশুর মা টাকার অভাবে তার দুই জমজ নবজাতক কে আটা গুলা খাওয়াচ্ছিলেন দুধের পরিবর্ত্তে। সংবাদটি জানতে পেরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাহ্উদ্দিনের নেতৃত্বে সাতক্ষীরা থানার ওসি আসাদুজ্জামান ঐ জমজ শিশুদের জন্য নতৃন পোশাক,গুড় দুধ ও তার মায়ের জন্য ফলপাকড় কিনে নিয়ে হসপিটালে যান তাদের দেখতে। বিষয়টি সাতক্ষীরার লোকাল পত্রিকা সহ অনেক জাতীয় অনলাইনে প্রশংসা আকারে নিউজ হয়েছিলো।
করোনার প্রথম দিকে লক ডাউনে যখন কর্মহীন মানুষ ঘরে বন্ধি। তখন পুলিশ সুপারের নির্দেশনা মোতাবেক সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাহ্উদ্দিন করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দিনমজুর দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বস্তা ভত্তি চাল-ডাল-আলু-তেল ও লবন পৌছে দিয়ে এসেছেন।করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত এমন বাড়ির লোকজন লাশ ফেলে পালিয়েছে কিন্তু এমন খবর জানতে পেরে সদর সার্কেল মির্জা সালাহ্উদ্দিনের নেতৃত্বে সদর থানার ওসি সহ ফোর্সদের নিয়ে সেই করোনার উপসর্গে মৃত ব্যক্তির দাফন কার্যও সম্পন্ন করেছেন।
এছাড়া সম্প্রতি কলারোয়া উপজেলা নির্বাচন ও সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচনে তিনি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রোখেছিলেন বলেই কোনো রকম সংঘাত ও রক্তপাত ছাড়াই দুটি পৌর নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরাপেক্ষ হয়েছে।সব মিলিয়ে বলা যেতে পারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সির্জা সালাহ্উদ্দিন একজন মানবিক ও মিডিয়া বান্ধব বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের অফিসার।তার মত দক্ষ ও যোগত্যাপূর্ণ অফিসার সাতক্ষীরা সদর সার্কেলে আরো কিছু দিন থাকার খুব প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু সম্প্রতি বদলী জনিত কারনে তিনি র্্যাবে পোষ্টিং পেয়েছেন।খুব অল্প দিনের মধ্যে তিনি সরকারি বিধি মোতাবেক পুলিশ সুপারের নিকট থেকে বিদায়ী সংবর্ধনা গ্রহন করে জেলা ত্যাগ করবেন বলে জানা গেছে।
তাই কর্মবীর যেখানেই থাকবেন ভালো থাকবেন।আপডেট সাতক্ষীরা ডটকম পরিবারের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তথা কর্মবীর মির্জা সালাহ্উদ্দিন কে অনেক অনেক অভিনন্দন ও অফুরান শুভ কামনা।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ জিমি, সিটিজেন জার্নালিস্ট, সাতক্ষীরা।
Copyright © 2024 Update Satkhira. All rights reserved.