বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেছেন, বাংলাদেশ অমিত সম্ভাবনার দেশ। এ দেশের পর্যটন শিল্প বিকাশের অপার সুযোগ রয়েছে। আগামীতে আমাদের অর্থনীতির দুটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের মধ্যে পর্যটন এবং কৃষি খাতকে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজারে ট্যুরিস্ট পুলিশের ৮ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সমাপনী অনুষ্ঠানে আইজিপি এসব কথা বলেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশের ৮ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চারদিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার শেষ দিনে স্থানীয় একটি হোটেলে আয়োজিত ‘কোভিডোত্তর নিও নর্মাল বাস্তবতা : পর্যটন বিকাশে নিরাপত্তা অগ্রাধিকার’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কুষ্টিয়া ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবুল আরেফিন।
ট্যুরিস্ট পুলিশের ডিআইজি মোর্শেদুল আনোয়ার খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নুরুল হুদা, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাবেদ আহমেদ এবং কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. গোলাম কিবরিয়া ভূইয়া।
অনুষ্ঠানে আইজিপি বলেন, আমাদের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক পরিবেশ রয়েছে, প্রাকৃতিক বৈচিত্র এবং প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যখন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়, তখন পশ্চিমা বাঘা বাঘা অর্থনীতিবিদরা বলেছিলেন, এ দেশ টিকবে না। কারণ এদেশ আয়তনে ছোট, নেই খাদ্য, নেই কোন খনিজ সম্পদ, নেই রপ্তানি পণ্য। পশ্চিমা অর্থনীতিবিদদের ধারনা ভুল প্রমাণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ কোথায় দাঁড়িয়েছে !
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষের প্রচুর এনার্জি রয়েছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশনারি লিডারশিপ। এর ফলে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন এত সুন্দর একটি দেখার মত জায়গা। অথচ সেখানে যাওয়ার জন্য নিরুৎসাহিত করা হয়। আমরা মনে করি, পর্যটক নিরুৎসাহিত করা নয়, সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক পরিবেশ, প্রাকৃতিক সম্পদ যেন পর্যটকদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।
‘ট্যুরিস্ট পুলিশ গঠনের পর থেকে গত আট বছর ধরে পর্যটকদের আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা প্রদান এবং পর্যটন খাতের বিকাশ সাধনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। টুরিস্ট পুলিশ গঠনের পর থেকে পর্যটকরা নিরাপদে দেশের বিভিন্ন পর্যটন স্পট ভ্রমণ করতে পারছেন।’
পুলিশপ্রধান বলেন, আমাদের দেশের বলার মতো অনেক গল্প আছে, যা চমকে দেয়ার মতো। আমরা সবাই মিলে ‘পজিটিভ বাংলাদেশ’ এর ইতিহাস তুলে ধরতে হবে, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ভাবতেন বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, আত্মমর্যাদাশীল। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দেশ রেখে যেতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
পরে পুলিশ প্রধান ফোর্সের সাথে মধ্যাহ্নভোজে অংশগ্রহণ করেন।এসময় আইজিপি কনস্টেবলের প্লেটে ভাত বেড়ে দেন। আইজিপিকে কাছে পেয়ে অনেক পুলিশ সদস্য এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।মুহুর্ত্তেই কনস্টেবলের প্লেটে আইজিপির ভাত বেড়ে দেওয়ার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।
একজন বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি
আরেকজন পদমর্যাদায় পুলিশের কনিষ্ঠতম সদস্য কনস্টেবল
আইজিপি মহোদয় নিজেই খাবার তুলে দিচ্ছেন সেই সহকর্মী কনস্টেবলের পাতে "এ যেন বদলে যাওয়া বাংলাদেশ পুলিশের এক প্রতিচ্ছবি"
তিনি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন ক্রীড়া ইভেন্টে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা, ট্যুর অপারেটর এবং শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ট্যুরিস্ট পুলিশের ৮ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গত ৮ নভেম্বর থেকে কক্সবাজারে বর্ণিল অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।