শীতল অনুভূতির গমগমে এক সন্ধ্যা। বর্ণিল সাজে তখন পুলিশ স্টাফ কলেজ (পিএসসি) কনভেনশন হল। জাঁকজমকভাব চারিদিকে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দেশের উজ্জ্বল সব নক্ষত্রের উপস্থিতি। তাদের সম্মিলনে কনভেনশন সেন্টার যেন হয়ে উঠে আরও রঙিন। ক্যামেরা আর মুঠোফোনের অনবরত ক্লিকও চলছে। অবারিত আনন্দের ফল্গুধারায় ‘মধ্যমনি’ এক বর-কনে।
নতুন এ জুটিকে শুভ কামনা জানাতেই চলছে এমন আয়োজন। দেশবরেণ্যদের পদভারে রাতটি হয়ে উঠে বর্ণময়। শত নক্ষত্রের আবির্ভাবে সেখানে যেন মুহূর্তেই নেমে আসে আলোকের ঝর্ণাধারা। যেন কবির ছন্দবদ্ধ উচ্চারণ- ‘শেরওয়ানি আর টুপি পরে এল বর, হাতে হৃদয় নিয়ে, আর লজ্জার রঙ বেনারশিতে মিশে বিশ্বাসে মন বদলে হয়ে গেল বিয়ে…।’
বিয়ে মানে দু’টি জীবনের নতুন পথে চলার প্রতিশ্রুতি। এর মাঝেই শুরু হয় বিশ্বাস আর ভালোবাসার। আর বিশ্বাসের ওপরই দাঁড়ায় ভালোবাসা। গড়ে ওঠে নতুন জীবন। শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর মিরপুরের এই কনভেনশন হলটিতে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার) এঁর বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর’র।
বাংলাদেশ পুলিশের প্রধানের এই রক্তের উত্তরাধিকার ঘরণী হয়েছেন নাসির আলম ও মিসেস হালিমা আক্তার দম্পতির সন্তান সাইফ নজরুলের। বিয়ের অনুষ্ঠানে বর ও কনেপক্ষের লোকজন তো ছিলেনই! রাত সাড়ে ৭ টার পর থেকেই সেখানেই জড়ো হতে থাকেন বর-বধূর কাছের মানুষ ও একান্ত ঘনিষ্ঠজনেরাও।
নতুন জুটিকে আশীর্বাদ জানাতেই আসতে শুরু করেন দেশের বিভিন্ন অঙ্গনের উজ্জ্বল সব ব্যক্তিত্ব। তারা এসেছেন; অনেকেই সপরিবারে। হাস্যোজ্জ্বল মুখে সাদর অভ্যর্থনায় তাদের বরণ করেছেন পুলিশের আইজি ড.বেনজীর আহমেদ এবং তার জীবনসঙ্গী পুনাক সভাপতি জীশান মীর্জা। ফলে দেশের বিশিষ্টজনের উপস্থিতিতে এই কনভেনশন হল হয়ে উঠে ‘তারার হাট’।
যান্ত্রিকতার শেকলে বাঁধা ব্যস্ততার জীবনে সচরাচর একসঙ্গে তাদের দেখার সুযোগ নেহায়েতই কম। কিন্তু ফারহিন-সাইফের বিয়ের বরাতেই দেশের সব উজ্জ্বল নক্ষত্ররাই একত্রে সমবেত হয়েছিলেন। অনেকেই একই মঞ্চ ভাগাভাগি করে ভবিষ্যত সুন্দর জীবনের আশীর্বাদ জানিয়েছেন বর-কনেকে।
আবার ডিনারের আগে-পরে আলাপে-আড্ডায় মুখরও ছিলেন সবাই। ছিল লাইভ কনসার্টের পরিবেশনা। যেখানে এসআই টুটুলের পরিবেশনায় মাতোয়ারা হয়েছেন সবাই।
আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে স্টেজে হাসি-আনন্দে মেতেছিলেন বর-কনেও। ফারহিন-সাইফ দু’জনেই দোয়া চেয়েছেন সবার কাছে। বিশিষ্টজনেরাও তাদের দোয়ার পাশাপাশি অন্তরঢালা শুভেচ্ছা-আশীর্বাদে ভাসিয়েছেন নব দম্পতিকে।
ফারহিন-সাইফের বিয়েতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতিক থেকে শুরু করে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সামরিক কর্মকর্তা, উচ্চপদস্থ আমলা বা ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক কে আসেননি! বাইরে ছিলেন না আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানরাও।
এই তালিকায় রাষ্ট্রপতির সহধর্মিনী ও ফার্স্ট লেডি রাশিদা খানম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এমপি, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, শিক্ষামন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা: দীপু মনি এমপি, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ড.এস এফ শফিউদ্দিন আহমেদ, বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান, চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, র্যাব ডিজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস্) কর্নেল কে এম আজাদ, ডিএমপি কমিশনার মোহা.শফিকুল ইসলাম, সাংসদ মাশরাফি বিন মর্তুজা, ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, একাত্তর টিভির এডিটর ইন চিফ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নইম নিজামসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন।
নিজের কন্যার বিয়েতে উপস্থিত বিশিষ্টজনদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড.বেনজীর আহমেদ বিপিএম-বার ও তাঁর জীবনসঙ্গী বাংলাদেশ পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা।
নতুন বর-কনের সুখ ও সমৃদ্ধিময় ভবিষ্যত কামনায় দেশের বরেণ্য ব্যক্তিত্বদের হৃদয় নি:সৃত আবেগ-ভালোবাসায় অভিভূত তারাও। নতুন এ জুটির জন্য আপডেট সাতক্ষীরা পরিবারের পক্ষ থেকেও অফুরান শুভ কামনা।