নির্বাচনের সময় পুলিশ বাহিনী নির্বাচন কমিশনের আদেশ মেনে দায়িত্ব পালন করবে বলে জানিয়েছেন বাহিনীর মহাপরির্দশক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম-বার, পিপিএম।তিনি বলেন, যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুলিশ বাহিনী সবসময় প্রস্তত আছে। তারা (নির্বাচনক কমিশন) আমাদেরকে যেভাবে বলবে সেভাবে কাজ করে যাব।
সোমবার দুপুরে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
আইজিপি আরও বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে জঙ্গিবাদের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। এ নিয়ে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ করে যাচ্ছে। তারা (জঙ্গিরা) যেখানে সংঘটিত হওয়ার চেষ্টা করছে তার আগেই আমারা তাদের প্রতিহত করছি। পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সকলের সহযোগিতা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
এর আগে সুধি সমাবেশে পুলিশপ্রধান বলেন, রংপুরের মানুষ শান্তিপ্রিয়। তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি নীলফামারীর পুলিশ সুপার ছিলাম। এই এলাকার মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রয়ে গেছে। আইন শৃঙ্গখলা বজায়ে তারা আন্তরিক। রংপুরের আইনশৃঙ্খলা সবসময় ভালো থাকে। সবচেয়ে ভালো অফিসারদের রংপুরে দিয়ে থাকি। যারা রংপুরের মানুষের আবেগ বুঝতে পারে, আমরা তাদের এখানে দিয়ে থাকি।
আইজি বলেন, এই দেশে জঙ্গিবাদের হোলিখেলা শুরু হয়েছিল ৬৩ জেলায়। প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসবাদ জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। জঙ্গিরা সমবেত হওয়ার আগেই পুলিশ এগিয়ে থাকে। দেশে আইনশৃঙ্খলায় স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে।
‘আগে দেশে মাথাপিছু আয় ছিল ৫০০ ডলার এখন ৩০০০ ডলার। আমরা আর্থিভাবে অনেক এগিয়েছি। দেশে উন্নয়ন কার্যক্রমের জোয়ার শুরু হয়েছে।
টেকসই নিরাপত্তা থাকলে টেকসই শান্তি থাকবে আর টেকসই শান্তি থাকলে টেকসই উন্নয়ন হবে। আমাদের প্রত্যাশা রংপুরবাসীর কাছে একটু বেশি। তারা বিভিন্ন কাজে আমাদের সহায়তা করে। তাদের সহায়তা ছাড়া একক প্রচেষ্টায় আইন শৃ ঙ্খলা শতিশীল রাখা সম্ভব না।’
এই নগরীর প্রধান সমস্যা হলো মাদক, জুয়া ও যানজট উল্লেখ করে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, নিয়মিত কাজ করলে এসব সমস্যার উন্নতি হবে। মাদকের জন্য আভিযানিক কার্যক্রমের পাশাপাশি সন্তানরা কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে সেটা নজর রাখতে হবে। অভিভাবকদের সচেতনতা বাড়ানো ও প্রত্যেক নাগরিককে নিজের জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আগামী দিনে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে স্মার্ট পুলিশিং বিনির্মাণে সবার সহযোগিতা চান।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সুধি সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন- রংপুর বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আবদুল বাতেন, রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার কমান্ডেন্ট বাসুদেব বনিক, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হাসিবুর রশিদ।
বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান, রংপুর জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী, র্যাব-১৩ এর কমান্ডার আরাফাত ইসলাম, মহানগর আওয়ামী লীগের আহবায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেন, মহানগর কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু।
এর আগে সকালে আইজিপি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন। এর পর রংপুর নগরীর সুরভি উদ্যানের সামনে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এরপর সেখান থেকে একটি বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।