![]()
গতবছর ৫ আগষ্টের পর সাতক্ষীরা জেলার প্রত্যেকটি থানা ছিল আগুনে পুড়ানো এক ধ্বংসস্থুপ।পুলিশের বসার জায়গা ছিলোনা থানায়।থানায় ছিলোনা কোন চেয়ার টেবিল বা কম্পিউটার।থানার মালখানা থেকে অস্ত্র গুলি ও লুটপাট হয়ে গিছিল।তখন এমন এক পরিস্থিতি মানুষ মানুষ কে কুপিয়ে মারলেও সেখানে ঠেকাতে যেতোনা পুলিশ।কারো বাড়ি ডাকাতি হলেও সেখানে যেতোনা পুলিশ।কারন পুলিশরা নিজেই ছিল আতংকগ্রস্থ ও ট্রোমাটাইজ্ড।থানার পুলিশ সব পুলিশ লাইন ব্যারাকে আশ্রয় নিয়েছিল।
ঠিক এমন এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি র ভিতরে সাতক্ষীরা জেলার পুলিশ সুপার হিসাবে ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ তারিখ যোগদান করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। তিনি এসে কোনটা রেখে কোন কাজ টা করবেন এমন একটা অবস্থার ভিতরে পড়ে গেলেন।প্রতিনিয়ত তিনি সাতক্ষীরার দায়িত্ব প্রাপ্ত সেনাবাহিনীর লে.কর্ণেল ও জেলা প্রশাসকের সহিত আলোচনা করতেন কিভাবে এমন পরিস্থিতি থেকে সাতক্ষীরার মানুষ কে মুক্ত করা যায়।
আস্তে আস্তে তিনি সাহসের সহিত ফোর্স দের সক্রিয় করলেন। ওসি দের পুলিশ লাইন থেকে থানায় পাঠালেন।সাতক্ষীরার মানুষদের নিয়ে দফায় দফায় মতবিনিময় করলেন।জামাত-বিএনপি ও সমন্বয়ক দের সাথে নিয়মিত বৈঠক করতেন যাতে দ্রুত সাতক্ষীরার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা যায়।যেহেতু পুলিশ সুপার নতুন মানুষ জেলা সম্পর্কে অবগত নন। একারনে সাতক্ষীরার তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার মো:সজীব খান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার আমিনুর রহমান সর্বাত্মক ভাবে নবাগত পুলিশ সুপার কে সহযোগীতা করতেন।
এরপর পুলিশ সুপার পুলিশ হেড কোয়াটারে চাহিদাপত্র দিয়ে জেলার ট্রাফিক অফিস সহ ৮ টি থানা মেরামত করে থানা গুলোর প্রাণ ফিরিয়ে এনেছেন।থানা গুলো এখন চকচকে ঝকঝকে। ঠিক আগের মত যৌবন ফিরে পেয়েছে।যেনো পুড়ানো থানার ধ্বংসস্থুপে ফুল ফুটেছে।
থানায় এখন আগের মত জিডি করা যায়,আগের মত মামলা করা যায়।অপরাধ করলে পুলিশ সাথে সাথে অপরাধী আটক করতে পারে।হারানো মোবাইল ও বিকাশে খোয়া টাকাও উদ্ধার করে দেচ্ছে সাতক্ষীরা সাইবার ইনভেস্টিগেশন সেল। সব মিলিয়ে সাতক্ষীরার পুলিশ এখন ৯০% এক্টিভ। আর এটি সম্ভব হয়েছে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের মেধা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে।
পুলিশ সুপার যোগদান করার ৬ মাসের ভিতরে সাতক্ষীরা তে কনস্টেবল নিয়োগ হলো।সেটি ও স্বচ্ছতা র সহিত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিলেন বর্তমান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।
এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া মাডার, ধর্ষণ, চুরি,মাদক সহ চাঞ্চল্যকর প্রত্যেকটি ঘটনার ক্লু উৎঘাটন করে আসামীদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছেন বর্তমান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।এছাড়া সড়কে শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে ট্রাফিক পুলিশ নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে।ডিবি পুলিশ ও জেলার ৮ টি থানার পুলিশ নিয়মিত মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছে।টহল পুলিশ আগের মতই ভোর ৬ টা পর্যন্ত সড়কে ডিউটি পালন করে যাচ্ছে। যার কারনে সাতক্ষীরার ২২ লক্ষ মানুষ নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারছেন।
এত অল্প সময়ের ভিতরে (মাত্র ১ বছরের ভিতরে) পুলিশ সুপার যে বীরত্ব ও সাহসীকতার সহিত সাতক্ষীরা জেলার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন,সেটি সত্যিই প্রশংসার দাবীদার।ধন্যবাদ পুলিশ সুপার।আপনার ১টি বছরের সাফল্য অনেক।
- সম্পাদক ও প্রকাশক,আপডেট সাতক্ষীরা ডটকম।