আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা চার্জশিটে নাম আসা সেনাবাহিনীর ১৫ জন কর্মরত কর্মকর্তা ও একজন এলপিআরে (অবসর-উত্তর ছুটি) থাকা কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে এদের মধ্যে একজন কর্মকর্তা মেজর জেনারেল কবির আহমেদ নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
শনিবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা সেনানিবাসের একটি সেনা মেসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান।
তিনি জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গত ৮ অক্টোবর প্রথম দুইটি চার্জশিট ও পরে আরও একটি চার্জশিট জমা পড়ে। চার্জশিটগুলোর মধ্যে একটি ডিজিএফআই-এ কর্মরত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুম সংক্রান্ত অভিযোগ, একটি র্যাবের টিএফআই নিয়ে এবং অপরটি ৪-৫ আগস্টের রামপুরা ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
চার্জশিটে মোট ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার নাম থাকলেও এদের মধ্যে ১৫ জন কর্মরত, ১ জন এলপিআরে এবং ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত। অবসরপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে সেনা আইনের কার্যকারিতা না থাকলেও কর্মরতদের ব্যাপারে সেনাবাহিনী দায়িত্বশীল অবস্থান নিয়েছে বলে জানান তিনি।
মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান বলেন, ‘আমরা এখনো কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাইনি, পুলিশও আমাদের কিছু জানায়নি। তবে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমরা ৮ তারিখেই একটি অফিসিয়াল আদেশ দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ৯ তারিখে সেনা হেফাজতে আসতে বলি। সকলেই সাড়া দিলেও একজন কর্মকর্তা, মেজর জেনারেল কবির আহমেদ সাড়া দেননি।’
সেনা হেফাজতে না আসা একমাত্র কর্মকর্তা মেজর জেনারেল কবির আহমেদ গত ৯ অক্টোবর সকালে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। তার পরিবারকে উদ্ধৃত করে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তিনি একজন আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন, তবে এরপর থেকেই তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান বলেন, ‘আমরা তাকে ইলিগ্যাল এবসেন্ট ঘোষণা করেছি এবং আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। তাকে খুঁজে পেতে আমরা এনএসআই, ডিজিএফআই, বিজিবি-সহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে জানিয়ে দিয়েছি যাতে তিনি দেশের বাইরে যেতে না পারেন।’
তিনি আরও জানান, দেশের সব স্থল, বিমান ও সমুদ্র বন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এমনকি তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনাতেও অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ এই কর্মকর্তা জানান, সংবিধান ও দেশের প্রচলিত আইন অনুসরণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে যেকোনো অভিযোগকে গুরুত্ব সহকারে দেখা হয় এবং প্রথাগতভাবে হেফাজতে নেওয়ার মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।