সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের বেসরকারি প্যাথলজি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষার জন্য রেফার করার নামে গড়ে ওঠা অবৈধ কমিশন সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনিয়মের প্রমাণ মেলায় দালালচক্রের সাতজন সদস্যকে আটক করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. জাহিদ ফজলের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন—আল মামুন বাদশা (২৫), রেজাউল ইসলাম গাজী (৪২), সাগর হোসেন রনি (২০), মিলন কুমার ঘোষ (১৮), অচিন্ত কুমার বৈদ্য (৪৪), প্রসেনজিৎ কুমার মণ্ডল (৩১) ও মর্জিনা (৬০)।
এর মধ্যে আল মামুন বাদশা, রেজাউল ইসলাম গাজী, সাগর হোসেন রনি ও মিলন কুমার ঘোষকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বাকি তিনজনকে জরিমানা করা হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন শ্যামনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদ হোসাইন।
দুদক সূত্র জানায়, হাসপাতালে রোগীদের নির্দিষ্ট কিছু বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করাতে বাধ্য করা হচ্ছিল। এ জন্য সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্মীরা কমিশন পেতেন। অভিযানকালে দুদকের দল হাসপাতালের আউটডোর ও জরুরি বিভাগসহ বেশ কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে প্রেসক্রিপশন, রেফার তালিকা ও রসিদ যাচাই করে। তাতে দেখা যায়, হাসপাতালের নিজস্ব ল্যাবরেটরি থাকা সত্ত্বেও রোগীদের বাইরে পরীক্ষা করানো হচ্ছিল।
দুদকের কর্মকর্তারা জানান, কমিশন লেনদেনের প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে এবং কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের কাছ থেকেও কমিশনের রেকর্ড উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানে বেশ কিছু নথি জব্দ করা হয় এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
সহকারী পরিচালক মো. জাহিদ ফজল বলেন, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে চারজনকে কারাদণ্ড এবং তিনজনকে জরিমানা করা হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা সেখানকার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নেওয়া হবে।
অপরদিকে, স্থানীয় সচেতন নাগরিক জান্নাতুল নাঈম, আব্দুল আহাদ ও উৎপল মণ্ডল জানান, দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতাল থেকে রোগীদের বাইরে পাঠানোর এ অনৈতিক প্রক্রিয়া চলছিল। দুদকের অভিযান শুরু হওয়ায় তারা স্বস্তি প্রকাশ করেন এবং নিয়মিত নজরদারির দাবি জানান।