অনগ্রসর জনগোষ্ঠিকে এগিয়ে নিতে হলে রাষ্ট্রের সামগ্রিক উন্নয়নে সকলকে সম্পৃক্ত করতে হবে। একই সাথে যেসব জনগোষ্ঠি পিছিয়ে আছে তাদেরকে নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। বাংলাদেশে প্রায় এক কোটি দলিত জনগোষ্ঠি বসবাস করছে। তাদেরকে সমাজের মূল ¯্রােতে নিতে হলে সবার আগে তাদেরকে সচেতন হতে হবে। এজন্য প্রয়োজন শিক্ষায় উন্নয়ন, দলিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠিকে সমাজের স্বাভাবিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করতে হবে। সরকারি সুযোগ-সুবিধা তাদেরকে যথাযথ দিতে হবে। জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ, সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগ থেকে তাদের জন্য যেসব বরাদ্দ আছে তা যথাযথভাবে দলিত ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠির হাতে পৌছাতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি সকল প্রকার সহযোগিতা ও সুযোগে তাদেরকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
২৮ অক্টোবর, ২০১৯ সোমবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের শহিদ স ম আলাউদ্দিন মিলনায়তনে ইউএনডিপির আর্থিক সহযোগিতায় শারি ও স্বদেশ আয়োজিত ‘অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর সামগ্রিক উন্নয়নে সম্পৃক্তকরণে রাষ্ট্রের ভূমিকা’ বিষয়ক নাগরিক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সংলাপে শারির সমন্বয়কারি রঞ্জন বকসী নুপুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, শিক্ষাবিদ আবদুল হামিদ, নাগরিক ব্যক্তিত্ব ড. দিলারা বেগম, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক আবদুল কাদের।
স্বদেশ’র নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্তের সঞ্চালনায় মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক, কল্যাণ ব্যানার্জি, জেলা মহিলা বিষয়ক উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের প্রোগ্রাম অফিসার ফাতেমা জোহরা, উন্নয়নকর্মী আবু জাফর সিদ্দিকী, জনকন্ঠের মিজানুর রহমান, দলিত নেতা গৌরপদ দাস, মালতি মুন্ডা, পারুল মুন্ডা প্রমুখ। নাগরিক সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক ও উন্নয়নকর্মী ফারুক রহমান।
বক্তারা বলেন, দেশে প্রায় এক কোটি দলিত জনগোষ্ঠি বসবাস করছে। যার মধ্যে প্রায় ১৬ লাখ হরিজন, ৫৫ লাখ ঋষি এবং ৩৫ লাখ চা বাগানের শ্রমিক। এই জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নে এবং দেশের উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্তকরণের কার্যক্রম বিগত দিনগুলোতে করা হয় নাই। এই জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, তাদেরকে মূলধারার সাথে সম্পৃক্তকরণ এবং রাষ্ট্রকে এই জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহবানে বিভিন্ন সংস্থা কাজ করে আসছে। এ সকল কাজের মধ্যে রয়েছে; এই দলিত জনগোষ্ঠীকে তাদের প্রাচীন ‘সামাজিক প্রশাসনিক কাঠামো’ পঞ্চায়েতকে শক্তিশালীকরণ, নারী-পুরুষ সমতা আনয়ন, শিশুদের স্কুলমুখী করা, ঝরে পড়া রোধে শিক্ষা সহায়তা ব্যবস্থা চালু, যুবকদের মাধ্যমে মানবাধিকার সুরক্ষা, নাগরিক অধিকার প্রাপ্তিতে প্রশিক্ষিত করা, সরকারী সেবা বলয়ের সাথে সম্পৃক্ততা অর্জণ এবং সরকারি সেবা বলয় থেকে প্রাপ্য আদায়সহ নানাবিধ কাজ করে আসছে।
সংলাপ সভায় নিন্মোক্ত দাবিমালা উত্থাপন করা হয়: গঠিত হয়েছে মানবাধিকার কমিশন, আইন কমিশন, পরিকল্পনা কমিশন সহ অনেক কমিশন। কিন্তু আজ পর্যন্ত গঠন করা হয়নি দলিত কমিশন। তাই অতি সত্ত্বর দলিত কমিশন গঠণের অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি শিশু কমিশন, ন্যায়পাল, সংখ্যালঘু কমিশনও গঠণের প্রস্তাবনা রাখা হচ্ছে।
১. দলিত জনগোষ্ঠীর জন্য জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদে আলাদা বাজেট রাখার সুপারিশ করছি। ইউনিয়ন পরিষদসহ সকল পরিষদের বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটিতে দলিত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করণের দাবি করা হচ্ছে। উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিতে দলিত জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভূক্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. বাংলাদেশের ১ কোটি দলিত জনগোষ্ঠীর জন্য আলাদা প্রকল্প গ্রহণ করে তা শুধুমাত্র দলিত জনগোষ্ঠীকে দিয়েই বাস্তবায়ন করার জোর সুপারিশ করা হচ্ছে। জেলা পরিষদের বাজেটে দলিত জনগোষ্ঠীর জন্য শিক্ষা, চিকিৎসা, কমিউনিটি সেন্টার গঠণ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন কার্যক্রমে ২০ ভাগ বরাদ্দ রাখার জোর সুপারিশ জানাচ্ছি। সকল সেনা ক্যাম্পে এবং বিজিবি ক্যাম্পে ঋষি সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী দ্বারা পুরনো জুতা মেরামতের কাজ করানোর জন্য জোর সুপারিশ করছি। প্রেস বিজ্ঞপ্তি

Patrodut net





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন