আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী ও দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। শনিবার রাতে মিন্টো রোডের মন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে এ শুভেচ্ছা জানানো হয়।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, তথ্য সচিব আবদুল মালেক, বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যম প্রতিনিধিবৃন্দ, মন্ত্রীর সংসদীয় আসনের বিভিন্ন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, স্থানীয় জনগণ, তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মচারিবৃন্দ ড. হাছান মাহমুদকে উষ্ণ অভিনন্দন জানান।

এছাড়াও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা শাহাজাহান শিকদার, ইফতেখার হোসেন বাবুল, জসীম উদ্দিন, বেদারুল আমল চৌধুরী বেদারসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা নবনির্বাচিত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

শনিবার দলটির ২১তম সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন আওয়ামী লীগের নতুন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মাহবুবুল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের হলরুমে অনুষ্ঠিত কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন দলের নবনির্বাচিত সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাথে ছিলেন আওয়ামী লীগের পুনঃনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

টানা তৃতীয়বারের মতো চট্টগ্রাম ৭ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ড. হাছান এর আগে দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর বয়ঃকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

ড. হাছান মাহমুদ স্কুল জীবনেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। দীর্ঘ আন্দোলন- সংগ্রামের রাজনৈতিক জীবনে তিনি বারবার মৌলবাদী অপশক্তি ও স্বাধীনতা বিরোধীদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, এমনকি কয়েকবার তার প্রাণনাশেরও চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু কোন রক্তচক্ষু হাছান মাহমুদকে তার সংগ্রামের পথ থেকে পিছু হটাতে পারেনি।

ড. হাছান মাহমুদের মধ্যে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং মেধার অপূর্ব সমন্বয় রয়েছে। তাঁর সফল নেতৃত্বের মাধ্যমে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে এবং বিদেশেও তিনি রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন।

চট্টগ্রামের সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত সময়ে তিনি বয় স্কাউটের দলনেতা ছিলেন। জুনিয়র রেডক্রস টিমেরও সদস্য ছিলেন। আন্তঃবিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগতায়ও তিনি স্কুলের বিতর্ক দলের দলনেতা হিসেবে ভূমিকা রেখেছিলেন।
১৯৮৭ সালে তিনি জাতীয় টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক দলের দলনেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ১৯৭৭ সালে প্রথমে চট্টগ্রাম শহরের জামালখান ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত হন। তিনি ১৯৭৮ সালে সরকারি ইন্টারমিডিয়েট কলেজে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ১৯৭৯ সালে সরকারি হাজী মহসিন কলেজে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
তিনি চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠক সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ১৯৮৬ সালে ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি সামরিক শাসক এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় গ্রেফতার হন। পরে তিনি ১৯৮৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তাঁর সুদক্ষ নেতৃত্বের মাধ্যমে, নব্বই’র দশকের শুরুতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নির্বাচনে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য বিপুল বিজয় লাভ করে।

সেই নির্বাচনের সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে বেরিয়ে যাওয়ার কারণে নিবার্চনে প্রার্থী হতে না পারলেও তিনিই ছিলেন সেই নিবার্চনে সব প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ও ছাত্রদলের সমন্বয়ে গঠিত সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান।

১৯৯২ সালের শুরুর দিকে, আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার কার্যকরী সংসদের সবচেয়ে নবীনতম সদস্য মনোনীত হন। ১৯৯২ সালে তিনি উচ্চতর শিক্ষার জন্য বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে যান। সেখানে তিনি ১৯৯৩ সালে ব্রাসেলস’র বাংলাদেশ ছাত্র সংসদের সভাপতি নির্বাচিত হন।

ইউরোপের একটি শীর্ষ র‌্যাংকিং ইউনিভার্সিটিতে ব্রাসেলসের ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ১৯৯৪ সালে তিনি ‘ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন অব দ্য ইউনিভার্সিটি’র সভাপতি নির্বাচিত হন, যা ৬০টি দেশের ১ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীর প্রতিনিধিত্ব করে।

বেলজিয়ামে ড. মাহমুদ ১৯৯৩ সালে বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে এবং ১৯৯৫ সাল থেকে মার্চ ২ হাজার পর্যন্ত বেলজিয়াম আওয়াামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ড. হাছান মাহমুদ ২০০১ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতির বিশেষ সহকারী হিসেবে নিযুক্ত হন।
তিনি ২০০২ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের পরিবেশ ও বন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত হন। তখন থেকেই তিনি আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য।

২০০৭ সালে যখন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে সামরিক সমর্থিত সরকার কর্তৃক গ্রেফতার করা হয়, তখন ড. হাছান মাহমুদ, দলীয় সভাপতির মুখপাত্র হিসেবে অকুতোভয়ে কাজ করেন, যা দলের সকল কর্মী ও সমর্থকদের দ্বারা অত্যন্ত প্রশংসিত হয়।

২০০৮ সালে তিনি বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ।
২০০৯-২০১৩ সময়কালে তিনি পরিবেশ ও বন মন্ত্রী হিসেবে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এর আগে ড. হাছান মাহমুদ একই সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ড. হাছান মাহমুদ ২০০২ সালে আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটিতে বয়ঃকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মনোনীত হন। গতকাল শুক্রবার বর্ণিল আয়োজনে শেষ হয় আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। বিকেলে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন