আগামী রোববার অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) খান মো নুরুল হুদা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে বঙ্গভবনে সাক্ষাত পরবর্তী বাইরে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের কাছে একথা জানান সিইসি। তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আমরা যে প্রস্তুতি নিয়েছে তা মহামান্যকে অবহিত করা হলে তিনি এ বিষয়ে সন্তুষ্ঠ বলে জানান। এর আগে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ে সময় চেয়ে অক্টোবরে বঙ্গভবনকে পত্র দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাষ্ট্রপতির সম্মতি নিয়ে ফিরতি পত্রে কমিশনকে গতকাল পহেলা নভেম্বর বিকালে সময় দেয়; তার সাক্ষাত শেষ হয় আনুষ্ঠানিক মতবিনিময়ের মাধ্যমে। সাক্ষাত অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়া অপর চার কমিশনার (মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরী) ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন। খান মো. নুরুল হুদা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলের বিষয়ে আগামী ৪ নভেম্বন রোববার কমিশনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তারপর যেদিন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেয়া হবে, সেদিন তফসিল ঘোষণা করা হবে। তবে, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত আলোচনায় নির্বাচনের তফসিল বা তারিখ নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, এটা কোন জরুরী সাক্ষাত নয়। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ একটি আনুষ্ঠানিকতা। নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে তাকে অবহিত করা হয়েছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেজন্য ভোটার তালিকা, ভোটকেন্দ্রসহ আমাদের প্রস্তুতি রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করলাম। এটা নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া বা দেওয়ার কিছু নাই। তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। হঠাৎ সংলাপ আয়োজন সংক্রান্ত বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সাংবিধানিক সংস্থার প্রধান বলেন, তফসিল ঘোষনার আগের এ সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের মধ্যকার সংলাপের বিষয়ে আমরা (নির্বাচন কমিশন) শ্রদ্ধাশীল। চলমান সংলাপের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন পরিকল্পায় কোনো প্রভাব পড়বে কিনা জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘না, কোনো প্রভাব পড়বে না। আর নির্বাচন জানুয়ারিতে হবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা এখন বলা সম্ভব হচ্ছে না। ৪ নভেম্বর কমিশন সভার পর জানা যাবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমাদের আস্থা ও বিশ্বাস আছে, নির্বাচনে সব দল অংশ নেবে। আপনাদের উপরে সব দলের আস্থা রয়েছে কি না সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা আমরা জানি না। এর আগে বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে তাদের নিয়ে সিইসি বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন। সেখানে তারা দীর্ঘ সময় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করেন। সংবিধান অনুযায়ী আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গত ৩০ অক্টোবর থেকে নির্বাচনকালিন সময়ের ক্ষণ-গণনা শুরু হয়েছে। তবে ডিসেম্বরের মধ্যেই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর নির্বাচন কমিশন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হলে নতুন সরকার গঠন হবে; যার সংলাপ ও প্রস্তুতি চলছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে।