পুলিশের ভাবমুর্তি ফিরিয়ে আনতে সাতক্ষীরা থানা পুলিশ বিভিন্ন রকমের আইনি সেবা চালু করেছে।তারমধ্যে অন্যতম আইনি সেবা হলো থানায় জিডি করতে গেলে টাকা লাগেনা।
শহরের পাকাপোল মোড় পার হয়ে ডানদিকে ঘুরেই সাতক্ষীরা থানার গেট।গেট থেকে সোজা থানা ভবনের প্রধান ফটোকের কাছে গেলে দেখা যাবে দেওয়ালে একটি সাইনবোর্ড টানানো।তাতে লেখা আছে থানায় জিডি/মামলা করতে কোন টাকা লাগেনা।।একটু সামনে গেলেই ডিউটি অফিসারের কক্ষ। সেখানে গেলে দেখা যাবে ডিউটি অফিসারের মাথার উপরে দেওয়ালে টানানো আছে আমি ও আমার প্রতিষ্ঠান দূর্ণীতি মুক্ত এখন জিডি করতে কোন টাকা লাগেনা।বিষয়টি হাস্যকর হলেও বাস্তবে তা সম্ভব করেছেন সাতক্ষীরা জেলার পুলিশ সুপার জনাব সাজ্জাদুর রহমান বিপিএম এঁর নির্দেশনায় সাতক্ষীরা থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মো: মোস্তাফিজুর রহমান।
এ বিষয়ে ভুক্ত ভোগী ভ্যান চালক রুহুল আমীন প্রতিবেদক কে জানান,তার জাতীয় পরিচয় পত্র হারিয়ে যায় কয়েক দিন আগে।অনেক খোজাখুজি করেও তিনি সেটি পাননি।পরে উপজেলা নির্বাচন অফিসে আইডি কার্ড পুনরায় পাওয়ার জন্য আবেদন করেন।এসময় উপজেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী সোহেল রানা ভ্যান চালক রুহুল আমিন কে কার্ডের নাম্বার দিয়ে সদর থানা থেকে একটি জিডি করে আনতে বলেন।
ভ্যান চালক রুহুল আমীন থানায় যেতে হবে শুনে বিষ্মিত হলেন, কারন তার ধারনা ছিলো থানায় জিডি করতে গেলে ২০০-৩০০ টাকা লাগতে পারে।পরে কষ্টকরে ভ্যান চালক আব্দুর রশিদ ৩০০ টাকা জোগাড় করে সাতক্ষীরা থানায় যান (জিডি)সাধারন ডায়েরী করার উদ্যেশ্যে।
থানায় গিয়ে দেখতে পেলেন থানার ডিউটি অফিসারের দায়িত্বে আছেন এএসআই সাইফুল ইসলাাম(২)।এসময় ভ্যান চালক তার সমস্যার বিষয় টি কর্তব্যরত ডিউটি অফিসার কে জানালে ডিউটি অফিসার এএসআই সাইফুল(২) তাকে কম্পিউটারের দোকান থেকে জিডি লিখে আনতে বলেন।ডিউটি অফিসারের কথা মোতাবেক ভ্যানচালক রুহুল আমিন কম্পিউটারের দোকান থেকে ৫০ টাকা খরচ করে একটি জিডি লিখে এনে পুনরায় থানায় ফিরে আসেন ডিউটি অফিসারের টেবিলের সামনে।
এসময় ডিউটি অফিসার জিডির কাগজটি পড়ে খাতায় স্মারক ও তারিখ বসিয়ে স্বাক্ষর করে থানার সরকারী সিল মেরে দেন সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলাম। এমসয় ভ্যান চালক রুহুল আমিন খুশি হয়ে পকেট থেকে ২০০ টাকা নিয়ে সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর সাইফুল(২) কে চা খাওয়ার জন্য দিতে উদ্যোত্ত হন।টাকা দেওয়ার অফার ও বিষয়টি দেখা মাত্রই সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর সাইফুল ভ্যান চালক কে বলেন, টাকা আগে পকেটে রাখেন। জেলার এসপি স্যার ও ওসি মোস্তাফিজ স্যারের কড়া নির্দেশ জিডি বা মামলা করতে কোন নেওয়া যাবেনা।টাকা নিলে আমার চাকুরী শেষ,ঐ দেখেন সিসি টিভি ক্যামেরা।ক্যামেরায় স্যাররা সব দেখতে পান। তিনি আরো বলেন ঐ যে আমার মাথার উপরের দেওয়ালে তাকিয়ে দেখেন দেওয়ালের সাইনবোর্ড। তাতে লেখা আছে “আমি ও আমার প্রতিষ্ঠান দূর্ণীতি মুক্ত তাই এখানে জিডি করতে কোন খরচ লাগেনা।
ভ্যান চালক এসময় আবেগ আপ্লুত হয়ে সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর সাইফুল(২) কে বলেন স্যার,,, সেবাই যে পুলিশের ধর্ম সেটা আজ সাতক্ষীরা থানা পুলিশের কাছ থেকে প্রমান পেলাম।আল্লাহ পাঁক আপনাদের মঙ্গল করুন।