♠♠♠♠♠
বাগেরহাটে খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ হবে পিপিপি বা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে। ২০১৫ সালের সরকারি অর্থায়নে এ প্রকল্প নেয়া হলেও অগ্রগতি হয়নি। তখন ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫৪৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এ অবস্থায় স্থবির প্রকল্পটি পিপিপিতে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে প্রকল্পের সংশোধন করে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৭ কোটি টাকা। এর মানে চার বছরের ব্যবধানে ব্যয় উল্টো কমেছে।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির ১ম সংশোধনী অনুমোদন করা হয়। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

সভায় ২ হাজার ৯২০ কোটি টাকার ৬ প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে বলে তিনি জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারি অর্থায়নের পরিবর্তে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারীত্বের (পিপিপি) আওতায় নির্মাণ হবে বিমানবন্দরটি। মূল প্রকল্পের নাম সংশোধন করে রাখা হয়েছে ‘পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি)’ আওতায় বাস্তবায়িতব্য খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের জন্য লিঙ্ক প্রকল্প (প্রথম সংশোধিত)। এতে মূল ব্যয় থেকে ৩২৭ কোটি টাকা কমিয়ে ২১৭ কোটি টাকা ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৫ কোটি টাকা দেবে সরকার, বাকি ২১ কোটি টাকা দেবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর থেকে বাড়িয়ে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রকল্পের মূল প্রস্তাবে ১৬৩ হেক্টর জমি অধিগ্রহণে ব্যয় ধরা ছিল ৪৩ কোটি টাকা। কিন্তু নতুন প্রস্তাবে ৫৪ হেক্টর বাড়তি জমি যোগ হলেও মোট ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ১৬৯ কোটি টাকা। গত জুন পর্যন্ত প্রকল্পের আর্থিক ব্যয় হয়েছে ৪৩ কোটি টাকা।
এদিকে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যলয়ের উন্নয়নে বড় প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। প্রকল্পে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হচ্ছে ৬৫৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এই অর্থ দিয়ে আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মান সম্মত শিক্ষায় এগিয়ে যাবে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বর্তমানের তুলনায় বেশি শিক্ষার্থী এতে ভর্তির সুযোগ পাবে। ২০২২ সাল নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে সামগ্রিক উন্নয়নে এই টাকা ব্যয় করার সময় পাবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ।
মান্নান জানান, প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়েটিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে। এরই অংশ হিসেবে দু’টি প্রশাসনিক ভবন (একটি ১০তলা অন্যটি ৩তলা) নির্মাণ, ১০তলা বিশিষ্ট ৬ একাডেমিক ভবন নির্মাণ, আটটি ২তলা বিশিষ্ট মাঠ গবেষণাগার নির্মাণ, ১০তলা বিশিষ্ট তিন হোস্টেল নির্মাণ (১টি ছাত্রী, ২টি ছাত্র), শিক্ষক কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ (৫টি ১০তলা, ১টি ৬তলা), প্রো ভাইস চ্যান্সেলরের জন্য ডুপ্লেক্স আবাসিক ভবন নির্মাণ, ৬তলা বিশিষ্ট টিএসসি কমপ্লেক্স ভবন, ৮তলা বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস ভবন, নারীদের জন্য একটি সুইমং পুল নির্মাণ করা হবে।
এর বাইরে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান হলগুলোর সংস্কার, ৩তলা বিশিষ্ট পার্কিং ভবন, মেইন গেট, মসজিদ ও মন্দিরের গেট নির্মাণ করা হবে।
একই সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলের নিউ টাউন এলাকায় চার নম্বর সেক্টরের ৩১২ নম্বর রোডে ২০ একর জায়গা জুড়ে ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার’ নামের প্রকল্পটির সংশোধনী অনুমোদন করা হয়েছে।
বাণিজ্য মেলার জন্য একটি স্থায়ী কেন্দ্র নির্মাণের চিন্তা করা হয়েছিল ২০০৯ সালে। ২৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পও নেয়া হয়। কিন্তু তেজগাঁওয়ে জমি স্বল্পতায় সেটি হয়নি। এরপর পূর্বাচল ৭৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন প্রকল্প নেয়া হয়। কিন্তু প্রকল্পের ৩ বছরের মেয়াদকাল পার হলেও সে প্রকল্পেরও বেশি অগ্রগতি হয়নি। ফলে নতুন করে আবারও প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হল। একই সঙ্গে বাড়ছে প্রকল্প ব্যয়।
২০০৯ সালে যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে ২৭৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল এখন সেই ব্যয় প্রায় ৫ গুণ বেড়ে ১ হাজার ৩০৩ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। ২০২০ সাল পর্যন্ত সময় পাওয়া যাবে এই টাকা ব্যয়ে।
২০১৫ সালে বাণিজ্য মেলার স্থায়ী কেন্দ্র স্থাপনে ব্যয় ধরা হয় ৭৯৬ কোটি ১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার বহন করবে ১৩৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আর প্রকল্প সাহায্য মিলছে চীন থেকে ৬২৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। কিন্তু এই অর্থের মাধ্যমে প্রকল্পের অগ্রগতি তেমন হয়নি। এর পেছনে বাস্তবসম্মত কারণ রয়েছে বলে দাবি করেছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, সভায় মোট ৬ প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৯২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ব্যয় হবে ২ হাজার ২০ কোটি, বৈদেশিক সহায়তা থেকে আসবে ২২৪ কোটি টাকা আর সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে ব্যয় হবে ৬২৫ কোটি টাকা।
অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হলো:
•মাইজদি-রামগঞ্জ, ছয়ানী-বসুহাট- চন্দ্রগঞ্জ সড়কের মান উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ, ব্যয় হবে ২৫২ কোটি টাকা।
• দেশের ৩৭ জেলার সার্কিট হাউস ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৭০ কোটি টাকা এবং সারা দেশের খাদ্য গোদাম সংস্কার প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১৭ কোটি টাকা।
সূত্রঃখুলনার কন্ঠ ডটকম।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন