বিভাগীয় কমিশনার খুলনা পদে যোগদান করার জন্য সকাল ৮টায় রওয়না দিয়েছিলাম রাজশাহী থেকে।সাথে স্ত্রী।বন্ধু মুনীর হোসেন,ধীরেন এবং হাইয়ুল কাইয়ুম সহ অন্য সহকর্মী শুভেচ্ছা বিদায় জানালেন। এক অদ্ভূত অনুভব নিয়ে কুষ্টিয়া হয়ে খুলনা।
কোন কাজ গুলো অগ্রাধিকার দিব তা নিয়ে ভাবছিলাম। বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় বাহিনী /সংস্থা অনেক কিছু করেছে তাদের সদস্যদের জন্য।আমরা শুধু জেষ্ঠদের কাছ থেকে গল্প শুনি।


দুদিনপর আমার ব্যাচমেট ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার অশোক কুমার বিশ্বাসকে বললাম সবচেয়ে বড় একটা জায়গা বের করো যেখানে এডমিনিষ্ট্রটিভ কনভেনশন সেন্টার নির্মান করি। ফাইভ ষ্টার ফ্যাসিলিটি থাকবে।

প্রশিক্ষন,গবেষনা,কনভেনশন,পর্যটন,সুন্দরবন,ক্রিকেট,ক্যাপাসিটি,ল্যাংগুয়েজ ক্লাব থাকবে।জমি বাছাই করে তা বরাদ্দ করার জন্য প্রস্তাব পাঠালাম পূর্ত মন্ত্রনালয়ে।এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে এডিমিনিষ্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশন খুলনার নামে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করেন।কৃতজ্ঞতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ।মোহাম্মদ মঈনুদ্দিন আবদুল্লাহ স্যার প্রস্তাবটি প্রক্রিয়া করেন।জমির মালিকানা বুঝে পেতেও খুব ঝামেলা। জজ কোর্ট ও মাননীয় হাইকোর্ট মামলা ফেস করে পক্ষে রায় পাওয়া যায়। লম্বা ইতিহাস সব কথা বলছি না।
হাইকোর্টে আমার বন্ধু মোশাররফ সহায়তা করে।ঢাকা কালেকটরেটের কাদির ও মমতাজ।
আমার খুলনার সহকর্মী সুভাস চন্দ্র সাহা ও মোহসিনা আক্তার বানু পেপার তৈরী কাজে অনেক পরিশ্রম করেন।


ভবনটি বুঝে নেয়ার ক্ষেত্রে তৎকালীন জেলা প্রশাসক খুলনা মোস্তফা কামালবর্তমানে সচিব পরিবেশ মনত্রালয় ,অজেপ্র সুলতানুল আলম ও ম্যাজিষ্ট্রট আতিকুল ইসলাম খুবই বুদ্ধিদীপ্তভাবে ভুমিকা নেন।

আর্কিটেক্ট নাজিমুদ্দিন পায়েলকে আমার বাংলোতে ডাকলাম।Khulna have not seen such a beautiful archechture.এ রকম ভবন তৈরী করতে হবে।কোন পয়সা দিতে পারব না।পায়েল রাজী।খুলনার আর্কিটেকচার উন্নয়নে তার অনেক আগ্রহ।

ডিপিপি প্রস্তুতির কাজ শুরু করলাম।হোসেন আলী খন্দকার, কুয়েট ও Pwb ,kDA এর সহায়তা নিয়ে ডিপিপি জনপ্রশাসনে পাঠালাম।কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী স্যারকে দুদিন প্রেজেনটেশন দেখালাম। আবুল কালাম আযাদ স্যারকে বললাম ।তিনি কিছু পরামর্শ দিলেন।একনেক সভায় তোলার জন্য পরিকল্পনা কমিশনের সহকর্মী সাইদুল সহায়তা করেছেন।মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রীর সাথে দুবার দেখা করলাম।তখন আমি সচিব নৌ পরিবহন।
অবশেষে একনেকে উপস্থাপিত হলো।ডঃ মোজাম্মেল হক খান স্যারকে ব্রিফ করলাম। তিনি চমৎকারভাবে উপস্থাপন করলেন।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আবারো শ্রদ্ধা তিনি একশত ছয়চল্লিশ কোটি টাকা ব্যায়ে প্রকল্পটি অনুমোদন করলেন।প্রকল্পটি বাস্তাবায়নে পরবর্তী কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া,আনোয়ার হোসেন হাওলাদারও বর্তমান কমিশনার মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন কার্যকর ভূমিকা গ্রহন করেন।মন্জুর আলম পিডি হিসেবে প্রশসংনীয়ভাবে কাজ করছেন।প্রকোশলী তারিকুল একনিষ্ট ভাবে কাজ করছেন।পরামর্শক নাজিমুদ্দিন পায়েল টীম ও ঠিকাদার এনডিই নিরলসভাবে কাজ করছেন।
গতকাল কাজ পরিদর্শন করলাম। আমার একটা স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে দেখে ভাল লাগলো।কয়েক মাসের মধ্যেই সেন্টারটির কাজ শেষ হবে ইনশা আল্লাহ।প্রশাসন যখন কিছু করে দেশের সকল মানুষ তার বেনিফিট পায়।
এই প্রতিষ্ঠান খুলনার আর্থ সামাজিক উন্নয়নে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে কাজ করবে আশা করি।

অনেকের নাম করতে উল্লেখ করতে পারলাম তার জন্য দুঃখিত।অনেক কিছু বলা সম্ভব নয়,বললাম না। এভাবেই জেগে উঠুক খুলনা,,জেগে উঠুক আমার বাংলাদেশ।

লেখক: মো: আবদুস সামাদ,সাবেক সফল জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরা,সাবেক সফল বিভাগীয় কমিশনার খুলনা,সাবেক সিনিয়র সচিব নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়  ও এসডিএফ চেয়ারপার্সন, অর্থ মন্ত্রনালয়, বাংলাদেশ।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন