ওয়ারীতে সাত বছরের শিশুটিকে হত্যার যে বর্ণনা পুলিশ দিয়েছে, তাতে চোখ ভিজে যাবে মানুষের। প্রাণবন্ত শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে তাকে রশি পেঁচিয়ে টেনে নেয়ার কথা জানতে পেরেছে পুলিশ।

হত্যার দুই দিন পর বরিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় প্রধান সন্দেহভাজন হারুন অর রশিদকে। পরে ঢাকায় নিয়ে এসে দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।

ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সাড়ে ছয়টার মধ্যে শিশুটি তার মাকে অষ্টম তলায় গিয়ে খেলার কথা জানায়। সেখানে ফ্ল্যাট মালিক পারভেজের শিশুর সঙ্গে নিয়মিত খেলত সে। কিন্তু সেদিন ওই মেয়ে শিশুটি ঘুমাচ্ছিল। এটা শুনে শিশুটি বাসায় ফিরতে লিফটে ওঠে। সেখানে দেখা হয় পারভেজের খালাতো ভাই হারুনের সঙ্গে। আর সেটাই কাল হয় তার।

পারভেজের রঙের দোকানে কাজ করতে দুই মাস আগে বাসায় আসেন হারুন। মেয়েটিকে দেখে তিনি ছাদে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে নিয়ে যান।

পুলিশ কর্মকর্তা বাতেন বলেন, ‘ছাদে নিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে সে চিৎকার করে। এরপর মুখ চেপে ধরে চলে নির্যাতন। ধস্তাধস্তিতে শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়লে গলায় রশি পেঁচিয়ে টেনে রান্না ঘরে সিংকের নিচে রাখা হয়। এরপর পারভেজের বাসায় না ফিরে হারুন গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার তিতাস থানার ডাবরডাঙ্গায় পালিয়ে যায়।’

এই ঘটনা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন বলেও জানান বাতেন। বলেন, ‘তাকে আদালতে সোর্পদ করে রিমান্ড চাওয়া হবে। এ ঘটনার পেছনে আর কারো জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এরপরও রিমান্ডে নিয়ে কোনো তথ্য পাওয়া গেলে জানানো হবে।’

এই ঘটনাটিতে ন্যাক্কারজনক বলেও উল্লেখ করেন গোয়েন্দা কর্মকর্তা। বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত কুরুচির পরিচায়ক। এটি মানবতাবিরোধী অপরাধ। এ ধরণের অপরাধীরা সাধারণত ধর্ষণের পর ভাবে, এ অপকর্মের কারণে সে বাঁচতে পারবে না। তখনই হত্যার মতো ঘটনা ঘটায়। এই ক্ষেত্রেও তাই ঘটিয়েছে ঘাতক হারুন।’

গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে ওই মেয়েটিকে খুঁজে পাচ্ছিল না তার পরিবার। আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে নবনির্মিত ভবনটির নয়তলার ফাঁকা ফ্ল্যাটের ভেতরে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান পরিবার সদস্যরা। খবর পেয়ে রাত আটটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। ওই ভবনের ছয়তলায় শিশুটির বাবা-মা ভাড়া থাকত। তার বাবা একজন হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিল সে।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন