বৈশ্বিক মহামারী করোনা বাংলাদেশেও ছোবল হেনেছে। করোনায় অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন, অসুস্থ হয়েছেন। করোনা শুধু জীবনের ওপর নয়, জীবিকার উপরও আঘাত হে‌নে‌ছে। করোনার কারণে অনেকে চাকরি হারিয়েছেন, অনেককে পেশা পরিবর্তন করতে হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে অসহায় হয়ে পড়েছেন কেউ কেউ। এ রকম কিছু অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক)। পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জার উদ্যোগে বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি সহায়তা সেলের মাধ্যমে এ রকম ১৫০ জন অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়।

আজ বুধবার (২ জুন) রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামের এ ত্রাণসামগ্রী দেয়া হয়।

অনুষ্ঠান বক্তব্য রাখেন পুনাক’র সমাজ কল্যাণ সম্পাদিকা তৌহিদা ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পুনাকের সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা উম্মে সালমা মুন্নী। অনুষ্ঠানে পুনাকের সদস্যাবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

ত্রাণসামগ্রীর ১৮ কে‌জি ওজ‌নের প্রতিটি বস্তায় রয়েছে চাল, ডাল, তেল, আটা, আলু, লবণ, চিনিসহ অন্যান্য নিত্য প্র‌য়োজনীয় সামগ্রী।

পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা এ সময় বলেন, আমরা আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস নিয়ে আপনাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। তিনি সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমরা কেউ যেন পরিবারের বোঝা না হই, সবাই নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করি। যে যে কাজ পারেন সেটা করেই পরিবারের পাশে দাঁড়ান। আমরা আপনাদের পাশে আছি। কারো যদি কোন বিষয়ে ট্রেনিংয়ের প্রয়োজন হয়, আমরা আপনাদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করবো।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঠিক দিকনির্দেশনায় করোনাকালে প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করেছেন। তবে পুলিশ এবং সাংবাদিকদের সব সময় রাস্তায় থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। আমি সকলকে ধন্যবাদ জানাই। পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি পুনাকও মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

পুনাকের কার্যক্রমের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা গত রমজান মাসে রোজাদারদের নিজ কর্মপরিবেশ গিয়ে ইফতার বিতরণ করেছি, চাঁদরাতে রাস্তায় অসহায় মানুষের হাতে ঈদ উপহার ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছি। মানুষের পাশে থাকার পুনাক’র এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, পুলিশ পরিবারের সদস্যদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আইনি সহযোগিতা সেল করা হয়েছে। এ সেলের মাধ্যমে সাইবার ক্রাইম, নারী ও শিশু নির্যাতন, যৌতুক, ইভটিজিং ইত্যাদি সমস্যা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।

মানুষের পাশে থাকার অভিপ্রায় জানিয়ে পুনাক সভানেত্রী বলেন, আমরা একটি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী স্কুলে যাব। তাদেরকে নিয়েও কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।

পুনাককে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন জিশান মীর্জা। তিনি বলেন, পুনাককে ‘পুনাক ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিণত করতে চাই আমরা।

শুধু মানুষের প্রতি নয়, জীবের প্রতিও মানবিকতার কথা উল্লেখ করে জীশান মীর্জা বলেন, আমরা মানুষ, নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারি। পশু-পাখিরা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে না। তাই তাদের প্রতি আমাদের মানবিক আচরণ করা উচিত।

ত্রাণসামগ্রী বিতরণকালে সভানেত্রী জীশান মীর্জা প্রত্যেক অসহায় ও দুঃস্থ পরিবারের সদস্যদের কাছে যান, তাদের হাতে পরম মমতায় ত্রাণসামগ্রী তুলে দেন। তিনি গভীর মমত্ববোধের সাথে তাদের সাথে কথা বলেন, অবস্থা জানতে চান। এ সময় তাদের অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন