প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা ভারত থেকে করোনা টিকা কেনার ব্যবস্থা করেছিলাম। কিন্তু ভারতে যেভাবে করোনা আক্রান্ত সংখ্যা বেড়েছে ফলে তারা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এতে কিছুদিন আমাদের সমস্যা হয়েছিল। এখন আর সমস্যা নেই। চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে টিকা এসে গেছে আরও আসবে।

তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ দেওয়া হয়েছে। আপনাদের প্রতি আহ্বান অন্তত নির্দেশনাগুলো মেনে চলুন। নিজে সুরক্ষিত থাকুন, অন্যকে সুরক্ষিত রাখুন। সবাই এটা মেনে চললে আমরা করোনা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবো। টিকা আসা শুরু হয়েছে সমস্যা হবে না।

শনিবার (৩ জুলাই) জাতীয় সংসদের সমাপনী অধিবেশনে দেওয়া এক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যেখানে টিকা পাওয়া যাচ্ছে সেখানে আমরা যোগাযোগ করছি। আরও কিনে আনবো। চীন, রাশিয়া, জাপানা, যুক্তরাষ্ট্র সব জায়গায় আমরা যোগাযোগ রেখেছি। আমি আগেই বলেছি আমরা ৮০ শতাংশ মানুষের টিকার আওতায় আনবো। বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হচ্ছে। আমরা অনেক টাকা দিয়ে টিকা কিনে এনেছি। কিন্তু জনগণের স্বার্থে বিনামূল্যে টিকা দিচ্ছি। আমরা সব কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার দেই গ্রামের ও খেটে খাওয়া মানুষের।

তিনি বলেন, টিকা দেওয়ার পর স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হবে। শিশুদেরও তো করোনা হচ্ছে। জেনেশুনে শিশুদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবো কিনা বিরোধী দলের উপনেতা ও সংসদ সদস্যদের বলতে চাই। আমরা জেনেশুনে শিশুদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারি না। শুধু বাংলাদেশেই এই অবস্থা না সারা বিশ্বেই এই অবস্থা। বাবা-মায়েরা চায় না তাদের সন্তানরা এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাক। আর যাদের ছেলে-মেয়ে নেই তারা শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর এনেক্স ভবন করে বিচারক বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রত্যেকটা জেলা আদালত থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত যত ডেভেলপমেন্ট হয়েছে সবই আওয়ামী লীগ সরকারের সময় হয়েছে। এটা আমরাই করেছি; আর কেউ করেনি। আর বিএনপির সময় কী হয়েছে? ৬৩টি জেলায় আদালতে বোমা বর্ষণ হয়েছে। দুইজন জেলা জজ মারা গেছেন, কয়েকজন আহত হয়েছেন। এত শান্তিপূর্ণ (!) অবস্থায় তারা (বিএনপি) রেখেছিল। এখন তাদের কাছ থেকে শুনতে হয় বিচার ব্যবস্থা, বিচারক নিয়োগ ইত্যাদি।

বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির আমলে ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়েও বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিচারব্যবস্থার যত উন্নয়ন সব আওয়ামী লীগের সময় হয়েছে। বিএনপি সরকারের সময় এক ছাত্রদল নেতার ঘাড়ে হাত রেখে আলোচনা করে বিচারপতির রায় দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়াও ভোট চুরির সুযোগ তৈরির জন্য প্রধান বিচারপতির মেয়াদ বাড়িয়ে তাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করার বিষয়টিও করেছিল বিএনপি।

তিনি বলেন, বিচার ব্যবস্থা নিয়ে এখানে (জাতীয় সংসদে) বেশ কিছু কথা বলা হয়েছে। এখানে বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে বিরোধী দলের উপনেতা কিছু কথা বলেছেন। আমি একটু স্মরণ করিয়ে দিতে চাই-বাংলাদেশের বিচারপতি নিয়োগের যে নমুনা ছিল সেই নমুনা যদি আপনারা একটু স্মরণ করেন-প্রধান বিচারপতি কামাল হোসেন তিনি এজলাসে বসে আছেন, কিন্তু তিনি জানেন না তিনি (ওই পদে) নাই। তখন আপনার বড় ভাই তখন রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতির এক কলমের খোঁচায় বিচারপতি নাই। প্রধান বিচারপতি এজলাসে বসে আছেন-তখন তাকে বলা হলো-আপনি তো নাই। রাত্রিবেলায় আপনাকে বিদায় দেওয়া হয়েছে। এই হলো অবস্থা। তারপরে একজনকে দিলেন জাস্টিস মুনিম (বিচারপতি ফজলে কাদেরী মোহাম্মদ আবদুল মুনিম)। তিনিও বসতে পারেননি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যদি আমি বিএনপি ও এরশাদের আমলের কাহিনী বলতে যাই অনেক সময় লেগে যাবে।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন