কাল বিজয়ী দশমী : ঘুম নেই সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের

দ্বারা zime
০ মন্তব্য 458 দর্শন

 

উৎসব মুখোর পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করতে দিন-রাত ২৪ ঘন্টাই কাজ করছে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ।গত ১৯  অক্টোবর ২০২৩ খ্রী: রোজ  (শুক্রবার) মহাষষ্ঠীর মধ্যে দিয়ে ৫ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হয়েছে সাতক্ষীরাতে।

আজ নবমীর দিন জেলার বিভিন্ন উপজেলার পূজামণ্ডপে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিফর্ম ধারী পুলিশের পাশাপাশি সাতক্ষীরা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও ডিএসবি র পুলিশ অফিসার গণ সাদা পোশাকে মাইক্রোবাস নিয়ে পূজামণ্ডপের আসেপাসে টহল দিচ্ছেন।

সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাথা থেকে জানা যায়,পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান পিপিএম এঁর নির্দেশনা মোতাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সজীব খানের তত্বাবধানে সকল উপজেলার সার্কেল গণ ও জেলার ৮ থানার অফিসার ইনচার্জ গণ নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে দায়িত্ব পালন করছে।

সাতক্ষীরা থানার ওসি মহিদুল ইসলাম জানান,সদর উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নের সব কয়টি পূজামণ্ডপে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিট অফিসার, সাথে ২ জন কনস্টেল দিন-রাত ২৪ ঘন্টা পালাক্রমে ডিউটি করছে।রাতে দর্শনার্থী রা চলে গেলেও পূজামণ্ডপ পাহারায় পুলিশ ও আনসার থাকছে। যেনো কোনো রকম কেউ পূজামণ্ডপের ক্ষয়ক্ষতি না করতে পারে।

কলারোয়া থানার ওসি মোহা মোস্তাফিজুর রহমান জানান,প্রতিমা বির্ষজনের আগ পর্যন্ত প্রত্যেকটি পূজামণ্ডপের নিরাপর্তা নিশ্চিত করবে কলারোয়া থানা পুলিশ। তিনি বলেন,ধর্ম যার যার,উৎসব সবার।সবাই যেনো নিরাপদে পূজামণ্ডপে যেতে পারে, অনুষ্ঠান উপলব্ধি করতে পারে সে জন্য কলারোয়া থানা পুলিশ দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে।

জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ তারেক ফয়সাল ইবনে আজিজ জানান,ডিবি পুলিশ কে ৮ টি টিমে বিভক্ত করে জেলার ৮ টি থানা এলাকায় নিরাপর্তা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন,প্রত্যেক থানা এলাকায় ১ জন সাব-ইন্সপেক্টর, ২ জন এএসআই ও ৫ জন করে কনস্টেবল কে একত্রিত করে টিম গঠন করে মাইক্রোবাস যোগে নিরাপর্তা টহল জোরদার করা হয়েছে।তিনি বলেন,ঝুঁকিপূর্ণ পূজামণ্ডপ গুলোতে পুলিশ সার্বক্ষণিক ডিউটি করছে।বিসর্জনের আগ পর্যন্ত ডিবি পুলিশের এ নিরাপর্তা টহল অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

এদিকে গতকাল অষ্টমীর দিন সন্ধায় সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপের  নিরাপর্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন করতে আসেন খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মঈনুল হক বিপিএম-বার, পিপিএম।রেঞ্জ ডিআইজি সাতক্ষীরা শহরের মায়ের বাড়ি পূজোমন্দির ও পাটকেলঘাটায় সার্বজনীন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন।খোজ নিয়ে আরো জানা যায়,পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান পিপিএম আকর্ষ্মিক রাত ১১ -১২ টার দিকে শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপের নিরাপর্তা ব্যবস্থা মনিটরিং করতে যান। এছাড়া প্রত্যেক থানার অফিসার ইনচার্জ গণ পূজার শুরুর দিন থেকে রাত ৪ টার আগে কেউ বাঙলোতে যেতে পারেন না বলে জানা গেছে।

এদিকে ট্রাফিক পুলিশের টিআই প্রশাসন শ্যামল কুমার চৌধুরীর নেতৃত্বে সকল ট্রাফিক পরিদর্শক ও সকল সার্জেন্ট গণ  প্রত্যেকটি পূজামণ্ডপে র সামনে সড়কে শৃংখলা ফেরাতে কাজ করে যাচ্ছে।

সাতক্ষীরা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়,এ বছর জেলার ৭টি উপজেলায় ৬০৬টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।তারমধ্যে সাতক্ষীরা সদর ১১২টি,কলারোয়া উপজেলার ৪৮টি,তালা ১৯৬টি,আশাশুনি ১০৮টি,দেবহাটা ২১টি,কালিগঞ্জ ৫১টি ও শ্যামনগরের ৭০টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন মন্ডপে ঘুরে প্রতিমা শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি প্রতিমা তৈরি করতে শিল্পীদের সর্বনিম্ন ২৫-৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। সর্বোচ্চ তিন-চার লাখ টাকা খরচ হচ্ছে এ বছর।প্রতিমা তৈরির জন্য তাদের ৩ থেকে ৪ ভ্যান মাটি লাগে,খড়ের আউর লাগে ৫ থেকে ৬ পৌন।এছাড়াও কাঠ,বাঁশ,দড়ি,পেরেক,সুতা ও ধানের গুড়াসহ বিভিন্ন জিনিসের প্রয়োজন হয়।এর মধ্যে প্রতি ভ্যান মাটিতে তাদের খরচ হয় ৬শ’- ৮শ’ টাকা,প্রতি পৌন আউরে খরচ হয় ৫শ’- ৬শ’ টাকা।আর বাকি জিনিসগুলোর জন্য খরচ হয় ৪-৫ হাজার টাকা।আগের থেকে সব কিছুর জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় একটু বিপাকে আছি।

সাতক্ষীরা জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুভাস ঘোষ বলেন,এবছর জেলায় ৬০৬ টি মণ্ডপে উদযাপিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।শারদীয় দূর্গাপূজা সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করার জন্য প্রতিটি পূজা মন্ডপকে বাধ্যতামূলক সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পূজা উদযাপন কমিটির প্রস্তুতিমূলক সভায়।

শারদীয় দুর্গাপূজার নিরাপত্তার বিষয়ে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান পিপিএম বলেন, আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে জেলা পুলিশ সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। যেকোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে আমরা সর্বদা সজাগ রয়েছি।সকল সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে তাদের উৎসব পালন করতে পারে সে বিষয়ে সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।এছাড়া দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় দ্বায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে।তাছাড়া এবছর নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটা পূজা মন্ডল এলাকা সিসিটিভির আওতায় থাকবে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, হিন্দু ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।জেলায় এবছর ৬০৬ টি মন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।শারদীয় দূর্গাপূজা সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করার জন্য প্রতিটি পূজা মন্ডপকে বাধ্যতামূলক সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে এবং যে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে তিনস্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন