ঢাকা, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা ও ধলেশ্বরী নদীর ফোরশের/তীরভূমিতে অননুমোদিতভাবে গড়ে উঠা কোন মসজিদ ভাঙ্গা হবেনা, সেগুলো এ্যাডজাস্ট করা হবে।
মসজিদগুলো আলোকিত ও সৌন্দর্যমন্ডিত করা হবে। সুন্দর স্থাপত্য ডিজাইন থাকবে। মসজিদ দেখে মন ভরে যাবে। সেক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা দরকার। সরকার সহায়তা করবে। ধর্ম মন্ত্রণালয়, ইসলামিক ভাউন্ডেশন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে বৈঠক করে মসজিদগুলোর এ্যাডজাস্টের লক্ষ্যে সাব-কমিটি গঠন করা হবে।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি আজ ঢাকায় মতিঝিলস্থ বিআইডব্লিউটিএ ভবনে ঢাকা, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও ধলেশ্বরী নদীর ফোরশের/তীরভূমিতে অননুমোতিভাবে গড়ে উঠা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ স্থানান্তরের বিষয়ে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার সারাদেশে ৫০০ মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ করছে। ৫০টি মসজিদ নির্মাণ করা কোন অসম্ভব নয়। এলক্ষ্যে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা যায়। তিনি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে বলেন, আপনারা সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে এসেছেন। আল্লাহ আপনাদের সৎ উদ্দেশ্যকে কবুল করুন। আপনাদের মতামতের ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। আপনাদের সাথে পুনরায় আলোচনা করা হবে।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শুধু ঢাকার নয়, সমগ্র বাংলাদেশের নদীগুলোকে রক্ষা করতে হবে। যদি নদীগুলোকে রক্ষা করতে না পারি তাহলে বাংলাদেশকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। আপনাদের সাথে নিয়ে নদীরক্ষায় যুদ্ধ করতে চাই। তিনি বলেন, নদী তীর রক্ষা, দখল ও দূষণরোধে অপসারণ কার্যক্রমের সময় আমরা ধর্মীয় পবিত্র জায়গাগুলোতে হাত দিতে পারতাম কিন্তু করিনি। পবিত্র ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নামাজ আদায়ের জন্য এগুলো করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বায়তুল মোকারম মসজিদের খতিবসহ মুফতি, মাওলানা সাহেবদের সাথে এসব বিষয়ে এর আগে বৈঠক হয়েছে। তারা বলেছেন, কোথায় মসজিদ নির্মাণ করা যাবে, আর কোথায় করা যাবেনা। মুফতি মাওলানা সাহেবদের পরামর্শ নেয়া হবে। তিনি বলেন, নদীগুলোর মর্মান্তিক অবস্থা দেখলে অসুস্থ হয়ে পড়বেন। নদীগুলোকে রক্ষা করা দরকার। এজন্য সামগ্রিক ঐক্য দরকার। প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা নদী উদ্ধারে জোর দিয়েছেন। সরকার জনগনের সেবক। বঙ্গবন্ধুর কন্যার রক্তের মধ্যে সেবার কথাটি লেখা রয়েছে।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পরিবেশ দূষণমুক্ত করে নদীগুলোকে সুন্দর করতে চাই। আগামী ১০-১২ বছরের মধ্যে বুড়িগঙ্গার পানিকে স্বচ্ছ করতে চাই। বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে সীমানা পিলার, তীররক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণে প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। নদী তীরে অবৈধ স্থাপনা অপসারনে সহযোগিতার জন্য মিডিয়ার বন্ধুদের প্রতিমন্ত্রী ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, ঢাকা, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও ধলেশ্বরী নদীর ফোরশের/তীরভূমিতে (বৃত্তাকার নৌপথ অংশে) অননুমোতিভাবে ১১৩টি ধর্মীয়/ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে । এগুলোর মধ্যে ৭৭টি মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও মাজার; পাঁচটি কবরস্থান ও মৃত ব্যক্তির গোসলখানা; একটি ঈদগাহ; ১৪টি স্কুল ও কলেজ; ১৩টি ¯œানঘাট, মন্দির ও শ্মশানঘাট এবং তিনটি অন্যান্য স্থাপনা।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন সচিব মোঃ আবদুস সামাদ, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ হাফেজ আবদুর রাজ্জাক এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর এম মাহবুব উল ইসলাম, নৌপুলিশের ডিআইজি আতিকুল ইসলাম, আতাউল্লাহ হাফেজ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক উপস্থিত ছিলেন।

 





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন