জলাতঙ্ক রোগ নির্মূলের লক্ষে খুলনা জেলায় ব্যাপক হারে কুকুরের টিকাদান (এমডিভি) কার্যক্রম বাস্তাবায়নের জন্য জেলা পর্যায়ের অবহিতকরণ সভা আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে খুলনা স্কুল হেলখ ক্লিনিক সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডাঃ রাশেদা সুলতানা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা (সিডিসি) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

প্রধান অতিথি বলেন, সরকারের ভাল উদ্যোগগুলো আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সার্থক করে তুলতে হবে। সকল বিভাগের আন্তরিক প্রচেষ্ঠায় আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো।

খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ এএসএম আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে এ সভায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।

সভায় জানানো হয়, জলাতঙ্ক একটি ভয়ংকর মরণব্যাধি, যার মৃত্যুর হার শতভাগ। পৃথিবীতে কোথাও না কোথাও প্রতি ১০ মিনিটে একজন এবং প্রতি বছরে প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ জলাতঙ্ক রোগে মারা যায়। জলাতঙ্ক রোগটি মূলত কুকুরের কামড় বা আচঁড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। এছাড়া বিড়াল, শিয়াল, বেজী, বানরের কামড় বা আচঁড়ের মাধ্যমেও এ রোগ হতে পারে। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় দুই থেকে তিন লাখ মানুষ কুকুর, বিড়াল শিয়ালের কামড় বা আচাঁড়ের শিকার হয়ে থাকে, যাদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। এ ছাড়াও প্রায় ২৫ হাজার গবাদি প্রাণী এ রোগের শিকার হয়ে থাকে। ২০১৬ সালের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা শতকরা ৯০ ভাগ কমিয়ে আনা এবং ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে জলাতঙ্কমুক্ত করার লক্ষে ২০১০ সাল থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে জাতীয় জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ এবং নির্মূল কর্মসূচি বাস্তবায়ন চলছে। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সকল জেলায় ৬৬টি জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এসব কেন্দ্র থেকে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগীর আধুনিক ব্যবস্থাপনা এবং জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। এপর্যন্ত দেশের ৬৩টি জেলা সদর, ৯টি সিটি কর্পোরেশন এবং ৩৫টি জেলার সকল উপজেলা ছাড়াও ২১টি পৃথক উপজেলায় টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় প্রায় ১১ লাখ আটত্রিশ হাজারটি কুকুরকে জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকা প্রদান করা হয়েছে। গত কয়েক বছরের গৃহীত কার্যক্রমের ধারাবাহিকতার ফলে বাংলাদেশে জলাতঙ্কের সংখ্যা হ্রাস পেতে শুরু করেছে। সভায় আরও জানানো হয়, সরকার ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত কুকুরকে জলাতঙ্ক প্রতিষেধক দেওয়ার পাশাপাশি কুকুরে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরকেও প্রতিষেধক টিকা দিতে হবে।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন