খুলনার ময়ূর নদসহ ২৬টি খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে রবিবার থেকে এ অভিযান শুরু করেছে। গতকাল সোমবার দ্বিতীয় দিনের অভিযানে পাঁচটি ভবন ভাঙা হয়েছে। এর মধ্যে একটি চারতলা ভবনও রয়েছে। প্রশাসন কঠোরভাবেই এবারের উচ্ছেদ অভিযান মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রণ করছে।
খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি)’র এস্টেট অফিসার মো. নূরুজ্জামান তালুকদার জানান, ‘সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া অভিযান চলে বিকেল তিনটা পর্যন্ত। অভিযানের দ্বিতীয় দিন গল্লামারী ব্রিজ থেকে নিরালার দিকে উচ্ছেদ অভিযান চলে। এ সময় চারতলা ভবন ভাঙার কাজ শুরু করতে গেলে ভবন মালিক নিজেই এটা অপসারণ করে নেবেন বলে তিনদিন সময় চান। তাকে ওই সময় দেওয়া হয়। এরপর মালিক নিজেই ভবন ভাঙার কাজ শুরু করেন। এছাড়াও আরও পাঁচটি ভবন ও স্থাপনা ভাঙা হয়েছে।’
এর আগে রবিবার সকালে ময়ূর নদর বুড়ো মৌলভীর দরগা এলাকা থেকে এ অভিযান শুরু হয়। প্রথম দিন দু’টি স্কেভেটরের মাধ্যমে ১৩টি অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। অবৈধভাবে গড়ে ওঠা টিনসেড বাড়ি, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও সেমিপাকা কয়েকটি ঘর ভেঙে দেওয়া হয়। এসময় নদীর জায়গায় থাকা বহুতল ভবনের বর্ধিত অংশ ভবন মালিকদের নিজ উদ্যোগে ভেঙে ফেলতে দেখা যায়। রবিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া অভিযান দুপুরের বিরতি শেষে চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এ অভিযানে বুড়ো মৌলবীর দরগাহ থেকে ব্যাংক কলোনি পর্যন্ত একটি একতলা ভবন ও ১২টি ছোট-বড় স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদ অভিযানে কোনও বাধা দেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
উচ্ছেদ অভিযানের সময় সিটি মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী ও মাসুম বিল্লাহ, কাউন্সিলর ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, উচ্ছেদ কার্যক্রমে গঠিত ৪টি কমিটি ময়ূর নদসহ ২৬টি খালে জরিপ চালিয়ে ৪৬০ জন দখলদারের তালিকা করে। নদী ও খাল দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনার সংখ্যা ৩৮২টি। এর আগে ২০১৬ সালে ময়ূর নদর নাব্য ফিরিয়ে আনতে ৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে খুলনা সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু তাতেও নদটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে খুলনা মহানগরীকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে ময়ূর নদসহ ২৬টি খালের দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু অভিযান শুরুর পরপরই ওই বছরের ১১ জুলাই দুর্বৃত্তদের গুলিতে উচ্ছেদ কার্যক্রমে সক্রিয় সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর শহীদ ইকবাল বিথার নিহত হন। এর ফলে ওই অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। ১০ বছর পর এবার ময়ূর নদ ও ২৬টি খালের দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন