‌নির্বিঘ্নে ও নিশ্চিন্তে আয়কর রিটার্ন দিন করমেলাতে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে খুলনাতে সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলা শুরু হয়েছে। খুলনার বয়রাস্থ কর ভবন প্রাঙ্গণে আজ (মঙ্গলবার) সকালে মেলার উদ্বোধন করেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। বিভাগীয় পর্যায়ে এই মেলা ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত চলবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন,বঙ্গবন্ধু যে স্বনির্ভর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা অর্জনের পথে আজ আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ন্যায়নিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে। আজ আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুসহ দেশের অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। এক সময় ঋণ নেওয়ার জন্য আমরা যাদের পিছনে ঘুরতাম এখন তারাই ঋণ দেওয়ার জন্য আমাদের পিছনে ঘুরে। আত্মনির্ভরশীল জাতিতে পরিণত হতে হলে, উন্নয়নের এ ধারাকে অব্যাহত রাখতে হলে আমাদের প্রত্যেককে নাগরিক দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে হবে। সময়মত এবং সঠিকভাবে কর প্রদান করতে হবে। আয়কর মেলার ফলে মানুষের মধ্যে কর নিয়ে এক ধরনের ইতিবাচক উপলব্ধি তৈরি হবে। করভীতি থেকে বেরিয়ে এসে মানুষ কর প্রদানে উদ্বুদ্ধ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিরা বলেন, রাজস্ব আয়ে আয়করের অবদান দিন দিন বাড়ছে। ২০১৩ সালে টিআইএনধারীর সংখ্যা ছিল মাত্র ১২ লাখ, গত পাঁচ বছরে তা বেড়ে ৩৭ লাখে দাঁড়িয়েছে। এসময়ে আয়করের পরিমাণ ১২ হাজার কোটি থেকে বেড়ে ৬৬ হাজার কোটিতে উন্নীত হয়েছে। কর মেলার মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়াতে পারলে সামনের দিনগুলোতে আয়কর আহরণের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে। এজন্য কর প্রদান প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করার কাজ অব্যাহত আছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন জাতীয় রাজম্ব বোর্ডের সদস্য কালিপদ হালদার, কর আপীল অঞ্চল খুলনার কর কমিশনার প্রশান্ত কুমার রায়, পুলিশ কমিশনার মোঃ হুমায়ুন কবির, মোংলা কাস্টমস হাউজের কমিশনার সুরেশ চন্দ্র বিশ্বাস, খুলনা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি-এর সিনিয়র সহ-সভাপতি শরীফ মোঃ আতিয়ার রহমান এবং খুলনা কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি হারুন অর রসিদ হেলাল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কর অঞ্চল-খুলনার কর কমিশনার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। স্বাগত জানান অতিরিক্ত কর কমিশনার খালেদ শারিফ আরেফিন।

মেলায় ৪৭টি স্টলের মাধ্যমে কর সংক্রান্ত সেবা প্রদান করা হচ্ছে। মেলায় সকল শ্রেণির করদাতারা ইটিআইএন রেজিস্ট্রেশন বুথে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে নতুন করদাতাগণ ইটিআইএন রেজিস্ট্রেশন এবং বর্তমান করদাতাগণ রি-রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন। পাশাপাশি এই মেলায় করদাতাগণ তাঁদের আয়কর রিটার্ন দাখিল এবং মেলা প্রাঙ্গণে স্থাপিত সোনালী, বেসিক ও জনতা ব্যাংকের বুথের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের আয়কর জমা দিতে পারছেন। মেলায় মহিলা, প্রতিবন্ধী ও প্রবীণ করদাতাদের জন্য পৃথক বুথ রয়েছে। করদাতাদের রিটার্ন পূরণে সহায়তা করার জন্য মেলায় ‘হেল্প ডেস্ক’ এর ব্যবস্থা আছে। এবছর আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন