খুলনা বিভাগের প্রায় ৮৬ শতাংশ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন সুবিধা নিশ্চিত হয়েছে। বর্তমানে দেশের ৭১ শতাংশ জনগোষ্ঠী মানসম্মত স্যানিটেশন সুবিধায় আওতায় আছে। পাশাপাশি দেশের শতভাগ জনগোষ্ঠী কোন না ধরণের ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জাতীয় স্যানিটেশন মাস ও বিশ্ব হাতধোয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আজ (মঙ্গলবার) এসকল তথ্য জানানো হয়। দিবসটি পালনের এবারের প্রতিপাদ্য ছিলো ‘সকলের জন্য উন্নত স্যানিটেশন, নিশ্চিত হোক সুস্থ্য জীবন’ এবং ‘সকলের হাত, পরিস্কার থাক’। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোঃ হাবিবুল হক খান।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ ভূখন্ড স্যানিটেশনের ক্ষেত্রে দক্ষিণ-এশিয়ার সবার চেয়ে এগিয়ে আছে। এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা একটি অভ্যাসের বিষয়। পরিবার হতেই এর চর্চা শুরু হওয়া উচিত। স্বাভাবিক সময়ের পাশাপাশি দুর্যোগকালীন স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিতে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, অপর্যাপ্ত স্যানিটেশনের কারণে বাংলাদেশের বার্ষিক আর্থিক ক্ষতির পরিমান প্রায় ২৯ হাজার পাঁচশত ৫০ কোটি টাকা যা দেশের মোট জিডিপির ৬.৩ শতাংশ। ১৯৮৫ সালে দেশে স্যানিটেশন কাভারেজ ছিলো ৩ শতাংশ যা ২০০৩ সালে ৫৮ শতাংশে উন্নীত হয়। মানসম্মত স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নের ফলে শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজার জীবিত জন্মে ১৪৬ থেকে ৪১ এ নেমে এসেছে। খাবার গ্রহণের আগে ও টয়লেট ব্যবহারের পরে হাতধোয়ার অভ্যাসের মাধ্যমে ৬০ ভাগ ডায়রিয়া এবং ২৫ শতাংশ শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত মৃত্যুহার কমানো সম্ভব। খুলনা বিভাগে চুয়াডাঙ্গা জেলা স্যানিটেশনের ক্ষেত্রে শতভাগ কাভারেজ নিশ্চিত করেছে। এক্ষেত্রে ৭৮ শতাংশ কাভারেজ সুবিধা নিয়ে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে কুষ্টিয়া জেলা। খুলনা জেলায় এ হার ৮৩ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এসএম ওয়াহিদুল ইসলাম ও খুলনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডাঃ রাশেদা সুলতানা। অনুষ্ঠানে স্যানিটেশন বিষয়ের ওপর ধারণাপত্র উপস্থাপন করে খুলনা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাহিদ পারভেজ। খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত জানান মোংলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ খাইরুল হাসান। বিভাগীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এর আগে শহিদ হাদিস পার্ক থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে। পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্ত্বরে হাত ধোয়ার কৌশল প্রদর্শন করা হয়।