তখন সকাল ৯টা (শুক্রবার)। আমরা টহল ডিউটিতে ছিলাম। হঠাৎ একটা ছেলে এসে বলল, স্যার দেওয়ানহাট রেলওয়ে ডকের পাশে একটা বাচ্চা পড়ে আছে। দ্রুত গিয়ে দেখি, রেললাইনের পাশে একটা বাচ্চা কাঁদছে। রক্তমাখা সারা শরীর। দূরেই শুয়ে আছে রক্তাক্ত এক মহিলা। তার কাছে গিয়ে দেখি তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। সামগ্রিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে অসুবিধা হলো না মহিলাটি নবজাতকের গর্ভধারিণী। নাম তার রীনা, বয়স আনুমানিক ৩০ বছর। এমন সময় রেললাইনের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল আরেক মহিলা। তাকে ডাকলাম। তার সাহায্য চাইলাম। তিনি কাপড় সংগ্রহ করে শিশুটিকে পেঁচিয়ে নিলেন। রক্তাক্ত মহিলা ও নবজাতককে গাড়িতে করে নিয়ে যাই আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে। বর্তমানে মা হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের ৫০ নম্বর বেড এবং শিশুটি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।’ এ কথাগুলো চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আলাউদ্দিনের।
জানা যায়, রেললাইনের পাশে জন্ম নিয়েছিল শিশুটি। অদূরেই ছিল মানসিক ভারসাম্যহীন মা। রেললাইনের আশপাশে যার বসতি। সদ্যোজাত শিশুটির আশপাশে ঘোরাফেরা করছিল কুকুরের দল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশের টহল দল। নবজাতক এবং তার মাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রচুর রক্তক্ষরণের পর মাকে রক্ত দিলেন এক পুলিশ সদস্য। শিশুটিও প্রাণে বেঁচে যায়। পুলিশ কর্মকর্তা আলাউদ্দিন চিকিৎসকের বরাতে বলেন, সম্ভবত ভোর ৫টার দিকে শিশুটির জন্ম হয়েছে। শীতের মধ্যে প্রায় চার ঘণ্টা খোলা আকাশের নিচে থাকায় তার বুকে ঠান্ডা লেগেছে। এ জন্য তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় মায়ের শরীর খুবই দুর্বল ছিল। চিকিৎসকের পরামর্শে ডবলমুরিং থানার এএসআই মেহেদি তাকে রক্ত দিয়েছেন। এ ছাড়া ওষুধ-ইনজেকশসহ আনুষাঙ্গিক খরচও ডবলমুরিং থানা দিচ্ছে।