ভুক্তভোগীর বড় ভাই সেজে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল এক ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার ঘুষ চাওয়ার প্রমাণ পেয়ে তাৎক্ষণিক তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকালে তাকে বরখাস্তের নির্দেশ দেন তিনি।

সাময়িকভাবে বরখাস্তকৃত মোকলেস আলী সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা।

ওই ভুক্তভোগী জানান, তিনি ও তার বাবা বৃহস্পতিবার দুপুরে ধুলিহর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে জমির মিউটেশন করতে যান। এজন্য নির্ধারিত ফি ১১শ ৭০ টাকা হলেও তাদের কাছে পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ চাওয়া হয়। অনেক দেন দরবার করলেও পাঁচ হাজারের এক টাকা কম হলেও কাজ হবে না বলে তাদের জানিয়ে দেন ওই ভূমি কর্মকর্তা এবং জুয়েল নামে এক দালালকে দেখিয়ে দেন তিনি।

এ সময় ওই ভুক্তভোগী সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামালের কাছে মোবাইল করে ঘুষ চাওয়ার বিষয়টি জানান। জেলা প্রশাসক তাকে তার বড় ভাই পরিচয়ে ওই কর্মকর্তার সাথে কথা বলিয়ে দিতে বলেন।

এ সময় ওই ভুক্তভোগী ধুলিহর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোকলেস আলীর কাছে নিজের ফোনটি দিয়ে বলেন, আমার বড় ভাই আপনার সাথে একটু কথা বলবেন।

এ সময় জেলা প্রশাসক নিজেকে ওই ভুক্তভোগীর বড় ভাই পরিচয় দিয়ে বলেন, ভাই চার হাজার টাকা নেন, আমরা গরীব মানুষ কাজটি করে দেন। উত্তরে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোকলেস আলী বলেন, ঠিক আছে দেখবো।

এর পরপরই সেখানে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আসাদুজ্জামানকে পাঠিয়ে দেন জেলা প্রশাসক।

সেখানে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় এবং ভূমি অফিসে বিভিন্ন কাজে আসা মানুষের সাথে কথা বলে নিয়মিত ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হন তিনি।

এর পরপরই বিকালে ধুলিহর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোকলেস আলীকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ দেন জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ অক্টোবর সাতক্ষীরা রাজস্ব প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শপথ বাক্য পাঠ করিয়ে জেলা প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্ত ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল।
একটি সূত্র জানায়, ধুলিহর গ্রামের মৃত মোফাজ্জেল সরদারের পুত্র মোঃ মিজানুর রহমান মিজান ও বাঁকাল ঢালীপাড়া গ্রামের আলহাজ্ব বাবর আলী ঢালীর পুত্র মোঃ গোলাম হোসেন ওরফে জুয়েল ওরফে জুলি মোকলেস আলীর ঘুষ আদায়ের সহযোগী। এরাই ধুলিহর তহশীল অফিসের ঘুষ লেন-দেন ও অফিস নিয়ন্ত্রক। ধুলিহর তহশীল অফিসে মোকলেস আলী যোগদানের পর হতে ঘুষ ছাড়া কোন কাজ হতো না। সীমাহীন দূর্ণীতি করে মোকলেস বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছে।
তার বরখাস্তের খবরে এলাকার মানুষ আনন্দ প্রকাশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসক এস,এম মোস্তফা কামালকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।
এলাকার মানুষ জানায়, ঘুষখোর ও দূর্ণীতিবাজ মোকলেসকে শুধু বরখাস্ত নয়, তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করে সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
সূত্র: দৈনিক সাতনদী ডটকম।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন