চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকতে চায় না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য সেভাবে প্রস্তুতি নিতে নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতেই সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি হাতে নেয় বলেও জানান তিনি।

বুধবার রাতে ফ্রিল্যান্সার পেশায় জড়িতদের পরিচয়পত্র প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। ডিজিটাল মাধ্যমে সাড়ে ছয় লাখ ফ্রিল্যান্সারের পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বে এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা আসছে। এই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা মাথায় রেখেই আমাদের দক্ষ কর্মজ্ঞান সম্পন্ন লোকবল সৃষ্টি করতে হবে। সেটার জন্য এখন থেকেই উদ্যোগ না নিলে আমরা পিছিয়ে যাব। সুতরাং আমরা পিছিয়ে যেতে চাই না। এজন্য প্রশিক্ষণটা সাথে সাথে দরকার। কারণ আমরা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে চাই। বিশ্ব প্রযুক্তিগতভাবে যতটুকু এগোবে আমরা তারসঙ্গে তাল মিলিয়েই আমরা চলবো।’

সমাজের কমবেশি সবাই ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টি জানলেও ফ্রিল্যান্সার এতদিন তাদের পরিচয় নিয়ে সমস্যায় ছিলেন। ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত পরিচিত কার্ড বা ফ্রি ল্যান্সিং আইডি’র মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হতে চলেছে। কর্মসংস্থান, উপার্জন বা দক্ষতার প্রমাণ হিসেবে এই কার্ডটি ব্যবহার করা যাবে। যা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ব্যাংকিং বা ভিসার আবেদন, বাসা বা অফিস ভাড়া এমনকি বাচ্চাদের স্কুল ভর্তি করার মত বিষয়গুলোতে সহজ করে দেবে। সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটের মাধ্যমে (www.freelancer.com.bd) দেশের প্রায় সাড়ে ছয় লাখ ফ্রিল্যান্সার আইটি কর্মরত এখানে রেজিস্ট্রেশন করে পরিচয়পত্র গ্রহণের সুযোগ পাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের এই উদ্যোগ সমাজে একটা স্বীকৃতি আসবে, সম্মান আসবে, অর্থ উপার্জন করতে পারবে। এমনকি আমাদের অর্থনীতিতেও বিরাট অবদান রাখবে। ছেলে-মেয়েরা বিদেশে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করবে ওটা তো রেমিটেন্স আকারেই বাংলাদেশে আসবে। এটাও আমাদের এখন হিসাব নিতে হবে যে, কারা কত অর্থ উপার্জন করল। নিজেরাই নেবে কিন্তু হিসাবটা আমরা পাব।’

শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে বলেন, ১৯৯৬ সালের আগ পর্যন্ত সরকারি অফিসের কোনো স্তরেই কম্পিউটারের ব্যবহার ছিল না। তার ছেলে ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শেই কম্পিউটারের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে এই খাতকে উৎসাহিত করা হয়েছে।

কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রথম মেয়াদ থেকেই টেলিযোগাযোগ ও গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন খাতে মনোপলি ব্যবসার পরিবর্তে বেসরকারি খাত উন্মুক্ত করে দিয়েছেন বলে জানান শেখ হাসিনা। বলেন, ‘আরও কর্মসংস্থান তৈরি করতে সরকার যোগাযোগব্যবস্থার সাথে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ধারাবাহিক পরিকল্পিত উন্নয়ন করেছে।’

দেশের তরুণ-তরুণীরা প্রচণ্ড মেধাবী এমন তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একটু সুযোগ করে দিলেই তারা তাদের মেধার বিকাশ ঘটাতে পারে।’

সরকার তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘কোনো কাজের জন্য এখন আর শহরে আসার প্রয়োজন নেই, গ্রামে বসেই সব সুবিধা পাওয়া যাবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। সভাপতিত্ব করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে ‘লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং’ এর ওপর নির্মিত ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ সংক্রান্ত পৃথক দুটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়। এছাড়া ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক একটি এ্যানিমেটেড ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন পরিবেশিত হয় অনুষ্ঠানে।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন