খুলনা রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন, বিপিএম (বার) বলেছেন, জঙ্গিবাদ নিশ্চিহ্ন হয়নি। চুপচাপ আছে বলে ভেবে নেয়ার কারণ নেই যে জঙ্গিবাদিরা শেষ। যে কোন সময় যে কোন মুহূর্তে তাদের রূপ দেখাতে পারে। এজন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে। সন্ত্রাসীরা পোর্টফোলিও যাই হোক না কেন রেহাই নেই। বর্তমান সরকার কোন ধরনের সন্ত্রাসীর রেহাই দিচ্ছে না।
অবৈধ টাকার মালিকদের উদ্দেশ্যে রেঞ্জ ডিআইজি বলেছেন, সাবধান হয়ে যান। টাকা নিয়ে কোথায়ও যেতে পারবেন না। আরাম আয়েশে দিন কাটানোর জন্য অবৈধভাবে যারা টাকা আয় করেছেন তারা এখন জেলে বন্দি।
মঙ্গলবার বিকেলে যশোর টাউন হল ময়দানে যশোর জেলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের এক মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডিআইজি ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন মাদকের ভয়াবহতার কথা তুলে ধরে বলেছেন, একটি পরিবারের মা হলো চ্যান্সেলর। আর বাবা ভাইস চ্যান্সেলর। সন্তানের গতিবিধি তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। মোবাইল-ল্যাপটপ যখন সন্তানেরা ব্যবহার করবে তখন দেখবেন ঘরের দরজা যেন খোলা থাকে। সন্তানের চাহিদা কমান, তাহলে যোগানও কম হবে। মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদের কোন স্থান দেশের মধ্যে হবে না।
তিনি বলেছেন, পুলিশ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। সাধারণ জনগণের টাকায় তাদের বেতন হয়। সেই জনগণের অভিযোগ পুলিশ শুনতে বাধ্য। যারা জনগণের সাথে থাকবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেছেন, ভোগবাদি সংজ্ঞার পরিবর্তন হয়েছে। ভোগবাদি সমাজের কিছু উপসর্গ থাকে। সে গুলো চিহ্নিত করে সাবধান হতে হবে। চাহিদার সবকিছু যোগ হলে মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়ে মানুষ। এখন থেকে সাবধান হতে হবে। মাদক সেবনকারীদের ডোপ টেস্ট করে চাকরিতে নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া চালু হচ্ছে।
জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, সন্ত্রাসীদের ঠাঁই দেবেন না। ঘুষ নেয়া, চুরির অভ্যাস থাকলে বন্ধ করুন। পালানোর জায়গা থাকবে না। বালিশ যেমন ছাদ থেকে ফেলা হচ্ছে তেমন অবৈধ টাকা ডাস্টবিনে ফেলতে হবে। সেই দিন এসে গেছে। দেশ থেকে হরতাল অবরোধ বিলুপ্ত হয়েছে। সন্ত্রাসী, কালোটাকাও বিলুপ্ত হবে।
তিনি বলেছেন, পুলিশকে জনগণের বন্ধু হতে হবে। এই কারণে কমিউনিটি কেন্দ্রিক পুলিশ কাজ করছে। মানুষের কাছে যেয়ে এক সাথে কাজ করার চেষ্টা করছে পুলিশ। সাধারণ, গরিব মানুষের অভিযোগ আগে শুনতে হবে। তাদের সমস্যার সমাধান করতে পারলে মানুষ স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে পারলে দেশ উন্নতি হবে। সরকারের গৃহিত পদক্ষেপের মতো আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে সারা পৃথিবীর মধ্যে বাংলাদেশ ভারি অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। সেই কাজে পুলিশের অংশগ্রহণ সবথেকে বেশি থাকতে হবে। তিনি মুজিববর্ষে সকলকে এক সাথে কাজ করার আহবান জানান।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যশোর জেলা কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটির আহবায়ক আলী আকবর। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যশোরের জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ, পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যক্ষ জেএম ইকবাল হোসেন প্রমুখ।
এর আগে একটি র্যালি কোতয়ালি থানার সামনে থেকে বের হয়ে টাউন হল ময়দানে গিয়ে শেষ হয়। র্যালিতে যশোর জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের ৫ সহ¯্রাধিক সদস্য অংশ নেন। সমাবেশ শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন সাধারণ মানুষ।