বিট পুলিশিং সম্পর্কে পুলিশ ও নাগরিকদের ভালোভাবে জানতে হবে উল্লেখ করে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম-বার বলেছেন, বিট পুলিশিং সেবার ক্ষেত্রে বিট পুলিশ ও নাগরিক উভয় পক্ষকে আগে ভালো করে জানতে হবে, তারা কী সেবা নিতে এবং দিতে পারবেন। আর সেই কারণে আমরা গ্রাফিক নভেল ও অ্যানিমেটেড ফিল্ম সিরিজ উদ্বোধন করেছি।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগের পুলিশ অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ পুলিশ নির্মিত গ্রাফিক নভেল ‘দুর্জয়ের ডায়েরি’ এবং অ্যানিমেটেড ফিল্ম সিরিজের উদ্বোধন করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম-বার।
তিনি বলেন, এসবের মাধ্যমে দ্রুত তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়।
গ্রাফিক নভেলের মাধ্যমে আমরা নিরাপত্তাজনিত বার্তাগুলো মানুষকে দিতে চাই। আমরা চাই যারা সেবা নেবেন তাদের যেন স্পষ্ট ধারণা থাকে তিনি কী কী সেবা নিতে পারবেন, অন্যদিকে যিনি সেবা দেবেন তারও যেন স্পষ্ট ধারণা থাকে তার কাজের বিষয়ে।
সঠিক ধারণা না থাকলে পুলিশি সেবা নিতে সমস্যা সৃষ্টি হয় উল্লেখ করে বেনজীর আহমেদ বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, সেবা কোথায় থেকে পেতে পারি সেই ধারণা না থাকার কারণে অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়।
এছাড়া অনেক অভিযোগও আসে। যেমন জমি-জমা সংক্রান্ত বিষয় অর্থাৎ দেওয়ানি সংক্রান্ত বিষয় পুলিশের কাজের মধ্যে পড়ে না। অনেকে এ সমস্যা নিয়ে এলেও আমরা এ বিষয়ে সেবাই দেই না। সঠিক তথ্য না থাকার কারণে দেওয়ানি সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে অনেকে আসেন এবং সেবা না পেলে ধারণা করেন অন্য পার্টির কাছ থেকে পুলিশ টাকা খেয়েছে।
আইজিপি বলেন, একটা সময় ছিল, যখন দিন কিংবা রাতে বিপদে পড়লে দৌড়ে যেতে হতো থানায়। এখন বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে আমরা লোকাল এলাকায় পুলিশি সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। আমরা প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে একটি করে কক্ষ নিয়েছি সরকারের কাছে চিঠি লিখে। যখন আমাদের বিট অফিসার ইউনিয়নে যান তখন তিনি যেন সেই কক্ষে বসতে পারেন। বিট অফিসাররা যখন সুযোগ পান তখন বা নির্ধারিত তারিখে থানা থেকে ইউনিয়নে যান। এর ফলে প্রিভেন্টিভ পুলিশিংয়ের ক্ষেত্রে দারুণ সুফল নিয়ে এসেছে। আমরা প্রথমবার দেখেছি যে, বিট পুলিশিংয়ের কারণে ২০-২৫ হাজার মামলা কমে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা মানবদেহের অক্সিজেনের মতো, নিরাপত্তা ছাড়া একটি সমাজ চলতে পারে না। এই জন্য সারা দেশে আমরা বিট পুলিশিং নিয়ে কাজ করছি। এর মাধ্যমে গ্রামে সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশি সেবা আমরা নিয়ে যাওয়া চেষ্টা করছি।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, বিগত বছরগুলোতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে অনেক অনেক গবেষণা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকেও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গবেষণার উদ্যোগ নিয়েছি। পুলিশ যে গবেষণাটি করেছে, সেটি একটি উন্নতমানের গবেষণা হয়েছে। এই গবেষণাটি খুব দ্রুত আমরা প্রকাশ করতে চাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত আইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এম খুরশীদ হোসেন। বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি প্রশাসন ও অর্থ মো: মইনুর রহমান চৌধুরী, ডিএমপি কমিশনার মোহা.শফিকুল ইসলাম,র্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন,সিআইডির প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান,নৌ পুলিশের প্রধান মো: শফিকুল ইসলাম,এসবির প্রধান মো: মনিরুল ইসলাম,হেড কোয়াটার ডিআইজি (ডিসিপ্লিন এন্ড প্রশাসন) মো: আমিনুল ইসলাম,ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মো: হাবিববুর রহমান,এসবির রাজনৈতিক শাখার ডিআইজি ইঞ্জিনিয়ার এজেডএম নাফিউল ইসলাম,সিআইডির ডিআইজি মো: হাবিবুর রহমান,বাংলাদেশ পুলিশের মুখমপাত্র এআইজি কামরুজ্জামান রাসেল সহ ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ এবং ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সকল মেট্রোপলিটন কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার পুলিশ সুপার গণ ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।