দরদী মানুষ না হলে দরদী নেতা হওয়া যায়না
মানুষ কে ভাল না বাসলে মানুষের ভাল বাসা পাওয়া যায়না।
হৃদয়ে মমত্ববোধ নাথাকলে দেশাত্মোধ জাগ্রত হয়না।
দেশাত্মবোধ না থাকলে দেশের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা জন্মায় না। দেশের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকলে রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যতা সৃষ্টি হয় না।
মানুষের দুঃখ কষ্টে ব্যাথিত না হলে তাদের কাছে টানা যায় না।
মানুষের চোখের জলের ভাষা না বুঝতে পারলে মানিবক হওয়া যায়না।
ক্ষুধাক্লিষ্ট মানুষের ক্ষুধার যন্ত্রনা না বুঝতে পারলে তাদের কাতাের সামিল হওয়া যায়না।
চোখের দৃষ্টি না হারালে অন্ধদের হৃদয়ের আর্তনাদ কতটা গভীর তা কখনো বুঝাা যাবেনা।
পংগুত্তের অসহায়ত্ত্বতা কতটা মর্মন্তদ।
পংগু না হলে সেই উপলব্ধি কখনো সৃস্টি হবেনা।
বধিরদের না বলা কথার অব্যক্ত বেদনা হৃদয়ে কতটা ক্ষতের সৃষ্টি করে বধির না হলে তা বুঝার বোধ কখনো জন্মাবে না।
স্রমিকের ঘর্মাক্তকলেবর কতটা কষ্টপিষ্ট স্রমিক না হলে তা কখনোই বোধে আসবেনা।
কৃষক না হলে কখনোই বুঝা যাবেনা কতটা দেনার দায়ে জর্জরিত তার ফসলে ভরা ক্ষেত।
যে বোনটি হারিয়েছে তার সম্ভ্রম কেবলমাত্র সেই বুঝে
ক্ষত বিক্ষত এই বেদনা কতটা অপরিমেয়।
মাসের পর মাস মজুরী বন্চিত গার্মেন্টস মজুর ই কেবলমাত্র সেই বুঝে সংসারের বোঝা তার কাছে কতটা ভারী।
তার চেয়ে ও ভারী পিতার কাঁধে পুত্রের লাশ। এ বেদনা অপার।
চৌরাস্তার যে কনস্টেবলটি সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি রোদ- বৃষ্টি -ঝড় উপেক্ষা অভুক্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরে কেবলমাত্র সেই বুঝে জীবন কতো কঠিন হতে পারে।
যে সেবিকাটি নিরন্তর হাসি মুখে অসুস্থ মানুষের সেবায় ব্যাপৃত থাকে কেবলমাত্র সেই জানে বেদনা কতটা অন্তর্লীন তার হৃদয়ের গহীন কোনে।
দেশ থেকে দেশান্তরে ঘুরে বেড়ায় যুদ্ধশিশু তার শিকড়ের সন্ধানে।
অশীতিপর বৃদ্ধ জননী আজও অপেক্ষার প্রহর গুনে এই বুঝি সন্তান তার এলো ফিরে যুদ্ধ জয় করে।
স্বাধীনতার অর্ধ শতকে দাড়িয়ে কেউ কোন দিন তাকে বলবেনা, ” মাগো তোমার ছেলে যুদ্ধে জীবন দিয়েছে আর আসবেনা কোনদিন ও ফিরে।
প্রসব বেদনা কতটা তীব্র হলে তা প্রকাশের কোন ভাষা মিলনা না শুধু মাত্র মায়ের মুখেই ফুটে অবর্ননীয় কষ্টের প্রতিচ্চবি।
শঙ্খচূড়ের দংশন কতটা নীল তা কেবলমাত্র মৃত্যুর পূর্বে
সেই দংশিত ব্যাক্তি আকার ইংগিতে বুঝাতে পারে
সে কখনো বুঝতে পারনা যাকে কখনো সর্পদংশন করেনি।
আগুনের লেলিহান শিখা কতটা ভয়ংকর তা কেবল সেই জানে
অগ্নি দগ্ধ দেহটি যখন তার একটু একটু করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের যখন সম্পূর্ন বিবস্ত্র অবস্হায় দিনের পর দিন গন ধর্ষন শেষে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়, সেই কলংকিত লান্ছনা কতটা নিঃসীম লজ্জার হতে পারে, সেই মুত্যু যন্ত্রনা কতটা বিভৎস পৈশাচিক হতে পারে, কেবলমাত্র তারাই বলতে পারেন।
শান্ত অশান্ত প্রশান্তমহাসাগরের ঝড়ের কবলে পতিত দিশেহারা নাবিকই কেবল বলতে পারে মৃত্যু তার কতটা কাছাকাছি।
ফাঁসীর কাঠ গড়ায দনডিত আসামীই কেবল বলতে পারেন তিনি কতটা অসহায় আর পৃথিবী কতটা মায়াময়।
খাঁচামুক্ত পাখিই কেবল বুঝতে পারে আকাশটা কত বড় আর মুক্তির স্বাদ কতটা অবারিত।

লেখক : -ড. এস এম মনির- উজ-জামান,সাবেক ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল খুলনা রেঞ্জ ও চট্রগ্রাম রেঞ্জ পুলিশ। 





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন