সম্প্রতি ক্রীড়া পরিদপ্তরের বর্তমান পরিচালক (যুগ্ম সচিব) আ,ন,ম তরিকুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে গত ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে ক্রীড়া পরিদপ্তরের সামনে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করে ক্রীড়া পরিদপ্তর ও এর আওতাধীন দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। পরিচালক, ক্রীড়া পরিদপ্তর এর বিরুদ্ধে নানান ধরনের অভিযোগ তোলে সেদিনের মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক একেবারেই বিপরীত চিত্র পাওয়া গেলো। মূলতঃ দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার ফলে দুর্নীতিবাজরাই পরিচালক তরিকুল ইসলাম এর বদলি ও অপসারণের দাবীতে আন্দোলন করছে। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা তাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্যই দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণাকারী বর্তমান পরিচালক( যুগ্ম সচিব), ক্রীড়া পরিদপ্তর আ,ন,ম তরিকুল ইসলাম এর বদলি ও অপসারণের দাবীতে আন্দোলন করছে।
এবিষয়ে আজ ক্রীড়া পরিদপ্তরের বর্তমান পরিচালক (যুগ্ম সচিব) তরিকুল ইসলাম এর সাথে কথা বলে জানা যায় একেবারেই ভিন্ন চিত্র। পরিচালক, ক্রীড়া পরিদপ্তর তরিকুল ইসলাম বলেন, আজ ৭ অক্টোবর ২০২৪ পর্যন্ত চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে ৩ মাস ৭ দিন আজ পার হলো, আজ পর্যন্ত ক্রীড়া পরিদপ্তরের বিভিন্ন কোডে প্রাপ্ত সরকারি বরাদ্দ থেকে ১ টাকা নয়, ১ পয়সাও উত্তোলন করিনি – এরপরও আমাকে দুর্নীতিবাজ বলা হবে ? এটা এদেশের চাকরির ইতিহাসে বিরল রেকর্ড এবং আমি নিশ্চিত করছি আমিই একমাত্র অফিসার, যে এই নজির সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি । অর্থ বছরের ১ম কোয়ার্টার শেষ হয়েছে, হিসাব মতে ক্রীড়া পরিদপ্তরের মোট বরাদ্দের এক চতুর্থাংশ অর্থাৎ সাড়ে ৪ কোটি টাকার একটু বেশি উত্তোলন করার কথা। কিন্তু সেখানে ১ পয়সাও উত্তোলন করিনি, এখনো সকল কোড আনটাচড– এই কারণে ফেরদৌউস আলম, সহকারী পরিচালক (প্রশাসন), আলীমুজ্জামান, সহকারী পরিচালক (সংগঠন) ও আজিম হোসেন, সহকারী পরিচালক এর গায়ে আগুন ধরেছে।
আবার সরকারি অর্থ বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসুচী প্রশিক্ষণ বাস্তবায়নের জন্য সরকারি বরাদ্দ এখনো জেলা ক্রীড়া অফিসারদের অনুকূলে প্রদান না করাই, যারা একেবারেই পুরাটা আত্নসাৎ করেন তারাই আন্দোলন করছে। পরিচালক, ক্রীড়া পরিদপ্তর তরিকুল ইসলাম আরও বলেন, বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসুচী বাস্তবায়নের নামে অধিকাংশই সরকারি বরাদ্দ পুরাটাই আত্মসাৎ করেছেন,তৃণমূল পর্যায়ে ক্রীড়ার দ্রুত সম্প্রসারণে এবং ক্রীড়ার মানন্নোয়নে ১ টাকাও ব্যয় করা হচ্ছে না — এই একমাত্র কারণে ক্রীড়া পরিদপ্তরের ৪৮ বছরের ইতিহাসে আউটপুট জিরো /শূন্য, এই বিষয় টা বিস্তারিত রিপোর্ট প্রমাণ সহ সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এখন আমার কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত দিবেন সেই মোতাবেক কাজ করা হবে। বরাদ্দ প্রদান সংক্রান্ত বিষয়ে আমার কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত। তিনি বলেন, সরকারি অর্থ ব্যয়ের দৃশ্যমান পরিবর্তন থাকতে হবে, এছাড়া বরাদ্দ প্রদান করা হবে না।
তিনি আরও বলেন, মাত্র ৩ মাস আগে ৯ জুলাই ২০২৪ তারিখে ক্রীড়া পরিদপ্তরের ইতিহাসে প্রথম আমি সাড়ে ৭ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিয়েছি, এই টাকা ফেরত দেওয়াও আন্দোলনের অন্যতম প্রধান উৎস। উল্লেখ্য, ক্রীড়া পরিদপ্তর থেকে পূর্বে কখনো টাকা ফেরত যায়নি। যে লোক এতো গুলো টাকা ফেরত দিয়েছে আবার অর্থ বছরের ৩ মাস পার হওয়ার পরও ১ পয়সাও উত্তোলন করিনি – সংখ্যাগরিষ্ঠের জোরে তার বিরুদ্ধে অনেক কিছু অভিযোগ করা যাবে কিন্তু প্রমাণ করা যাবে না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের তীব্রতা আরও বাড়ানো হবে এবং দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য ও অনিয়মের আখড়া খ্যাত ক্রীড়া পরিদপ্তরকে দুর্নীতিমুক্ত করেই ছাড়বো ইনশাআল্লাহ।
এবিষয়ে অধ্যক্ষ, সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজ, ময়মনসিংহ মো : মোমিনুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ২০/২৫ বছর চাকরি জীবনে বহু পরিচালক মহোদয় কে পেয়েছি কিন্তু বর্তমান পরিচালক জনাব আ,ন,ম তরিকুল ইসলাম এর মতো এতো দক্ষ, এতো বেশি মেধাবী, আইন বিধি বিধান যেমন জানেন, তেমনই প্রতিপালন করেন, আবার কঠোর পরিশ্রমী, সৎ এবং খুব দ্রুততার সাথে সিদ্ধান্ত প্রদানে পারদর্শী — এরকম অফিসার পরিচালক হিসাবে ক্রীড়া পরিদপ্তরে কখনো পূর্বে আসেনি। মূলত: দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার ফলে গুটিকয়েক জন পরিচালক মহোদয়ের বিরুদ্ধে জঘন্য ঐ কাজটি করেছেন।
ক্রীড়া পরিদপ্তরের সবচেয়ে সিনিয়র গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ পিআরএল এর আবেদন কারী জনাব মো আবদুল মালেক,অধ্যক্ষ, সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজ, বাগেরহাট বলেন, আমার চাকরি শেষ, দীর্ঘ এই চাকরী জীবনে অনেক অফিসার কে পেয়েছি, আমি এক কথায় বলবো বর্তমান পরিচালক জনাব আ,ন,ম তরিকুল ইসলাম জ্ঞানে, মেধায়, দক্ষতায় অনন্য এবং অতুলনীয়। তিনি বলেন,
চাকরি জীবনে বহু পরিচালক কে পেয়েছি কিন্তু বর্তমান পরিচালক আ,ন,ম তরিকুল ইসলাম একজন ব্যতিক্রমধর্মী অফিসার, এতো দক্ষ, মেধাবী, বিচক্ষণ অফিসার আমার চাকরি জীবনে দেখিনি। একইসাথে আমি নিশ্চিত করছি ক্রীড়া পরিদপ্তর কখনো এতো চৌকস কর্মকর্তা আগে পরিচালক হিসাবে পায়নি। তিনি বলেন, আমার থেকে সিনিয়র এখন কেউ নাই, আমি নিশ্চিত করছি জনাব তরিকুল ইসলাম, পরিচালক মহোদয় এর মতো পরিশ্রমী, সৎ, আন্তরিক ও অমায়িক আবার দুষ্টের সেভাবে দমন করা অফিসার আমি আগে দেখিনি। স্বার্থান্বেশি মহল তাদের স্বার্থসিদ্ধি করতে না পেরে তার বদলির জন্য আন্দোলন করছে। এই আন্দোলনের সাথে অধিকাংশই দ্বিমত পোষণ করছে। যেমন ৬ টি সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজে ১৫০ থেকে ২০০ জনের মতো শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছে, তার মধ্যে ৫/৬ জন ঐ আন্দোলনে উপস্থিত ছিলেন, তাও আবার ভয় ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে উপস্থিত হওয়ার জন্য । এতেই স্পষ্ট কারণ কি ? বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসুচি বাস্তবায়ন ও বরাদ্দ প্রদান নিয়ে মতবিরোধ চলছে বলে শুনেছি। দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের মাত্রা আরও বাড়িয়ে ক্রীড়া পরিদপ্তর কে দুর্নীতিমুক্ত করতে সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি। তিনি বলেন, দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য খ্যাত ক্রীড়া পরিদপ্তরের জন্য তাঁর মতো অফিসার খুব বেশি দরকার তাহলে কেবল ক্রীড়ার মানোন্নয়নে ক্রীড়া পরিদপ্তর ভুমিকা রাখতে পারবে।
সবশেষে তিনি বলেন, বর্তমান পরিচালক তরিকুল ইসলাম স্যার যদি দুর্নীতিবাজ হতেন তাহলে ৯ মাসে সাড়ে ৭ কোটি টাকা ফেরত দিতেন কি? এটা তো পাগলেও বুঝে, সব অভিযোগ এরকম ভুয়া। আবার চলতি অর্থ বছরে ৩ মাস পার হলেও তিনি এখনো ১ টাকাও উত্তোলন করেননি — এটা থেকে একদম পরিষ্কার যে সকল অভিযোগ ভুয়া এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত।