কেএম রেজাউল করিম: যুগ যুগ ধরে প্রবহমান খালটির তলদেশে পলিমাটি ভরাট হয়ে চরাঞ্চলের সৃষ্টি এবং স্থানীয় অবৈধ দখলদারদের দখল প্রবণতায় নাব্যতা হারিয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছিলো ইছামতি নদীর সাথে সংযুক্ত সাপমারা খাল। ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা প্রায় পুরোপুরি বন্ধ হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছিলো। তাছাড়া খালের পানি প্রবাহের স্বাভাবিক ধারা মুখ থুবড়ে পড়ায় ডোবা নালার মতো জমাট বাধা হাটু পানিতে ময়লা আবর্জণা পচে তীব্র দুর্গন্ধে দুষিত হয়ে উঠেছিলো এলাকার পরিবেশ। জলাবদ্ধতা নিরসন সহ উদ্ভুত সমস্যা সমাধান এবং পুনরায় সাপমারা খালটির নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে দেবহাটার ভাতশালা এলাকার ইছামতি নদীর সংযোগস্থল থেলে শুরু করে খালটির ১৯ কিলোমিটার বিস্তৃর্ন এলাকা নদী খনন পর্যায়ে খননের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে দুটি প্যাকেজে ১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। সরকারী বরাদ্দ অনুযায়ী টেন্ডারের মাধ্যমে চলতি অর্থ বছরের মাঝামাঝিতে খনন কার্যক্রম শুরু করে দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সার্বিক তত্বাবধানে বেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে খনন কাজটি। কিন্তু চলমান খনন কাজে প্রতিবন্ধকতা হয়ে ওঠে খালপাড় দখল করে থাকা অবৈধ স্থাপনা। ফলে প্রতিবন্ধকতা দুরীকরণে সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযান চালিয়ে অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে জেলা প্রশাসন।
খালের দুপাড়ের অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা সরিয়ে নিতে নোটিশ ও মাইকিং করা হয়। কিন্তু অনেকেই তাদের স্থাপনা সরিয়ে নিলেও প্রভাবশালী চক্রের সদস্যরা তোয়াক্কা না করে তাদের কাজ চলামান রেখেছিল। এরই প্রেক্ষিতে পুন:রায় আবারো সরিয়ে নেওয়ার ঘোষনা দেওয়া হয়। এতে কোন কর্ণপাত করেনি প্রভাশালীরা। সরকারি নিয়ম অনুসারে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) এক যোগে সারাদেশে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামালের নির্দেশ ক্রমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে যৌর্থ অভিযান পরিচালনা করেন এনডিসি দেওয়ান আকরামুল হক। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের, পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদুজ্জামান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান, কার্যসহকারী শেখ নুরুল্লাহ ও জাহাঙ্গীর হোসেন।