শুধু ভালো ফলাফল নয়, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বিপিএম-বার, পিপিএম।
আজ শনিবার সকালে রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি ও উচ্চশিক্ষা সহায়ক বৃত্তি-২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।
“সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ হতে হবে” বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই বাণী ধারণ করে ডিএমপি পরিবারের মেধাবী সন্তানদের অনুপ্রেরণা জোগাতে এসএসসি, এইচএসসিত পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ও সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল, বুয়েট, কুয়েট, চুয়েট, রুয়েটসহ বিভিন্ন পাবলিক ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ৯৩৩ জনকে ১ কোটি ১৩ লক্ষ ৫২ হাজার শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ২০১৭ সাল থেকে এই মেধাবৃত্তি ও উচ্চশিক্ষা সহায়ক বৃত্তি প্রদান করে আসছে।
অনুষ্ঠানে মেধাবী শিক্ষার্থী ও গর্বিত পিতা-মাতাকে অভিনন্দন জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এই পূণ্যভূমি রাজারবাগ থেকেই থ্রি নট থ্রি রাইফেল নিয়ে দেশমাতৃকার টানে আত্মত্যাগ করেছেন আমাদের পূর্বসূরিগণ। তোমরা সেই দেশপ্রেমিকের সন্তান। শুধু ভালো রেজাল্ট করলে হবে না, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সাইবার বা ভার্চুয়াল জগৎ হলো বড় ফাঁদ। এই ফাঁদে কেউ যদি একবার ফেঁসে যায় তাহলে তার জীবটাই শেষ হয়ে যাবে। জঙ্গি ও মাদকচক্র এ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে তরুণপ্রজন্মকে টার্গেট করছে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সকলকে সর্তক থাকতে হবে।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সন্তান জিপিএ-৫ পেয়েছে, ভালো জায়গায় স্থান পেয়েছে এজন্য আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। আপনার সন্তান কোথায় যায়, কার সাথে মেশে সব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। এ সময়টা অত্যন্ত পিচ্ছিল। তাদের স্বপ্নপূরণের জন্য এ পথ চলার হাতটা আরো শক্ত করে ধরতে হবে। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নাগরিক সেবা প্রদান করার পরও ডিএমপি পরিবারের সন্তানরা এতো ভালো রেজাল্ট করায় তিনি সন্তানের মায়েদেরকে ধন্যবাদ জানান।
পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধনের গুরুত্ব উল্লেখ করে কমিশনার বলেন, শত ব্যবস্তার মাঝেও সন্তানকে সময় দিতে হবে। তাদের সাথে খেলতে হবে, ঘুরতে যেতে হবে। আর বৃদ্ধ বয়সে পিতা-মাতার প্রতি খেয়াল রাখার জন্যও সন্তানদের অনুরোধ করেন তিনি।
যারা আশানুরূপ রেজাল্ট করতে পারেনি বা ভালো জায়গায় স্থান করতে পারেনি তাদেরকেও ভেঙে না পড়ে সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত মেধাকে যথোপোযুক্ত ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রীর ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমাণে কর্ণধার হিসেবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। এছাড়া তিনি শিক্ষার্থীদের ভার্চুয়াল জগতে কম থেকে ক্লাসের বাইরেও বেশি বেশি বই পড়ার গুরুত্বারোপ করেন।
শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানের সভাপতি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার বিপিএম-বার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, একটি পরিবার, সমাজ, দেশ গড়তে দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন। তোমরাই হবে সেই দক্ষ জনশক্তি। এ অনুপ্রেরণা তোমাদেরকে ভবিষ্যতে আরো উদ্দীপ্ত করে চলার পথকে আরো সুগম করবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থী ও গর্বিত পিতা-মাতার কয়েকজন তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খঃ মহিদ উদ্দিন বিপিএম-বার; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স এন্ড প্রকিউরমেন্ট) মহাঃ আশরাফুজ্জামান বিপিএম; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মোঃ আসাদুজ্জামান, বিপিএম (বার); অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ মুনিবুর রহমান; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম-বার, পিপিএম-বার; যুগ্ম-পুলিশ কমিশনারগণ, উপ-পুলিশ কমিশনারসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাবৃন্দ ও বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকগণ ও সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।