একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লেও ছাত্রজীবনে আমাদের পরিচয় হয়নি, চাকুরীতে যোগদানসূত্রেই তাঁর সাথে পরিচয়। একই ব্যাচে অনেকেই যোগদান করলেও সবার সাথে একই রকম সম্পর্ক গড়ে উঠে না। চাকুরীর শুরুতে কঠোর প্রশিক্ষণের খরার দিনগুলোতেও আমরা পরস্পর পরস্পরের ছায়া হিসেবে পাশাপাশি থেকেছি, দীর্ঘ পঁচিশ বছরেও আমরা পেশাগত সুখ-দুঃখও ভাগাভাগি করেছি। পেশাগত জীবনের গন্ডি পেরিয়ে পারিবারিক বন্ধুত্বও প্রায় শুরু থেকেই। বৈশ্বিক মহামারীর শুরু থেকেই ভদ্রলোকটি কিতাবী পুলিশিং এর সীমানা পেরিয়ে মানবিক দায়িত্ব পালনে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। করোনার এই নিদানকালে স্বামী স্ত্রীকে, স্ত্রী স্বামীকে, সন্তান মা-বাবাকে, ভাই বোন কিংবা বোন ভাইকে ফেলে পালাচ্ছে। অথচ তিনি তাঁর অধীনস্থ সহকর্মীদের নিয়ে আর্ত মানবতার সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। পরশু গভীর রাতে ফোন করে জানলাম ঐ দিনই নমুনা দিয়েছেন, মুখে ভরসার কথা শুনালেও একটা আশঙ্কা কাজ করছিল। কাল মেসেজ পেয়ে জানলাম যে করোনা পজিটিভ। একটা লাইভ প্রোগ্রামে সংযুক্ত থাকায় কথা হয়নি, তবে চ্যাটিংয়ে স্বভাবসূলভ রসিকতায় জানালেন, “Moral is high…”. হ্যাঁ, আমি সিএমপি কমিশনার মাহবুবুর রহমানের কথাই বলছি। বয়সে কিঞ্চিত বড় এবং এ্যাকাডেমিক্যালি অল্প একটু সিনিয়র হওয়ায় আমি তাঁকে Boss বলি।
“পরিচিত-অপরিচিত বহু মানুষের আন্তরিক ভালোবাসা ও শুভ কামনা আছে আপনার জন্য। দ্রুত সুস্থ হয়ে আবারও মানুষের সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়ুন, Boss!”

(পুনশ্চঃ চলতি বছরের পুলিশ সপ্তাহে মাহবুবের মোবাইলে তোলা ছবিটা গত সপ্তাহেই আমাকে WhatsApp পাঠিয়েছে!)

লেখক : মোঃ মনিরুল ইসলাম, সিটিটিসি প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন