নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত চাঁদমারী বস্তি অবশেষে উচ্ছেদ করেছে জেলা পুলিশ। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাশে অবস্থিত বস্তিটি শহরের অন্যতম বৃহৎ মাদকস্পট হিসেবে পরিচিত ছিলো। বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম পিপিএম-বার এঁর নেতৃত্বে ভেকু দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। দুপুর ১২টায় ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন এসপি।

এর আগে ৯ মে নারায়ণগঞ্জে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় চাঁনমারী বস্তি উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জেলা প্রশাসনের দেয়া আলটিমেটামের মধ্যেই মঙ্গলবার থেকে অনেকে স্বইচ্ছায় নিজেদের ঘর সরিয়ে নেয়। গতকাল বাতকী ঘরগুলোও ভেকু দিয়ে ভেঙ্গে দেয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৫ শতাধিক ঘর ছিলো এই চানমারী বস্তিতে। এখানে শীষ দিয়ে মাদক বিক্রি প্রচলিত ছিলো। প্রশাসনের নাকের ডগায় এ বস্তিতে কয়েক যুগ ধরেই মাদক ব্যবসা চলছিলো। প্রায়ই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর অভিযানও হতো। তবে শত প্রচেষ্টার পরও রহস্যজনক কারণে বন্ধ হয়নি বস্তিকে ঘিরে মাদক ব্যবসা।

অবশেষে প্রশাসনের জোরালো পদক্ষেপে বস্তি উচ্ছেদ হওয়ায় মাদকের অন্যতম ‘বড় আখড়া’ চানমারী বস্তি উচ্ছেদ হওয়ায় আশপাশের লোকজন স্বস্থি প্রকাশ করেছে।

এদিকে, বস্তি উচ্ছেদকালে প্রেস ব্রিফিং এ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, নারায়নগঞ্জে চানমারি বস্তিটি একটি অনেক পুরোন একটি বস্তি। যার পাশে অবস্থিত পুলিশ সুপারের কার্যলয়, জেলা প্রশাসকের কার্যলয়, জেলা দায়রা জজ কার্যলয়সহ অনেক গুলো গুরুত্বপূর্ণ কার্যলয়। ইতিপূর্বে আমরা দেখেছি এই বস্তিতে মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েকবার সংঘর্ষ হয়েছে। এছাড়া যতবারই এই বস্তি উচ্ছেস হয়েছে ততবারই কোনো না কোনো অপৃতিকর ঘটনা ঘটেছে।

তিনি বলেন, আমি যোগদানের পর থেকেই নারায়ণগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি, এই বস্তি থেকে মাদক নির্মূল করা বা এই বস্তির অপসারণ করা। এটি সম্পূর্ণভাবে সরকারি জমিতে একটি অবৈধ স্থাপনা। এই স্থাপনাটি উচ্ছেদের জন্য আমরা জেলা পুলিশ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহন করি, এবং সকল শ্রেনী পেশার বিশেষ করে যারা মিডিয়ায় কাজ করছেন। তারা এই বস্তি অপসারণের জন্য সহোযোগীতা করছেন। সেই সুবাদে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ কর্তৃক গত তিনদিন এই উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন এবং আজকে বস্তিতে শতভাগ উচ্ছেদ করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার বলেন, অনেকেই বলেছেন, এই ধরণের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার পর সেটি পুণঃরা্য় চালু হয়ে যার। কিন্তু আমরা রোডস এন হাইওয়েকে বলেছি, তারা এটি উচ্ছেদ করবে। আশা করি এর পরে আর এই স্থাপনা হবে না।

মাদকের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, চানমারির এই বস্তিতে এখনে বেশ কয়েকটি ঘরে মাদকের আস্তানা ছিলো, আমরা বেশ কয়েকবার অভিযান করেছি। কয়েকজনকে আটকও করেছি, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছেন এবং তাদের বিজ্ঞ আদালতে সোর্পদ করেছি। আমরা চেষ্টা করছি, আর যাতে কোনো অপৃতিকর ঘটনা না ঘটে। এখানে মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বিভিন্নভাবে নিহত হয়েছেন, যারা জীবিত আছেন তাদের বিরুদ্ধে ডজনের উপরে মামলা আছে, আমরা হুশিয়ারি দিয়েছি তাদের আইনের আওতায় আনবো এবং সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবো।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন