নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা রুখতে এবং তাদের দ্রুত সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) ও হটলাইন উদ্বোধন করলেন ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম-বার।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) বেলা ১২টায় রাজধানীর তেজগাঁও থানা কম্পাউন্ডে অবস্থিত উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের অধীনে এই টিমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি। এসময় কুইক রেসপন্স টিমের জন্য একটি গাড়ি ও হটলাইন ০১৩২০০৪২০৫৫ নম্বরসহ মোবাইল ফোন হস্তান্তর করেন ডিএমপি কমিশনার।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক অপরাধগুলো যেমন ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা সরাসরি প্রতিরোধ করার উপায় একটু কঠিন। এজন্য কুইক রেসপন্স টিম গঠন ও হটলাইন চালু করা হয়েছে। নারীরা রাস্তায় বা অন্য কোথাও অনিরাপদ বোধ করলে বা বিপদে পড়লে এই টিমের হটলাইনে যোগাযোগ করে তাৎক্ষণিক সাহায্য নিতে পারবেন। নারীদের অসুবিধা শুনতে ও সামাজিক নির্যাতন প্রতিরোধ করতে একটি বিশেষ টিমের প্রয়োজন অনুধাবন করে কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। বিপদাপন্ন নারীকে সহায়তা দিতে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে কুইক রেসপন্স টিম অপরাধ প্রতিরোধ করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
পুলিশ সদস্যদের মানবিক হওয়ার শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে কমিশনার বলেন, থানায় ভিকটিম আসলে কিভাবে মানবিক সহায়তা দিতে হবে তা শেখানো হচ্ছে। প্রতিটি থানায় নারী ও শিশু সহায়তা ডেস্ক রাখা হয়েছে যেখানে নারী কর্মকর্তাদের পদায়িত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে স্বীকার করতে দ্বিধা নেই আমাদের নারী কর্মকর্তার সংখ্যা এখনো পর্যাপ্ত নয়।
অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ভিকটিম ও অপরাধী আমাদের সন্তান। পরিবার থেকে তাদেরকে সুশিক্ষা দিয়ে এই সমস্যা সমাধান করা যায়। আসুন আমরা সন্তানকে মানুষ বানাই, ধর্ষক না। আমার সন্তানকে ধর্ষক হওয়া থেকে বিরত রাখতে পারলে অন্যের সন্তান নিরাপদ থাকবে।
এর আগে উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার হামিদা পারভীন পিপিএম তার স্বাগত বক্তব্যে অত্র বিভাগের সাফল্য চিত্র তুলে ধরে বলেন, প্রতিষ্ঠাকাল থেকে উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ প্রায় ৩,৫০০ নারী ও শিশু নির্যাতন সংক্রান্ত মামলা তদন্ত করেছে। যার মধ্যে প্রায় ৩,৩০০ মামলার তদন্ত নিষ্পত্তি করা হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ হাজার ভিকটিমকে সেবা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রায় ২ হাজার শিশুকে এনজিও সংস্থার সহায়তায় স্থায়ী পূনর্বাসন করা হয়েছে। প্রায় আড়াই হাজার নিখোঁজ শিশুকে তার অভিভাবকের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এই বিভাগ থেকে ভিকটিমকে কাউন্সেলিং, সহায়তা, আইনী পরামর্শ, পূনর্বাসন, অভিভাবকের নিকট হস্তান্তরসহ নানাবিধ কাজ করা হচ্ছে।
এসময় ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, জাতীয় মানববাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।