ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে যশোরের শার্শার নাভারণে সম্পতি সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারানো মেধাবী স্কুলছাত্রী মিফতাহুল জান্নাত নিপা। সর্বশেষ গত ৯ এপ্রিল যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিপার ডান হাত ও বাম পায়ের গোড়ালির সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে।
হাসপাতালের অর্থোসার্জারি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. গোলাম ফারুক জানিয়েছেন, নিপার বর্তমান অবস্থা উন্নতির দিকে। তার ক্ষতগুলো শুকাতে শুরু করেছে এবং ডান হাত ও বাম পায়ের সফল অপারেশন হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আগের মতো কৃত্রিম পা দিয়ে চলাফেরা করতে পারবে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, নিপার যাবতীয় খরচ হাসপাতাল ও জেলা প্রশাসক বহন করছেন। এ বাদেও রোগীর স্বজনদের কাছে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন সহযোগিতা করেছে, যা নিপার ওষুধের জন্য খরচ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, নিপার কৃত্রিম পা লাগানোর জন্য বিদেশে নেয়ার প্রস্তুতি চলছে। এর যাবতীয় খরচ জেলা প্রশাসক ও কিছু টাকা স্বজনরা বহন করবেন। ইতোমধ্যে মেয়ে ও তার বাবা-মায়ের পাসপোর্ট করতে দেয়া হয়েছে। পাসপোর্ট হাতে পেলে এবং নিপা আরেকটু সুস্থ হয়ে উঠলে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হবে। তখন পরিবারের সদস্যরা তাকে বিদেশে নিয়ে উন্নতমানের কৃত্রিম পা তার ডান পায়ের হাঁটুতে সংযোজন করতে পারবে। এরপর কৃত্রিম পা নিয়ে নিপা আবার জীবনযুদ্ধে নামতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করছি।
উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ স্কুলে যাওয়ার পথে বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি পিকআপের চাপায় গুরুতর আহত হয় নিপা। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসকরা তার ডান পা রক্ষা করতে না পেরে কেটে ফেলতে বাধ্য হন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর নিপার উন্নত চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসেন জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়ালসহ বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক ব্যক্তি।
নিপা শার্শার দক্ষিণ বুরুজবাগান গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও মাতা মুসলিমা বেগমের একমাত্র মেয়ে। বুরুজবাগান পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির মেধাবী বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্রী।
নিপার বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, তার মেয়ে এখন আগের তুলনায় অনেক ভালো। এখন সে উঠতে পারে। ডান হাত ও বাম পায়ের সফল অপারেশন এখানেই করেছেন চিকিৎসকরা। এখন কৃত্রিম ডান পা লাগানোর কথা ভাবা হচ্ছে। এজন্য জেলা প্রশাসক সহযোগিতা করছেন। পাসপোর্ট হাতে পেলে বিদেশে নিয়ে উন্নত প্রক্রিয়ায় নিপার কৃত্রিম পা সংযোজন করা হবে। এতে যা খরচ হবে সেই টাকাও জেলা প্রশাসন থেকে দেয়া হবে।