♦♦♦♦♦
বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে আইন-শৃখলা পরিস্থিতির অবনতি বা অরাজকতা সৃষ্টির কোন সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না। নির্বাচনকে সামনে রেখে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার রোধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আইজিপি আশা প্রকাশ করে বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানে সক্ষম হব।
আইজিপি আজ রবিবার দিনব্যাপী পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত অর্ধ-বার্ষিকী (জানুয়ারি-জুন ২০১৮) অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন। সভায় সকল পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, পুলিশ সুপার, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আইজিপি ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া তথ্য প্রচার করে অথবা গুজব ছড়িয়ে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যাতে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে সে ব্যাপারে তৎপর ও সজাগ থাকার জন্য পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দিয়েছেন ।
পুলিশ প্রধান বলেন, পুলিশের পেশাদারী অভিযানের ফলে বর্তমানে দেশে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তিনি বলেন, জঙ্গি তৎপরতার বিরুদ্ধে পুলিশের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
আইজিপি বলেন, ট্রাফিক শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের কোন ছাড় দেওয়া হবেনা । তিনি বলেন, কোন পুলিশ কর্মকর্তা/সদস্য ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করলে তাকেও ছাড় দেওয়া হবে না। তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আসন্ন আশুরা এবং দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে উদযাপনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলার পুলিশ সুপারদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
সভায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান গত ৬ মাসের (জানুয়ারি-জুন ২০১৮) সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেন। সভায় অপহরণ, খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, এসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ, নারী ও শিশু নির্যাতন, মাদকদ্রব্য, চোরাচালান দ্রব্য, অস্ত্র ও বিষ্ফোরক উদ্ধার, সড়ক দুর্ঘটনা, গাড়ি চুরি, রাজনৈতিক সহিংসতা, অপমৃত্যু, পুলিশ আক্রান্ত মামলাসহ দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, আলোচ্য সময়ে সারাদেশে ১,১৪,১২৪টি মামলা রুজু হয়েছে। আলোচ্য সময়ে সারাদেশে মাদক দ্রব্য এবং চোরাচালান দ্রব্য উদ্ধারের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্বের একই সময়ের (জানুয়ারি-জুন ২০১৭) তুলনায় মামলার সংখ্যা বেড়েছে। আলোচ্য সময়ে ডাকাতি, দস্যুতা, দ্রুত বিচার, দাঙ্গা, নারী ও শিশু নির্যাতন, অপহরণ, সিঁধেল চুরি, চুরি, সড়ক দুর্ঘটনা মামলা সংখ্যা কমেছে। আলোচ্য অর্ধ-বার্ষিকীতে গাড়ি চুরির মামলা হয়েছে ৭১৪টি। এর মধ্যে পুলিশ ৫৭৩টি গাড়ি উদ্ধার করেছে। আলোচ্য সময়ে মাদক দ্রব্য আইনে মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সারা দেশে মাদক দ্রব্য উদ্ধার জনিত কারনে মামলা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সভায় অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মোঃ মোখলেসুর রহমান, সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপি শেখ হিমায়েত হোসেন, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী, সারদা, রাজশাহীর প্রিন্সিপ্যাল মোহাম্মদ নাজিবুর রহমান, শিল্পাঞ্চল পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ আবদুস সালাম, এপিবিএন এর অতিরিক্ত আইজিপি সিদ্দিকুর রহমান, রেলওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আবুল কাশেম, ডিএমপির পুলিশ কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া, এসবির অতিরিক্ত আইজিপি মীর শহীদুল ইসলাম এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রঃ ডিএমপি নিউজ।