রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ জাতীয় স্বার্থে সমুদ্রসীমার সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অধিকতর দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে নৌবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে এবং জেটি, যুদ্ধজাহাজ ও সমরাস্ত্র ব্যবহার করে আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব নির্বেঘ্নে ও সফলতার সাথে পালন করুন। রাষ্ট্রপতি আজ বিএনএস তিতুমীর ঘাঁটিকে ন্যাশনাল স্টান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা) প্রদান উপলক্ষে এই ঘাঁটির প্যারেড মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষণে এ আহ্বান জানান। তিনি দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ব্লু-ইকোনমির সুসম্ভাবনা নিশ্চিত করতে নৌবাহিনী সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন যে, পরবর্তী প্রজন্মের নৌবাহিনী সদস্যরা দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্ম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখবে। সমুদ্রে নৌবাহিনীর দুঃসাহসিক কাজের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনাদের মূল কর্মক্ষেত্র উত্তাল সাগরে কঠোর পরিশ্রম ও দায়িত্বশীলতার মাধ্যমে আপনারা উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীসমূহের প্রধান (কমান্ডার-ইন-চিফ) আবদুল হামিদ বিশ্বব্যাপী দেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে তাদের সর্বাত্মক প্রয়াস অব্যাহত রাখতে নৌবাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।তিনি বলেন, বাংলাদেশের রয়েছে ৭১০ কিলোমিটার উপকূলবর্তী অঞ্চল। এই বিশাল এলাকার প্রায় ৩ কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমুদ্র সম্পদের উপর নির্ভরশীল।

এছাড়া বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্যের ৯০ শতাংশ এই সমুদ্র পথে সম্পন্ন হয়। রাষ্ট্রপতি ইতোমধ্যে সামুদ্রিক জলসীমায় টহল ও নজরদারি বাড়াতে সরকার আরো দু’টি সামুদ্রিক পেট্রোল বিমান কিনছে বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘অবকাঠামো উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বিমান চলাচল সুবিধাসহ পটুয়াখালীর দেশের বৃহত্তম শেরেবাংলা বিমানঘাঁটির নির্মাণ কাজ চলছে।’রাষ্ট্রপতি বলেন, বর্তমান সরকার প্রশিক্ষণ প্রদান ও দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে অধিক গুরুত্বারোপ করেছে। বক্তব্যের শুরুতে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবনদানকারী মুক্তিযোদ্ধা, বিশেষ করে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনসহ নৌবাহিনীর শহীদ সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিএনএস তিতুমীর ঘাঁটিকে ন্যাশনাল স্টান্ডার্ড সার্টিফিকেট (জাতীয় পতাকা) হস্তান্তর করেন।বিএনএস তিতুমীর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি নৌঘাঁটি। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৩১ সালে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে শহীদ সৈয়দ মীর নিছার আলী তিতুমীরের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়। তিতুমীর মূলত সরবরাহ শাখার কর্মকর্তা ও নাবিকদের কর্মজীবনে বিভিন্ন স্তরে পেশাগত প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অন্যতম বৃহত্তম এই তিতুমীর ঘাঁটিতে প্রায় ২৫০০ সদস্য কর্মরত রয়েছে।

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বন ও পরিবেশ উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার (এমপি), নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী, শেখ সালাহউদ্দীন জুয়েল (এমপি), বিভাগীয় কমিশনার মো.লোকমান হোসেন মিয়া, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ডঃ খঃ মহিদ উদ্দিন,কেএমপি কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির,খুলনা জেলা প্রশাসক হেলাল হোসেন,পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ বিপিএম সহ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন