♣♣♣♣
সকাল সাতটা বাজতেই রাজধানীতে জাতীয় ঈদগাহমূখী মুসল্লিদের ঢল নামে। লাখো মুসল্লি যখন ঈদের জামাতে অংশ নিতে ব্যস্ত তখন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্ব পালন করছিলেন বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
নানা সমালোচনার মধ্যেও পুলিশের সেবাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। বাহিনীটির ২৪ ঘণ্টার সতর্ক চোখ আর চেষ্টাতেই স্বাভাবিক আর নিরাপদ জীবন সম্ভব। আর এ কারণে সাধারণের ঈদ পার্বণ আসে না পুলিশের জীবনে।
এই যেন হেলাল উদ্দিন। তিনি পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে কাজ করেন। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে সতর্ক দৃষ্টি রাখছিলেন যেন কোনো হাঙ্গামা না হয়, যেন কারও নিরাপত্তায় হুমকি না আসে।
সকাল সাত থেকে তার ডিউটি। ঈদের দিন বলে আয়েশ করে ঘুমানোও যায়নি। ভোরে ঘুম থেকে উঠে গোসল করে নিত্য দিনের পোশাক পরেই তৈরি হতে হয়েছে ঈদগাহে আসার জন্য।
তবে নামাজ পড়তে নয়। সবাই যখন ঈদের নামাজ পড়ছেন তিনি তখন অস্ত্র হাতে পাহারায় ছিলেন হেলাল উদ্দিন।
আর সবার মতোই তারও স্বজনের জন্য মায়া আছে, আছে কাছে যাওয়ার আকুতি, আছে একসঙ্গে বসে ভালোমন্দ খাওয়ার বাসনা।কিন্তু কি আর করা, পেশাটাই এমন যে এখানে আবেগের স্থান নেই।
ভাবছেন এক ঈদে বাড়ি গেছেন, আরেক ঈদে সুযোগ পাননি? ভুল। ঈদুল ফিতরের দিনটিও একইভাবে কেটেছে হেলালের।
সারা দেশে এ রকম গল্প প্রায় ৭১ হাজার পুলিশ সদস্যদেও যারা অন্যের ঈদ নির্বিঘ্ন করতে কাজ করে যাচ্ছেন। কেউ ঈদগাহে, কেউ সড়কে, কেউ পশুর হাটে, কেউ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায়, কেউ অপরাধী ধরতে কেউ বা অপরাধ ঠেকাতে দায়িত্ব পালন করছেন।
হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘পুলিশের চাকরি করি। আমাদের আবার ঈদ আছে নাকি? শহরের মানুষের নিরাপত্তা দেওয়াটাই আমাদের কাছে মুখ্য বিষয়। আর নিজের ও পরিবারের আনন্দটা গৌণ বিষয়। তখনই ভালো লাগে যখন আমাদের কাজে জনগণ সন্তুষ্ট হয়। তখনই নিজেকে স্বার্থক মনে হয়।’
বাংলাদেশ পুলিশের জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী মহাপরিদর্শক সোহেল বলেন, “পুলিশের চাকরি অনেকটাই ‘থ্যাংকলেস জবের’মতো। এটা মেনেই আমরা কার জরি। জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকলে এই পেশায় কাজ করা সম্ভব না। চাকরি জীবনের শুরুতে পারিবারিক পরিবেশের জন্য হয়ত মন খারাপ হয়, কিন্তু পরে ধীরে সয়ে যায় সব।”