ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেছেন, বাংলাদেশ পুলিশের পেশাগত উৎকর্ষতা দিন দিন বাড়ছে। পুলিশের প্রতি জনগণের প্রত্যাশাও বেড়েছে। সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাঙ্খিত সেবা পৌঁছে দিতে পুলিশ সদস্যদের সচেষ্ট থাকতে হবে। তিনি বলেন, থানা হবে জনগণের সেবা প্রাপ্তির ভরসাস্থল।
তিনি পুলিশ সপ্তাহ ২০২৩ এর তৃতীয় দিনে আজ (৫ জানুয়ারি ২০২৩) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে আইজি’জ ব্যাজ প্রদান করেন। তিনি শীল্ড প্যারেড, অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও চোরাচালান দ্রব্য উদ্ধার অভিযানে কৃতিত্ব অর্জনকারী ইউনিটকে পুরস্কার প্রদান করেন। অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) ও প্যারেড উপকমিটির সভাপতি মোঃ কামরুল আহসান বিপিএম (বার) ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
আইজিপি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের সাম্প্রতিক নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে গৃহীত পদক্ষেপ সর্বমহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। সততা ও স্বচ্ছতার এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
পুলিশ প্রধান বলেন, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে বাংলাদেশ পুলিশ কাজ করছে। মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান অবস্থান আরও দৃঢ় করতে হবে।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ পুলিশ বিশ্বে ‘রোল মডেল’ হিসেবে নিজেদের মর্যাদা স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে।
আইজিপি বলেন, পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ভাষণে উজ্জীবিত হয়ে প্রত্যেক পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুরস্কারপ্রাপ্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে আইজিপি বলেন, পুরস্কার সম্মান, গর্ব ও অহংকারের স্মারক। পুরস্কার ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা যোগায়। নিজেদের কর্মস্পৃহাকে শাণিত করে। তিনি বলেন, অপারেশনাল কার্যক্রমে পেশাদারত্বের সাথে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
আইজিপি বার্ষিক পুলিশ প্যারেডে দৃষ্টিনন্দন প্যারেড উপহার দেয়ায় সকলকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশ পুলিশে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এবার ৪৫৮ জন পুলিশ সদস্যকে “পুলিশ ফোর্স এক্সেমপ্লারি গুড সার্ভিস ব্যাজ-২০২২ (আইজি’জ ব্যাজ)” প্রদান করা হয়। আইজিপি তাদেরকে ব্যাজ পরিয়ে দেন।
গত ১ জানুয়ারি ২০২২ হতে ৩১ অক্টোবর ২০২২ তারিখ পর্যন্ত অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার অভিযানে ‘ক’ গ্রুপে প্রথম চট্টগ্রাম জেলা, দ্বিতীয় পাবনা জেলা এবং তৃতীয় হয়েছে কুমিল্লা জেলা। ‘খ’ গ্রুপে প্রথম কক্সবাজার জেলা, দ্বিতীয় নরসিংদী জেলা এবং তৃতীয় যশোর জেলা। ‘গ’ গ্রুপে প্রথম এপিবিএন, দ্বিতীয় রাজবাড়ী জেলা এবং তৃতীয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। ‘ঘ’ গ্রুপে প্রথম র্যাব-১৫, কক্সবাজার, দ্বিতীয় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এবং তৃতীয় র্যাব-৫, রাজশাহী। ‘ঙ’ গ্রুপে প্রথম ডিবি, ডিএমপি, যৌথভাবে দ্বিতীয় রমনা বিভাগ ও মিরপুর বিভাগ, ডিএমপি এবং তৃতীয় হয়েছে ওয়ারী বিভাগ, ডিএমপি।
২০২২ সালে মাদকদ্রব্য ও চোরাচালান মালামাল উদ্ধার অভিযানে পুরস্কারপ্রাপ্ত ইউনিটে মধ্যে মাদকদ্রব্য উদ্ধারে ‘ক’ গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন করেছে কুমিল্লা, দ্বিতীয় চট্টগ্রাম এবং তৃতীয় সিএমপি। ‘খ’ গ্রুপে প্রথম ব্রাহ্মণবাড়িয়া, দ্বিতীয় কক্সবাজার এবং তৃতীয় রাজশাহী। ‘গ’ গ্রুপে প্রথম লালমনিরহাট, দ্বিতীয় জয়পুরহাট এবং তৃতীয় গাজীপুর। ‘ঘ’ গ্রুপে প্রথম র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ, দ্বিতীয় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এবং তৃতীয় র্যাব-১৫, কক্সবাজার। ‘ঙ’ গ্রুপে প্রথম ডিবি, ডিএমপি, দ্বিতীয় ওয়ারী বিভাগ, ডিএমপি এবং তৃতীয় মিরপুর বিভাগ, ডিএমপি। ‘চ’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে এপিবিএন, দ্বিতীয় রেলওয়ে পুলিশ এবং তৃতীয় হাইওয়ে পুলিশ।
চোরাচলন মালামাল উদ্ধার অভিযানে ‘ক’ গ্রুপে চট্টগ্রাম প্রথম, সিএমপি দ্বিতীয় এবং কুমিল্লা তৃতীয় হয়েছে। ‘খ’ গ্রুপে প্রথম যশোর, দ্বিতীয় নেত্রকোনা এবং তৃতীয় সাতক্ষীরা। ‘গ’ গ্রুপে প্রথম চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দ্বিতীয় মেহেরপুর এবং তৃতীয় পঞ্চগড়। ‘ঘ’ গ্রুপে র্যাব-৯, সিলেট প্রথম, র্যাব-৭, চট্টগ্রাম দ্বিতীয় এবং র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ তৃতীয়। ‘ঙ’ গ্রুপে মিরপুর বিভাগ, ডিএমপি প্রথম, ওয়ারী বিভাগ, ডিএমপি দ্বিতীয় এবং উত্তরা বিভাগ, ডিএমপি তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। ‘চ’ গ্রুপে এবিপিএন প্রথম, রেলওয়ে পুলিশ দ্বিতীয় এবং হাইওয়ে পুলিশ তৃতীয় হয়েছে।
শীল্ড প্যারেড প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে যৌথ মেট্রো দল । দ্বিতীয় হয়েছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে এপিবিএন ।
বার্ষিক পুলিশ প্যারেড কুচকাওয়াজে প্রথম স্থান অর্জন করেছে এপিবিএন। দ্বিতীয় হয়েছে যৌথ মেট্রো দল এবং তৃতীয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ।