প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে দেশের প্রথম বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের যাত্রা শুরু হল, যেখানে একসঙ্গে পাঁচ শতাধিক পোড়া রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার সুবিধা থাকছে। গতকাল বুধবার এ ইনস্টিটিউটের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে দেশ সেবার সুযোগ দিয়েছে বলেই এই চিকিৎসা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছে। আগামীতেও যদি নৌকায় ভোট দিয়ে সে সুযোগ দেন; তাহলে অবশ্যই আমরা আমাদের যে কাজগুলো শুরু করেছি, সেগুলো আমরা সম্পন্ন করতে পারব। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন চানখাঁনপুলে এলাকায় মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের পাশে ১২ তলা ‘শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট’ এ ৫০০ শয্যা, ৫০টি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) এবং ১২টি অপারেশন থিয়েটার থাকবে। ইনস্টিটিউটের তিনটি ব্লকে থাকবে বার্ন ইউনিট, প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট এবং অ্যাকাডেমিক ভবন। এই ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শেখ হাসিনা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, মারাত্মক দগ্ধ রোগীর আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা বাংলাদেশে ছিল না। অনেক সময় শ্বাসনালীও পুড়ে যায়, তেমন রোগীর চিকিৎসার ভালো ব্যবস্থাও আগে করা হয়নি। যারা অগ্নিদগ্ধ হয়, তাদের চিকিৎসা করার ভিন্ন পদ্ধতি থাকে। অনেক ধরনের যন্ত্রপাতি, বেড, সব কিছুই আলাদা লাগে। কোনো ব্যবস্থাই আমাদের করা হয়নি। যেখানে রেখে গিয়েছিলাম (২০০১ সালে), সে অবস্থাই ছিল। আর উন্নতি করা হয়নি। এই ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়কারী সামন্ত লাল সেনই যে এ ধরনের একটি চিকিৎসা ও শিক্ষাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছিলেন, সে কথাও প্রধানমন্ত্রী বলেন। ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায় ওই প্রকল্প। এসব বিষয় বিবেচনা করেই ২০১৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় প্লাস্টিক সার্জারি বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আন্তর্জাতিক মানের একটি বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট স্থাপনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সারা দেশের কয়েক লাখ পোড়া রোগীকে সেবা দিতে দেড় হাজার বিশেষজ্ঞ সার্জন তৈরির লক্ষ্য নিয়ে ২০১৬ সালের ৬ মার্চ এই ইনস্টিটিউটের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। এক দশমিক ৭৬ একর জমিতে এই ইনস্টিটিউট নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৫৩৪ কোটি টাকা। নির্মাণ কাজ পরিচালিত হয় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে।