বর্ষিয়ান সাংবাদিক অধ্যাপক আনিসুর রহিম আর নেই

দ্বারা Update Satkhira
০ মন্তব্য 297 দর্শন

 

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক, সাহসী কলম সৈনিক অধ্যাপক আনিসুর রহিম আর নেই। মঙ্গলবার দুপুরে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে বনের ভিতরেই হ্নদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেছেন। ইন্নালিল্লাহে —-রাজেউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। তিনি স্ত্রী, ২ ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন।

বুধবার বেলা ১১ টায় সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে আনিসুর রহিমের জানাজার নামাজ শেষে কামালনগর সরকারি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। এর আগে বুধবার সকাল ১০ টায় তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব চত্বরে মরদেহ রাখা হবে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ তারপ্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন।

মরহুম আনিসুর রহিমের ছোট ভাই ডা: আসিফ জানান, পারিবারিক টুরে তারা সুন্দরবনে বেড়াতে যায় মঙ্গলবার সকালে। ট্রলারযোগে বনের ভিতর যাওয়ার পর বেলা ১ টা ৭ মিনিটের দিকে হঠাৎ তিনি ট্রলারের উপর মাথাঘুরে পড়ে যান। এ সময় ট্রলারে থাকা তার স্ত্রী, ভাই,বোনসহ স্বজনেরা দ্রুত উদ্ধার করে শ্যামনগর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।

অধ্যাপক আনিসুর রহিম বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী ছিলেন। তিনি তুখুড় ছাত্রনেতা ছিলেন। সারা জীবন বামরাজনীতি করে গেছেন। একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্টান গড়ে গেছেন। সাতক্ষীরার যে কোন সামাজিক আন্দলনে তার সাহসী ভ’মিকা ছিল উল্লেখ করার মতো। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সাতক্ষীরার সর্বস্তরে শোকের ছায়া নেমে আসে।

অধ্যাপক আনিসুর রহিম সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে একাধিকবার সাধারন সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন। সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরীর সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন একাধিকবার। সাতক্ষীরা নাগরিক কমিটির আহবায়কসহ অসংখ্য সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের অন্যতম সংগঠক ছিলেন তিনি। অত্যন্ত সাহসী মানুষ ছিলেন। সাতক্ষীরা প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্টাতা, সাতক্ষীরার আসমানি শিশু নিকেতনের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপল ছিলেন তিনি।

জীবনে কখনো কারো সাথে আপোষ করেননি মানুষটি। অত্যন্ত শিশুবান্ধব, হাসিমুখো মানুষ ছিলেন। যা বলেছেন সাহসীকতার সাথে তার উপর দাঁড়িয়ে থেকেছেন। অধুনালিপ্ত দৈনিক সাতক্ষীরার চিত্র পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন তিনি।

সাতক্ষীরা বাঁকাল ইসলামপুরের ভূমিহীন আন্দোলন, ১৯৯৮ সালে দেবহাটা-কালিগঞ্জের ভূমিহীন আন্দোলনসহ যে কোন সামাকিজ আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন তিনি। আন্দোলন সংগ্রাম করতে যেয়ে তিনি অনেকবার গ্রেফতার হয়েছেন, কারাবরন করেছেন।

অধ্যাপক আনিসুর রহিম সাতক্ষীরা দিবা-নৈশ কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ছিলেন। কলেজে চাকুরিজীবন শেষ করার পর তারই হাতেগড়া প্রতিষ্ঠান সাতক্ষীরা প্রি-ক্যাডেট স্কুল পরিচালনা করতেন তিনি।

তার শরীরে পেসমেকার বসানো ছিল। পেসমেকারের নির্ধারিত মেয়াদও প্রায় শেষ। আগামী ৭ জানুয়ারি ঢাকার একটি হাসপাতালে তার শরীরে অপারেশনের মাধ্যমে নতুন পেসমেকার বসানোর কথা ছিল। কিন্তু আর সময় হলো না, তার আগেই তাকে চিরবিদায় নিতে হল।

এদিকে বর্ষিয়ান এই সাংবাদিকদের আকর্ষ্মিক মৃত্যুতে জেলাব্যাপী শোকের ছায়া নেমে এসেছে।তাঁর অকাল মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।আপডেট সাতক্ষীরা পরিবার তাঁর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছে।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন