সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম-বার বলেছেন, বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ার আগেই আপনার সন্তান কে চোখে চোখে রাখুন।গত বৃহম্পতিবার বিকালে সাতক্ষীরা ভোমরা সড়কে ১৬ জন মাদক সেবীদের ডোপস্টে মাদক পজিটিভ হওযায় তাদের নামে প্রচলিত আইনে মামলা রুজু করে জেল হাজতে পাঠানো হয়।বিষয়টি টক অফ দা টাইনে পরিনত হয়।

সেই ঘটনার আলোকে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম-বার তাঁর অফিসিয়াল ফেইলবুক আইডি Sp Satkhira District থেকে আজ রবিবার দুপুরে মাদক বিরোধী অভিযান ও ডোপটেস্টের মাধ্যমে মাদক সেবীদের আটকের বিষয় নিয়ে জেলা বাসীর উদ্যেশ্যে লাইভে এসে এক ব্রিফিং অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

ব্রিফিং অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার বলেন,আমাদের কাছে তথ্য আছে কিছু লোক প্রতিদিন সীমান্ত এলাকায় গিয়ে মাদক সেবন করে আবার শহরে ফিরে আসে এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত বৃহম্পতিবার বিকালে সাতক্ষীরা সদর সার্কেল ও সদর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাদক সেবী সন্দেহে ৩৮ জন কে আটক করে পরে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালে গিয়ে আটককৃৃতদের ডোপ টেস্ট করে ১৬ জন কে মাদক সেবী হিসাবে সনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয় আর বাকি ২২ জন কে ডোপটেস্টে নেগেটিভ হওয়ায় তাদের কে স্ব-সন্মানে ছেড়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ সুপার তাঁর ফেইজবুক লাইভ ব্রিফিংয়ে বলেন, সাতক্ষীরা জলার খুব ভালোভালো পরিবারের সন্তানেরা তাদের মা-বাবার চোখ ফাঁকি দিয়ে অসৎ সঙ্গ ও দুষ্টু বন্ধুরের সাথে মিশে মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়িয়েছে।

পুলিশ সুপার অবিভাবক দের উদ্যেশ্যে বলেন,আপনার সন্তান কোথায় যায়? কাদের সাথে মেশে,অপ্রয়োজনীয় কাজে গভীর রাত পর্যন্ত বাহিরে থাকছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করুন।

কারন,যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে পুলিশ  আপনার সন্তান কে আটক করে ডোপটেস্ট করে আইনের আওতায় আনতে পারে।তাই বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ার আগেই আপনার সন্তান কে সচেতন রাখুন নজদারীতে রাখুন।যাতে করে আপনার সন্তান/আপনার/ভাই বা আপনার নিকটতম আত্মীয় স্বজন যেনো মাদক সেবন থেকে দুরে থাকে।

পুলিশ সুপার বলেন, যে পরিবারে একজন ব্যক্তি মাদক সেবন করে সেই পরিবারের ভোগান্তীর কোনো শেষ নেই। তিনি বলেন,দেখবেন আপনার বাড়িতে টাকা চুরি হচ্ছে, অলংকার চুরি হচ্ছে বা জমিয়ে রাখা টাকা মিছিং হচ্ছে।

অবিভাবক দের উদ্যেশ্যে পুলিশ সুপার বলেন, যারা মাদক সেবন করে তারা দেখবেন অসময় ঘুমাবে,রাতে দেরি করে বাড়ি আসে,রাতে দেরি করে ঘুমায়,সকালে দেরি করে ঘুম থেকে উঠে।তিনি বলেন দেখবেন এক পর্যায়ে বাড়িতে টাকা শেষ হয়ে গেলে সে প্রতিবেশির জিনিসপত্র চুরি করতে থাকে।

পুলিশ সুপার বলেন,যখন সে মাদকে তীব্র আসক্ত হয়ে পড়ে তখন দেখবেন সে রাস্তায় চুরি-ডাকাতি ও ছিনতাই করে নেশার টাকা জোগাড় করার চেষ্টা করতে থাকে।অবিভাবক দের উদ্যেশ্যে পুলিশ সুপার বলেন,যখন দেখবেন আপনার সন্তান লেখা-পড়ায় অমনোযোগী, লেখা ধুলার প্রতি আগ্রহ কম, আপনার চোখের সামনে চোখ রেখে কথা বলতে পারবেনা, বাথরুমে গিয়ে অতিরিক্ত সময় ধরে গোসল করবে, যেকোনো বিষয়ে মিথ্যা বলে আপনাকে বোকা বানানোর চেষ্টা করবে, তখন বুঝে নেবেন আপনার সন্তান মাদক সেবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে।

পুলিশ সুপার তাঁর লাইভ ব্রিফিংয়ে বলেন, আমাদের আধুনিক প্রজন্মকে যদি রক্ষা করতে না পারি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে আমরা মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা করতে পারবো কি?মোটেও না। 

তিনি বলেন, যে সমস্ত অবিভাবকগণ এখনো মাদক সেবন করছেন তারা ফিরে আসুন এ পথ থেকে।

পুলিশ সুপার তাঁর ব্রিফিং অনুষ্ঠানে বলেন,এ অভিযান শুধু জনগনের জন্য নয় বরং আমার পুলিশের কোনো সদস্য যদি মাদকের সাথে সম্পৃক্ত থাকে তাহলে আমি কথা দিচ্ছি সে যেই হোক আর তার যে পরিচয়ই থাকুক, আমি তার বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ নিশ্চিত করবো।

নাগরিকদের উদ্যেশ্যে পুলিশ সুপার বলেন, আপনার এলাকার মাদক সেবী/মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকে সংশ্লিষ্ট এলাকার সার্কেল অফিস বা সংশ্লিষ্ট থানার ওসি কে জানান।আপনার পরিচয় গোপন রাখা হবে। তিনি সাতক্ষীরা জেলা কে মাদক মুক্ত জেলা হিসাবে গড়ে তুলতে সকলের সহযোগীতা কামনা করে ও সকলের মঙ্গল কামনা করে তাঁর লাইভ ব্রিফিংয়ের সমাপ্তি ঘটান। 





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন