পরিবার ও সমাজের নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে জীবনযুদ্ধে সফল এক জয়িতা নারী অষ্টমী মালো। সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত গ্রামের জন্ম নেওয়া প্রতিবন্ধী এ মানুষটির নামের পাশে শৈশব হতেই যুক্ত হয় ‘খোঁড়া’ শব্দটি। জীবনের চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আজ তিনি সমাজে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন, হয়েছেন স্বাবলম্বী। নিজে চাকুরি করে সন্তানের সুশিক্ষা নিশ্চিত করে চলেছেন। পিছিয়ে পড়া প্রতিবন্ধী নারীদের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘বেসরকারি জয়িতা প্রতিবন্ধী নারী উন্নয়ন সংস্থা।

আবার কৈশোরে পাচারের শিকার যশোরের আয়শা সিদ্দিকা কিংবা জীবন সংগ্রামে সফল নারী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সৈয়দা নাহিদ হাবিবার মতো খুলনা বিভাগের ৫০ জন জয়িতা নারীকে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের খুলনা কার্যালয় আজ (মঙ্গলবার) সকালে সম্মাননা জানায়। খুলনা বিভাগীয় প্রশাসন আয়োজিত অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে বিভাগীয় পর্যায়ের ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।

সিটি মেয়র বলেন, সকল বাঁধা অতিক্রম করে নারীরা আজ তাঁদের যোগ্য অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত। এগিয়ে যাওয়া নারীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছেন। কেবল সংরক্ষিত আসনে নয়, নারীরা এখন নির্বাচনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি হচ্ছেন। সকল ক্ষেত্রে তাঁদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, আগে নারীদের ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হতো না। এখন সরকার তৃণমূল থেকে নারীদের তুলে এনে বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত করছে।

খুলনার বিভাগীয় কমিশনার ড. মু: আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) সৈয়দ রবিউল আলম, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার হোসেন আলী খন্দোকার, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোঃ হাবিবুল হক খান এবং খুলনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোঃ ইকবাল হোসেন। স্বাগত জানান মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর খুলনা কার্যালয়ের উপপরিচালক নার্গিস ফাতেমা জামিন।

অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের সম্মাননা ক্রেস্ট, সনদ ও পুরস্কারের নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ পাঁচ জয়িতা হলেন- অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী ক্যাটাগরীতে খুলনার ফুলতলা উপজেলার জাহানারা বেগম, শিক্ষা ও চাকুরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী খুলনার ফুলতলা উপজেলার সৈয়দা নাহিদা হাবিব, সফল জননী ক্যাটাগরীতে বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার মমতাজ বেগম, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করা যশোরের মণিরামপুর উপজেলার মোছা: আয়শা সিদ্দিকা এবং সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় বাগেরহাট সদরের আম্বিয়া খাতুন ।

 





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন