বিনম্র শ্রদ্ধায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণ করছে যশোরবাসী।
বৃহস্পতিবার যশোর জেলা প্রশাসন,যশোর জেলা পুলিশ,   আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা আয়োজনে জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে।

সকালে শহরে শোক র‌্যালির পর বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। এছাড়া শহরের মোড়ে মোড়ে বাজানো হয় জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ। বিতরণ করা হয়েছে কাঙালিভোজ।

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ও সাধারণ সম্পাদক সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদারের নেতৃত্বে সকালে দলীয় কার্যালয় থেকে শোক র‌্যালি বের করেন নেতাকর্মীরা। র‌্যালিটি শহরের বকুলতলাস্থ বঙ্গবন্ধুর মুুরালে গিয়ে শেষ হয়। এসময় শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেন তারা। এরপর শাহীন চাকলাদার যশোর জেনারেল হাসপাতালের ভর্তি রোগীদের মধ্যে খাবার বিতরণ করেন। পরে তিনি শহরের বিভিন্ন এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের আয়োজনে কাঙালিভোজ বিতরণ অনুষ্টানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন।

এর আগে দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে যশোর কালেক্টরেট চত্বর থেকে বের করা হয় শোক র‌্যালি। র‌্যালিটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে গিয়ে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ সুপার জনাব মঈনুল হক , যশোর শিক্ষাবোর্ড, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, যশোর পৌরসভা, প্রেসক্লাব যশোর, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন, বিএফইউজে (একাংশ) জেলা যুবলীগ, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ, এস এম সুলতান ফাইন আর্ট কলেজ, জেলা যুবমহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

বেলা ১১টায় যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভার অয়োজন করে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শফিউল আরিফের সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ।

এসময় বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধকালীন বৃহত্তর যশোরের মুজিব বাহিনীর প্রধান আলী হোসেন মনি, উপ-প্রধান অ্যাডভোকেট রবিউল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা এএসএম রফিকুন্নবী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাউদ্দিন শিকদার প্রমুখ।

দিবসটি পালনের লক্ষে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া-মোনাজাত পূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন।
যবিপ্রবির ১৫ আগস্টের কর্মসূচি শুরু হয়, সূর্যোদয়ক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে। পরে সকাল সাড়ে নয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন যশোর শহরস্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। একে একে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনও জাতির পিতার ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। অনুরূপভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে যবিপ্রবি উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পুস্পস্তবক অর্পন করেন।

বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্টে নিহত সকল শহীদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া-মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। দোয়া-মোনাজাত পরিচালনা করেন বিশ্বাবদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. আকরামুল ইসলাম।

কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ আব্দুল মজিদ, ডিন অধ্যাপক ড. শেখ মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস, ড. মোঃ জাফিরুল ইসলাম, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মোঃ নাজমুল হাসান, শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. প্রকৌশলী মোঃ আমজাদ হোসেন, বীরপ্রতীক তারামন বিবি হলের প্রভোস্ট ড. শিরীন নিগার, রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোঃ আহসান হাবীব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোঃ আব্দুর রশীদ, কর্মচারী সমিতির সভাপতি সাজেদুর রহমান জুয়েলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, দপ্তর প্রধানগণ, শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া যশোর শিক্ষাবোর্ডে আলোচনা সভায় চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহাম্মদ আব্দুল আলীমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সচিব আলী আর রেজা, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র, স্কুল পরিদর্শক ড. বিশ্বাস আহমেদ, প্রধান মূল্যায়ন অফিসার মিজানুর রহমান, সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক রেজাউল ইসলাম ও কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু।

এম এম কলেজে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু তালেব মিয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর সেখ আবুল কওসার ও শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মহিউদ্দিন। আহবায়ক মোশারেফ হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সহযোগি অধ্যাপক ছোলজার রহমান।

সরকারি মহিলা কলেজে প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এম হাসান সরোওয়ার্দী। আহবায়ক সৈয়দ আহসান হাবীবের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মিয়া আব্দুর রশিদ ও শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক এবিএম ইকবাল আনোয়ার।

সরকারি সিটি কলেজে প্রধান অতিথি ছিলেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর জুবাইদা গুলশান। সভাপত্বি করেন শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ড. আনওয়ার হোসেন। এমএসটিপি স্কুল এন্ড কলেজে আলোচনা সভায় অধ্যক্ষ খায়রুল আনামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক জহিরুল ইসলাম, মাহমুদা বেগম ও মিজানুর রহমান।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন