যশোরের প্রিয়াঙ্গন জুয়েলার্সে চুরির ঘটনায় আন্তঃজেলা চোরচক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদেরকে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও ব্রক্ষ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ দেড় লাখ টাকা ও তিন ভরি সাত আনা সোনা জব্দ করা হয়।
আটককৃরা হচ্ছে- রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালি উপজেলার রাঙ্গীপাড়া গ্রামের আব্দুল আওয়ালের ছেলে রহিম বাদশা, ব্রাম্মন বাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার কুটি গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে সোহেল ওরফে মোটা সোহেল, বর্তমানে চট্ট্রগাম জেলার বাকলিয়া থানার মিয়াখান কলোনী, কুমিল্লা জেলার মুরাদ নগর উপজেলার ইউসুফ নগর গ্রামের রিয়াজের ছেলে সুমন ও একই গ্রামের তারু মিয়ার ছেলে উজ্জল।
শনিবার যশোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানি বলেন, ৯ জনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র প্রিয়াঙ্গন জুয়েলার্সে ডাকাতির সাথে জড়িত। এদের মূল হোতা কুমিল্লা জেলার দেবিদার উপজেলার বালা কোট গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে আব্দুল। আব্দুলকে আটক করা গেলে প্রিয়াঙ্গন জুয়েলার্সে চুরির ঘটনা বেরিয়ে আসবে। এছাড়া চোর চক্রের অন্য সদস্যরা হচ্ছে আলাউদ্দিন, সুমন ওরফে ছোট সুমন, বাদশা ও রুবেল। উন্নত তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে ১১ জুলাই চট্টগ্রামের বহাদ্দরহাট থানা এলাকা থেকে প্রথমে আন্ত:জেলা চোরচক্রের সদস্য আব্দুর রহিম বাদশা ও একই জেলার বাকলিয়া থানা এলাকা থেকে সোহেল ওরফে মোটা সোহেলকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর সোহেলের তথ্যমতে তার বাড়ি থেকে নগদ দেড় লাখ টাকা ও ৩ ভরি ৭ আনা সোনা জব্দ করা হয়। পরের দিন ১২ জুলাই কুমিল্লার মুরাদনগর থানা এলাকা থেকে উজ্জ্বল ও সুমন নামে দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গোলাম রব্বানি বলেন, সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে আন্তঃ জেলা চোর চক্রের সদস্য রহিম বাদশা ও সোহেলকে সারাসরি দেখা যায়। তিনমাস আগে থেকে আন্তঃজেলা চোর চক্রের মূল হোতা আব্দুল ঘটনা স্থল রেকি করে যায়। আর ঘটনা ঘটার তিনদিন আগে অন্য সদস্যরা আসে। এরা অধিকাংশ চুরিই সাধারণত দিনের আলোতে করে। রাতে কোন ঝুকি নেয় না। মানুষের দৃস্টি ভিন্ন দিকে ঘোরাতে চুরির সময় এরা ত্রিপল ছাড়াও শাল (চাদর) ব্যবহার করে। আটককৃত রহিম বাদশার নামে চট্ট্রগ্রামের রাওজান থানায় অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ২টি ও সোহেলের নামে সিলেটের সাহাপরান থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা রয়েছে। যশোর ছাড়াও চোর চক্রের সদস্যরা চট্রগ্রাম, সিলেট, কুমিলা, রাঙ্গামাটিসহ বিভিন্ন জেলায় এভাবেই ত্রিপল ও চাদর টাঙিয়ে চুরি করে। এদের টার্গেট সোনার দোকান, মোবাইল ফোন, বিকাশ ও ফ্লেক্সি লোডের দোকান।
গত ২৭ জুন বিকালে যশোর শহরের প্রিয়াঙ্গণ জুয়েলার্সে চুরির ঘটনা ঘটে। চোরেররা ৩৭ ভরি ১২ আনা সোনা ও নগদ আড়াইলাখ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই দিনই দোকান মালিক অমিত রায় বাদি হয়ে যশোর কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। নম্বর -৬৫। তারিখ -২৭.০৬.১৯। প্রথমে এ মামলা তদন্তের দায়িত্ব পান সদর ফাড়ির পরিদর্শক ফিরোজ আহম্মদ। এসময় প্রিয়াঙ্গন জুয়েলার্সের সামনের ষ্টেশনারি দোকানি প্রদীপ ব্যানাজিকে সন্দেহ জনক ভাবে আটক করা হয়। পরে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হলে আলিম নামে এক রিকশা চালককে আটক করা হয়। আলীমের বাড়ি শহরের বারান্দিপাড়ায়। ওই সময় পুলিশ বলেছিল আটক আলমিকে ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে। পরে মামলার তদন্ত অফিসার এস আই শামীম হোসেন ও পুলিশ পরিদর্শক আল মামুনের নেতৃত্বে এদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংএ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মারুফ আহমেদসহ পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।