যশোর মহাসড়কে গাছ ফেলে ডাকাতির সময় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ডাকাত দলের নেতা আবুল কাশেম (৪২) নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরে যশোর-মাগুরা মহাসড়কের নোঙ্গরপুরে এই ঘটনা ঘটে। নিহত আবুল কাশেম যশোরের মনিরামপুর উপজেলার শোলাপুর গ্রামের কলিমুদ্দিনের ছেলে।
ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। কাশেমের বিরুদ্ধে যশোরের মণিরামপুর, কেশবপুর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এই ঘটনার পর আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ১১ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ।

ডাকাত সিন্ডিকেটের আটক সদস্যরা হলেন- খুলনার ডুমুরিয়ার চাকুন্দিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের শওকত গাজীর ছেলে শাহিনুর (৩৫), চুকনগর দক্ষিণপাড়ার কাদের আলী গাজীর ছেলে শহিদুল গাজী (৩৫), চুপনগর গ্রামের খোকাপদ দাসের ছেলে ধনি রাম দাস (৪০), একই উপজেলার উত্তর বেতা গ্রামের মোজাহার গাজীর ছেলে আজিবর গাজী (৪৮), চাকুন্দিয়া গ্রামের আনসার আলী শেখের ছেলে বাবর আলী শেখ ওরফে বাবু (৩৬),যশোর সদর উপজেলার সিরাজসিঙ্গা গ্রামের হারুন বিশ্বাসের ছেলে আসলাম বিশ্বাস (২৯), মণিরামপুর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের আসলাম হোসেন ওরফে ইমরান (২২) ও একই গ্রামের মিজানুর রহমান ওরফে মিন্টু (৪০), ইত্তা মাঠপাড়া গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩১), সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার শেখ মনির উদ্দিনের ছেলে ওহিদুজ্জামান বাবু (৩২), খুলনার পাইকগাছা উপজেলার গোপালপুর গ্রামের সামসুদ্দিন গাজীর ছেলে মিজানুর গাজী (৩৬)।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেসব্রিফিং করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) মুহাম্মদ সালাউদ্দিন শিকদার। তিনি বলেন, একজন ডাকাত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। ডাকাত সিন্ডিকেটের ১১ সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। আটকদের কাছ থেকে অনেক তথ্য পেয়েছি। পুলিশের তৎপরতায় যশোর, সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার মানুষের মধ্যে ডাকাতি আতঙ্ক শেষ হবে, স্বস্তি ফিরে আসবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উল্লেখ করেন, ১৪ মে রাত পৌনে ৩টার দিকে যশোর-মাগুরা মহাসড়কে সদর উপজেলার নোঙ্গরপুর মাজার সংলগ্ন এলাকায় ডাকাতরা গাছ ফেলে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। খবর পেয়ে টহল পুলিশ সেখানে যায়। পুলিশের গাড়ির আলো দেখে তারা এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। পুলিশও আত্মরক্ষায় তিন রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে ডাকাতদল পালিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, এ সময় পাকা রাস্তার পশ্চিম পাশে একজন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার কাছ থেকে ম্যাগজিনসহ একটি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি, তিনটি হাসুয়া, একটি হাত করাত, ১৫ গজ রশি, ৬টি স্যান্ডেল ও ৫টি বাঁশের লাঠি পাওয়া যায়। তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে তার পরিচয় শনাক্ত হয়। নিহত ব্যক্তির নাম আবুল কাশেম। তিনি ডাকাত দলের নেতা।
সালাউদ্দিন শিকদার জানান, আটকদের মধ্যে ওহিদুজ্জামান বাবু জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে সে প্রায় ৬ মাস আগে ডাকাত দলে যোগ দিয়েছে। এ পর্যন্ত ৫টি ডাকাতিতে অংশ নিয়েছে। এর আগে খুলনার চুকনগর সড়ক, যশোর-মণিরামপুর সড়কের কুয়াদা, রাজগঞ্জ মণিরামপুর সড়ক, কেশবপুর ও তালায় ডাকাতি করেছে।

বাবু জানায়, দলের নেতা আবুল কাশেম, সাইফুল, হাবিবুর প্রথমে পরিকল্পনা করে। তারপর তারা ফোনে জানায় টার্গেট এলাকার কাছাকাছি পৌঁছাতে। সন্ধ্যায় আশপাশের বাগানে অবস্থান নেয়। এরপর দলের সদস্যরা একে একে জড়ো হতে থাকে। টার্গেট এলাকার ঝুলেপড়া গাছের গোড়া করাত দিয়ে কেটে দড়ি বেঁধে রাখা হয়। এরপর রাতের বেলায় ডাকাতির সময় গাছ ফেলা হয়। লোকজনকে দা, বোমার ভয় দেখালেই সব দিয়ে দেয়। এভাবেই আমরা ডাকাতি করে আসছি।
প্রেস বিফ্রিংয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আনছার উদ্দিন, কোতয়ালি থানার ওসি অপূর্ব হাসান।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন