ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) বলেছেন, শুধু পুলিশের একক প্রচেষ্টায় যানজট নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। সিটি কর্পোরেশন, গাড়ির মালিক, ড্রাইভার ও পথচারি সবাইকেই আন্তরিক হতে হবে। নগরবাসীর প্রত্যেকের কিছু না কিছু দায়িত্ব রয়েছে। সবাইকে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতন হতে হবে ও নিজ নিজ জায়গা থেকে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে, তাহলেই ট্রাফিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আসতে পারে।
মঙ্গলবার দুপুরে তেজগাঁওয়ে আহ্ছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এইউএসটি) মিলনায়তনে “ট্রাফিক সেফটি অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রাম অ্যান্ড রোড সেফটি স্লোগান কনটেস্ট-২০২৪” এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জাইকার কারিগরি সহযোগিতায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ‘ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি প্রজেক্ট (ডিআরএসপি)’ ও আহ্ছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এইউএসটি)-এর যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আহ্ছানউল্লা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ভাইস-চ্যান্সেলর (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মো: মাহবুবুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো: মুনিবুর রহমান বিপিএম।
ছাত্রদের উদ্দেশ্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমি প্রত্যাশা করি আপনারা ট্রাফিক সেফটি সম্পর্কে সচেতন হবেন ও অন্যদের সচেতন করবেন। বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের একটি গৌরবময় ঐতিহ্য রয়েছে। বাংলাদেশের ঐতিহাসিক যত অর্জন সবগুলোতেই ছাত্রদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। সুতরাং ট্রাফিক শৃঙ্খলা ফেরাতে সচেতনতার কাজটি শুধু পুলিশের কাঁধে ছেড়ে না দিয়ে ছাত্র সমাজকেও এগিয়ে আসতে হবে। ইতোপূর্বে প্রত্যেকটি সংকটময় সময়ে ছাত্র সমাজ এগিয়ে এসেছে, তারা সফলতাও পেয়েছে। রাস্তায় গাড়ি দুর্ঘটনায় যেন একজন মানুষও না মারা যায় সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন করার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে ছাত্রদেরকেই।
তিনি আরো বলেন, জাইকার কারিগরি সহযোগিতায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য জাপানে, ভারতে ও দেশে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। সচেতনতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে মহানগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় অনন্য পরিবর্তন আসছে। শত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ জনসাধারণের জন্য কাজ করছে।
তিনি বলেন, এখন আমাদের আন্দোলন অসত্য, চাঁদাবাজি, মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও আইনশৃঙ্খলা বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে।
অনুষ্ঠানে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকান্ড, যানজট নিরসনে ভূমিকা, নিরাপদ পথচারী পারাপার, আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও ডিজিটাল সিগন্যালের গুরুত্বসহ ট্রাফিক সচেতনতামূলক কার্যক্রম এবং ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি প্রজেক্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বিস্তারিত উপস্থাপন করেন ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-এ্যাডমিন অ্যান্ড রিসার্চ) ও ডিআরএসপির প্রজেক্ট ম্যানেজার মো: জাহাঙ্গীর আলম।
অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার) পিপিএম (বার) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে “রোড সেফটি স্লোগান কনটেস্ট-২০২৪” এর আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন এবং আহ্ছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এইউএসটি) এর ভাইস- চ্যান্সেলর এর নিকট রোড সেফটি স্লোগান কনটেস্ট-২০২৪ এর লিফলেট তুলে দেন।
ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ, জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি মিস ইউমি ওকাজাকি, জাইকার প্রোগ্রাম অফিসার মো: রাইসুল ইসলাম, ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোস্তাক আহমেদ, প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর (ডিআরএসপি) সঞ্জয় রায়, মোঃ মাহমুদ হাসান, এ এইচ এম শহীদুল ইসলাম, কমিউনিকেশন ম্যানেজার (ডিআরএসপি) সামনুম সুলতানা, বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তাগণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও প্রায় ৮০০ জন ছাত্র-ছাত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।