এসএম শহীদুল ইসলাম: মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, শিক্ষায় যত বেশি ইনভেস্ট করা যায়, যদি ইনভেস্টটা কাজে লাগে তাহলে এখান থেকে যে লাভটা আসবে এ লাভ আর কোন জায়গায় নেই। শিক্ষায় হচ্ছে সবচেয়ে লাভজনক বিনিয়োগ। এটিই আমাদের শিক্ষকদের বোঝাতে হবে। শিক্ষককে তার মর্যাদা সৃষ্টি করতে হবে। এজন্য ধারাবাহিক মূল্যায়ন বাস্তবায়ন করতে হবে। এ ধারাবাহিক মূল্যায়নে তিনটি বিষয় আছে। বিষয়গুলি হচ্ছে শারীরিক শিক্ষা, চারু ও কারু শিক্ষা এবং কর্ম ও জীবনমূখী শিক্ষা। কিন্তু এ বিষয়গুলির ধারাবাহিক মূল্যায়ন পাবলিক পরীক্ষায় যুক্ত হয় না। কেন হয় না? এসব বিষয়ের ক্লাস না হলেও শিক্ষার্থীরা ৯০ এর নিচে নাম্বার পায়না। শিক্ষকের হাতে নাম্বার থাকায় শিক্ষার্থীর যোগ্যতা ও দক্ষতা যাচাই না করেই নাম্বার দেন। ফলে বিশ্বাস যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কিন্তু এই ধারাবাহিক মূল্যায়নকে কার্যকর করতে হবে। এটি শ্রেণিকক্ষের বাইরে মাঠে বা অনুষ্ঠানে নিয়ে সহ-শিক্ষাক্রমিক কার্যাবলীর আওতায় শিক্ষার্থীদের দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। এটিকে বিশ্বাসযোগ্য করতে হবে। এটি বিশ্বাসযোগ্য হলেই পাবলিক পরীক্ষায় নাম্বার যোগ হবে। যদি আমরা তা করতে পারি তাহলে আমাদের দুটি কাজ হবে। প্রথমত: শিক্ষকের মর্যাদা রক্ষা হবে। দ্বিতীয়ত: শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন হবে। শিক্ষায় শুধু জানা-বোঝা থাকলেই হবে না। শিক্ষাকে আবেগ দিয়ে অনুভব করতে হবে এবং তা অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। ধারাবাহিক মূল্যায়ন বাস্তবায়ন করলে সমাজে ও রাষ্ট্রে শিক্ষকের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, শিক্ষকদের গুণগত মান যদি বাড়ে তাহলে শিক্ষার গুণগত মান বাড়বে। আবার শিক্ষকদের গুণগত মান যদি কমে তাহলে শিক্ষার গুণগত মান কমবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে সরকার এ বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ২০২০ সালের ১৭ মার্চের আগে সরকার শিক্ষায় ধারাবাহিক মূল্যায়ন বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। আমরা ঢাক-ঢোল পিটিয়ে গোটা জাতিকে দেখিয়ে দিতে চাই আমরা পিছিয়ে নেই। আমরা যদি তা পারি তবে শিক্ষকদের একটি দাবিও অপূর্ণ থাকবে না। সরকার শিক্ষকদের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে শিক্ষা জাতীয়করণের ঘোষণা দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, আমরা সাডেন ভিজিট করবো। আমাদের উদ্দেশ্য শিক্ষকের শাস্তি দেওয়া নয়, আমাদের উদ্দেশ্য মান সম্মত গুণগত বাস্তবমূখী শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করে উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে ওঠা। এ জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
শনিবার শহরতলীর খড়িবিলায় একটি রিসোর্টে অনুষ্ঠিত জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানগণের অংশগ্রহণে শিক্ষার মানোন্নয়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাউশির মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক এসব কথা বলেন।
জেলা শিক্ষা অফিসার এসএম আব্দুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা আঞ্চলিক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক প্রফেসর হারুনর রশিদ, খুলনা আঞ্চলিক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নিভা রাণী পাঠক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক আমিনুল ইসলাম টুকু, সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমরেশ দাশসহ জেলার সকল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ। এরপূর্বে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে আয়োজিত সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে একাত্তরে চেতনা বিষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গণে চেতনায় ৭১ নিয়ে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হাসান আহমেদ আপন, জয়দ্বীপ আচার্য্য, শিবলি নোমান, জয়নুল হাসান ও পারভেজ ইমাম প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারভেজ ইমাম ও হাসান আহমেদ আপন।
এছাড়া তিনি সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে আয়োজিত এক সভায় এবং সাতক্ষীরা নবারুণ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘মিড ডে মিল’ চালুর উদ্বোধন করেন।