স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০১৯ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে আজ খুলনায় উদ্যাপিত হয়। এ উপলক্ষে নগরীতে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, র্যালি, শিশু সমাবেশ, বক্তৃতা, কবিতা পাঠ, রচনা, হাতের লেখা, উপস্থিত বক্তৃতা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দোয়া-মাহফিলসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে বিকেলে খুলনা শহীদ হাদিস পার্কে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় শিশু সমাবেশ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশেনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মেয়র বলেন, জাতির পিতা মানে বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু ছাড়া বাংলাদেশ কল্পনা করা যায় না। শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ছিলো অপরিসীম মততা। তিনি বলেন, পড়াশুনার পাশাপাশি শিশুদের বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে হবে এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যদিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংসের চেষ্টা করা হয়েছিল। চক্রান্তকারীদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন পুলিশ কমিশনার ভারপ্রাপ্ত সরদার রকিবুল ইসলাম বিপিএম, পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ বিপিএম,বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কাউন্সিলর এ্যাডভোকেট মোঃ সাইফুল ইসলাম, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মুন্সি মোঃ মাহবুব আলম সোহাগ, শিশু শিক্ষার্থী মেহেদী ইসলাম এবং নওসিন তাসমিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন। স্বাগত জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জিয়াউর রহমান। আলোচনা সভা শেষে জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও শিশু একাডেমি আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার প্রদান করা হয়। পরে শিশুদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সকালে খুলনা নিউ মার্কেট হতে বর্ণাঢ্য র্যালি শুরু হয়ে বাংলাদেশ বেতার খুলনা কেন্দ্রে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শেষ হয়। র্যালিতে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আব্দুস সামাদ, বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া, খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, কেএমপির ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা, বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সকাল সাতটায় দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও সকালে আলোচনা সভা ও কেককাটা অনুষ্ঠিত হয়।
সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতির পিতার জীবন ও আদর্শ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সম্পর্কে আলোচনা, জাতির পিতার জীবনাদর্শের উপর তথ্যভিত্তিক ভ্রাম্যমাণ চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, সংবাদপত্রসমূহে বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ বেতার খুলনা দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালাও প্রচার করে। সকালে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, কেক কাটা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
দুপুরে দুঃস্থ ও ভবঘুরে শিশুদের আপ্যায়ন, বাদ জোহর সকল মসজিদে বিশেষ দোয়া ও অন্যান্য উপসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।এছাড়াও দিবসটি পালন উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পৃথক পৃথক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।