নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
আজ খেকে ঠিক ২ বৎসর আগে সাতক্ষীরাতে যোগদান করেছিলেন, জেলা প্রশাসক জনাব আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দিন।যোগদান করার পরপর ই সাতক্ষীরার মানুষ দের আগ্রহ ছিল, যে তিনি কেমন প্রকৃতির মানুষ??সবাই খুব আতঙ্কের ভিতরে ছিলেন এক প্রকার।
অতপর,দিন পার হলো,মাস পার হলো,দেখা গেলা এক অসাধারন ব্যক্তিত্বের অধিকারী সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক জনাব আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দিন।সদা-লিপি হাস্যজ্জল,নিরংকারী ও খুব নরম প্রকৃতির অফিসার তিনি।প্রশাসন ক্যাডারের ১৩ তম বিসিএস ক্যাডার অফিসার ও এ্যাপ্লাইড ফিজিক্স এর ছাত্র ছিলেন তিনি।ধয্য ও পরিশ্রমে তাঁর কোন জুড়ি নেই।সেই সকাল ৪.৪৫ মিনিটে অফিসে যান তিনি আর বাসায় ফেরেন অনির্দিষ্ট সময়ে।জেলা প্রশাসক পদাধীকার বলে তিনি জেলার ম্যক্সিমাম প্রতিষ্ঠানের সভাপতি।প্রতিদিন তাঁকে বিভিন্ন প্রোগ্রামে যোগ দিতে হয়।কখনও খেলা ধুলার প্রোগ্রামে,কখনও প্রেসক্লাবে,কখনও আনজুমান মফিদুল ইসলামে,কখনও ড্রামেটিক ক্লাবে,কখনও উন্নয়ন মেলাতে,কখনও মধু মেলাতে,কখনও কমিশনার অফিসের সভাতে,কখনও বিভিন্ন উপজেলায় পরিদর্শনে,কখনও আইন-শৃংঙ্খলা সভাতে।আরও অসংখ্য কাজ রয়েছে,লিখে শেষ করা যাবেনা জেলা প্রশাসকের কাজ সমূহ।জেলার পুরো দায়-দায়িত্ব তাঁকে দেখতে হয়।

সাতক্ষীরাতে যোগদানের পর তিনি সকল নির্বাহী অফিসার দের কে নির্দেশনা দেন, বাল্য বিবাহ কে লাল কার্ড দেখানোর জন্য।তাঁর ই নির্দেশনা মোতাবেক আজ সাতক্ষীরাতে বাল্য বিবাহ সম্পন্ন হতে মোটে দেখা যায় না।তিনি সাতক্ষীরা বাসীর বিনোদন কেন্দ্র হিসাবে বাঁকাল এলাকায় ডিসি ইকোপার্ক নির্মান করেছেন।যেটার নির্মানাধীন কাজ এখনও চলমান।খুব দ্রুত পার্কটি চালু করা হবে।ইতি মধ্যে পার্কে বাচ্চাদের জন্য বুলেট ট্রেন ছাড়া হয়েছে।কমল মতি শিশুরা বুলেট ট্রেন চড়ে খুব আনন্দ উপভোগ করছেন।এছাড়াও ভোমরা স্থল বন্দরে অতিথি দের বিশ্রামাগার হিসাবে তিনি সেখানে জেলা প্রশাসক সেবা কুঞ্জ তৈরি করেছেন।

সাবেক বিভাগীয় কমিশনার ও নৌ সচিব জনাব আব্দুস সামাদ এঁর ভিক্ষুক মুক্ত খুলনা বিভাগ গড়ার লক্ষে তিনি পাটকেল ঘাটায় ভিক্ষুক দের অনেকগুলো দোকান পাট তৈরি করে দিয়েছিলেন ও আর্থিক সাহায্য দিয়েছিলেন।সেই দোকান চালিয়ে ভিক্ষুকরা আজ ভিক্ষা বৃ্ত্তি থেকে মুক্তি পেয়েছেন।সম্প্রতি তিনি ধুলিহরে এক ভিক্ষুক দম্পতি কে বাড়ি বানিয়ে তাদের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেন।যেটা বিভিন্ন গনমাধ্যমে খুব গুরুত্বের সহিত প্রচার করা হয়।

জনগন কে ডিজিটাল সেবা দেওয়ার লক্ষে তিনি ডিসি অফিসের নিচের তলায় তথ্য জানালা নামক ডেক্স স্থাপন করেছেন।সেখানে এসে মানুষজন খুব সহজেই সেবা নিতে পারেন।ইতি মধ্যে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকার মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা টাকার জন্য মেডিকেলে বা ইউনিভার্সীটিতে ভর্ত্তি হতে পারছিলেন না।পেপার পত্রিকায় ঐ সব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের আবেদন দেখে,শিক্ষা অনুরাগী জেলা প্রশাসক তাদের কে নিজস্ব ফান্ড হতে ২০ হাজার টাকা করে সাহায্য দিয়েছিলেন।শুধু তাই নয়,বিরল রোগে আক্তান্ত মুক্তামনি’র বাড়ি থেকে এ্যামব্লুয়েন্স যোগে তাকে হাসপাতালে এনে ভর্ত্তি করেছিলেন ও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন,সাতক্ষীরার স্ব-হৃদয়বান জেলা প্রশাসক।একে একে তিনি জেলার সর্বস্থরের মানুষের শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে, সকলের হৃদয়ে অবস্থান করছেন।সম্প্রতি বিনা টিকিটে ফুটবল খেলা দেখার জন্য জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল ২০১৭ এর আয়োজন করেছিলেন,ক্রিয়ামোদি জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দিন।বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার দর্শক খেলা দেখার জন্য এসে ষ্টেডিয়ামের গ্যালারি পুর্ন করে ফেলেছিলেন।সাাতক্ষীরার ক্রিয়াঙ্গনে ব্যাপক পরিবর্তন ও উন্নয়ন করেছেন,জেলার বর্তমান জেলা প্রশাসক।

শুধু খেলা ধুলায় নয় তিনি শিক্ষা ক্ষেত্রেও ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন।সাতক্ষীরা সরকারী বালক উচ্চ বাদ্যালয় ও সাতক্ষীরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র – ছাত্রীদের বার্ষিক ফলাফল দেখলে, সেটা বোঝা যাবে।
প্রাথমিক শিক্ষায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০১৭ এর খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জেলা প্রশাসক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন সাতক্ষীরা জেলার সুযোগ্য জেলা প্রশাসক জনাব আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দিন।
জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদানের পরপরই সাতক্ষীরা জেলার প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্ভাবনী পদক্ষেপ গ্রহন করেন। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সাতক্ষীরা কালেক্টরেট স্কুল স্থাপন, জেলা প্রশাসন শিক্ষা পদক প্রবর্তণ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মিড-ডে মিল চালুকরন, মাল্টিমিডিয়া সরবরাহ ইত্যাদি।

শুধু তাই নয় উদ্ভাবন চর্চায় অবদানের জন্য জেলা প্রশাসক জনাব আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দিন খুলনা বিভাগীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা ও উদ্ভাবন উৎসব ২০১৭ তে শ্রেষ্ঠ জেলা প্রশাসক হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব,মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ,বাংলাদেশ সচিবালয়, মোহাম্মদ শফিউল আলম মহোদয়ের কাছ থেকে পদক ও সম্মাননা গ্রহণ করেন।তার কয়েকমাস পরেই তিনি বাংলাদেশ সরকারের যুগ্ম-সচিব পদে পদন্নতি পেয়েছেন।

এমন একজন শিক্ষানুরাগী ও জনবান্ধব জেলা প্রশাসকের অধীনে কাজ করতে পেরে সাতক্ষীরা জেলার সর্ব ডিপার্টমেন্ট এর সরকারী /সেসরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারী বৃন্দ গর্বিত।

আজ ২৬ জানুয়ারী /১৮ তারিখে জেলা প্রশাসক হিসাবে সাতক্ষীরাতে দুই বৎসর পুর্ন হওয়ায় জেলা প্রশাসনের সকল স্থরের কর্মকর্তা গন জেলা প্রশাসক ও যুগ্ম-সচিব আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দিন ও জেলা প্রশাসক পত্মী, লেডিসক্লাব সভাপতি জনাব সেলিনা আফরোজ কে ফুলের শুভেচ্ছা জানাতে ডিসি বাংলোতে যান এবং তাঁদের প্রিয় অবিভাবক কে গালে মিস্টি তুলে দেন।অতপর,জেলা প্রশাসন পরিবারে এক উৎসব মুখোর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
লেখকঃজিমি,সিটিজেন জার্নালিস্ট,সাতক্ষীরা।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন